সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের একজন গর্বিত সদস্য নীলফা ইয়াসমিন নীলা কুষ্টিয়ার সন্তান। চ্যাম্পিয়ন হবার পর বুধবার বীরের বেশে দেশে ফেরেন তারা। বিমানবন্দর থেকে উষ্ণ অভ্যর্থনাসহ নেয়া হয় বাফুফে ভবনে। সেখানে জানানো হয় অভ্যর্থনা।
এরই মধ্যে সরকার, ক্রিকেট বোর্ড ও বাফুফেসহ ফুটবলারদের নিজ নিজ জেলা প্রশাসন কিংবা ক্রীড়া সংস্থা থেকে ঘোষণা করা হয়েছে নগদ অর্থসহ বিপুল উপঢৌকন। তবে আফসোস নীলুফা ইয়াসমিন নীলার। কুষ্টিয়ার এই গর্বিত সন্তানের আফসোস দেশের জন্য এতবড় সম্মান বয়ে আনা হলো তাতে যেখানে সরকার বাফুফে এমনকি সারাদেশ উম্মাদনায় ভাসছে তখন আমার নিজ জেলা কুষ্টিয়া থেকে কোন সাড়া পায়নি। উপঢৌকন তো দূরের কথা ডিসি, এসপি এমনকি ক্রীড়া সংস্থারও কেউ ফোন পর্যন্ত করেনি, জানায়নি অভিনন্দন পর্যন্ত।
চ্যাম্পিয়ন হবার পর এবং দেশের ফেরার পর দেখেছি রাঙামাটি, খাগড়াছড়িসহ সাফজয়ী খেলোয়াড়দের বাড়িতে জেলা প্রশাসন, ইউএনও ও ক্রীড়া সংস্থার কর্তাব্যক্তিরা গিয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা ও খোঁজখবর নিয়েছেন। অথচ আমার বাড়িতে কেউ যায়নি। এমনকি আমাকে ফোন করে অভিনন্দন কিংবা শুভেচ্ছা জানানোর প্রয়োজন মনে করেননি। অথচ আমার পাশেই সাফজয়ী (রুমমেটরা) ফোন রিসিভ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন।
শুধু এবারই নয়, এর আগেও সাফ অনুর্ধ্ব-১৮, ১৯সহ নানা ইভেন্টে আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। ঢাকাতে বড়বড় লীগ খেলেছি তখনও কোনবারই আমাকে অভিনন্দন জানানো হয়নি। কোনও সংবর্ধনা তো দূরের কথা একটি ফুলের তোড়াও দেয়নি। আমি সংবর্ধনার জন্য লালায়িত নয়, আমাকে তো একটিবার হলেও ফোনদিয়েও অভিনন্দন জানাতে পারত? আমাকে যে ফুলের তোড়াই দেয়া লাগবে, আমাকে যে সংবর্ধনা দেয়া লাগবে, আমাকে যে চেকই দেয়া লাগবে আমিতো সেটাও প্রকাশ করিনি। একটা কল বা ম্যাসেজ দিয়ে অভিনন্দনও জানানো যেত।এর আগেও অনুর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়ন হবার সময় এই আক্ষেপ প্রকাশ করেছিলাম জানি না সেটি কেউ শুনেছিলেন কী না। আমার লক্ষ্য একটাই দেশের লাল সবুজের পতাকাকে বিশ্ব দরবারে সম্মানের সঙ্গে তুলে ধরা।
নীলুফা ইয়াসমিন নীলা কুষ্টিয়া পৌর এলাকার ১৪নং ওয়ার্ডের সবজি ফার্মপাড়া এলাকার বাছিরন আক্তারের কন্যা। অভাবের সংসারে বেড়ে ওঠা পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম নীলা।