যখন ক্রিজে আসেন, বাকি ছিল ১৮ বল। অধিনায়ক নুরুল হাসান এর মধ্যে খেললেন ১০টি বল, করলেন ১৯ রান। দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত গেল ১৬৯ রান পর্যন্ত। ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে এ স্কোর গড়েছে বাংলাদেশ। উইকেটে আজ বল এসেছে বেশ থেমে থেমে, টাইমিং করতেও বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের। নুরুলের আগে বাংলাদেশের ইনিংসে অবদান রেখেছেন কমবেশি সবাই। প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের প্রথম সাত ব্যাটসম্যানই ছুঁয়েছেন দুই অঙ্ক, সর্বোচ্চ ৩৭ বলে ৪৬ রান মেহেদী হাসান মিরাজের।
আগের ম্যাচের মতোই টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের হয়ে ওপেন করতে আসেন মিরাজ ও সাব্বির রহমান। আজ দুজন মিলে যোগ করেন ২৭ রান। সাব্বির রহমানের শুরুটা হয়েছিল নড়বড়ে, সাবির আলীর করা প্রথম ওভারেই ইনসাইড-এজে চার পেলেও স্টাম্পের সঙ্গে বলের দূরত্ব বেশি ছিল না। পরের ওভারে আরিয়ান লাকরার ভেতরের দিকে ঢোকা বলও মিস করেছিলেন। অবশ্য তৃতীয় ওভারকে সাবির আলী করা নো বলে পাওয়া ফ্রি হিটে ছয় মেরে ছন্দ পাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তবে আরিয়ানের বলে এলবিডব্লু হয়ে ফিরতে হয় তাঁকে, অবশ্য বল হাঁটুর বেশ ওপরে লেগেছিল বলে নিজেকে দুর্ভাগা ভাবতেই পারেন তিনি।
২৭ রানের ওপেনিং জুটির পর পাওয়ারপ্লেতে বাংলাদেশ তোলে ৪৮ রান। লিটন ৪ চারে ২৫ রান করলেও খেলেছেন ২০ বল। প্রথমে মিয়াপ্পানকে স্লগ করতে গিয়ে ক্যাচ দিতে ধরেছিলেন। সে দফা বেঁচে গেলেও আয়ানকে বেশ খানিকটা জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দেন। দুই ম্যাচেই তিনে নেমে বাঁহাতি স্পিনার আয়ানের বলে ফিরতে হলো লিটনকে। দ্বিতীয় উইকেটে মিরাজের সঙ্গে লিটন যোগ করেন ৪১ রান।
নামার এক ওভার পর জহুর খানকে এক্সট্রা কাভার ও স্কয়ার লেগ দিয়ে দুটি চার মেরেছিলেন আফিফ, আগের ম্যাচে যেখানে শেষ করেছিলেন, আজ শুরু করেছিলেন সেখান থেকেই। তবে যেভাবে আউট হয়েছেন, তাতে ইনিংস বড় করতে না পারার আক্ষেপটা বাড়ার কথা এ বাঁহাতির। আয়ানের কাছ থেকে ফুলটস পেলেও মিডউইকেট পার করাতে পারেননি সেটি, অবশ্য মিয়াপ্পন সামনে ডাইভ দিয়ে নিয়েছেন দারুণ একটি ক্যাচ।
১০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৮৩ রান তোলে বাংলাদেশ, ভিতটাও তাই শক্তই পায় তারা। তবে ইনিংসের মাঝপথের স্কোরকে দ্বিগুণের চেয়ে খুব বড় করতে পারেননি বাংলাদেশ। আফিফ ফেরার পর মোসাদ্দেক ও মিরাজের জুটিতে ওঠে ৩২ রান। মিরাজের ইনিংসে তাঁর চেষ্টার কমতি ছিল না, তবে স্কোরিংয়ের জন্য মাঝেই মাঝেই উদ্ভাবনী পথ বের করতে হয়েছে তাঁকে। ৫টি চার মেরেছেন, সবগুলোতে যে পুরো নিয়ন্ত্রণ ছিল তা নয়। সাবিরকে স্কুপ করে চার মেরে আগের সর্বোচ্চ ৩৮ রানের ইনিংসকে ছাড়িয়ে যান মিরাজ। তাঁকেও অবশ্য ফিরতে হয় আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে। সাবিরের বলটি পড়েছিল লেগ স্টাম্পের বেশ বাইরে, তবে তাতেই মিরাজকে দেওয়া হয় এলবিডব্লু।
পিচের গতি বুঝতে সমস্যা হয়েছে প্রায় সব ব্যাটসম্যানকেই। মোসাদ্দেক জোরের ওপর খেলে দুইটি চারের সঙ্গে মারেন একটি ছয়। মিয়াপ্পানকে স্লগ করতে গিয়ে অবশ্য ক্যাচ তোলেন, ২২ বলে ২৭ রান করে। নেমেই পুল করে একটি চার মারেন ইয়াসির আলী, শেষ পর্যন্ত ১৩ বল খেলে অপরাজিত থাকেন ২১ রান করে। শেষ বলে ছক্কা মারেন নুরুল, শেষ ৩ ওভারে ইয়াসিরের সঙ্গে তাঁর জুটিতে ওঠে ৩২ রান।