আশরাফুল আলম আকাশ: মুরগির খামার থেকে একটি ডিম নানা হাত ঘুরে ভোক্তার হাত পর্যন্ত পৌঁছাতে দামের ব্যবধান দাঁড়ায় ৩ টাকা পর্যন্ত। ডিম উৎপাদন করে খামারি যে দাম পান তার চেয়ে অনেক বেশি লাভ করে মধ্যস্বত্ত¡ভোগীরা। তাছাড়া খামারি মুরগি পালন ও ডিম উৎপাদন করলেও তার দাম নির্ধারণ করে দেয় তথাকথিত সমিতি। এই সিন্ডিকেটের কারণে ডিমের দাম বেড়ে যায় বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ।
গাজীপুরের এই মুরগির খামারে প্রতিদিন প্রায় চুয়ালিশ হাজার ডিম পাওয়া যায়। খামারির দেয়া হিসাব মতে, মুরগির খাবারসহ খরচসহ সবমিলিয়ে প্রতিটি ডিমের উৎপাদন ব্যয় ৯ টাকা থেকে সাড়ে ৯ টাকা। তবে সাদা ডিমে খরচ কিছুটা কম।
উৎপাদন খরচ যাই হোক না কেন বিক্রির দাম নির্ধারণ করার ক্ষমতা খামারিদের হাতে নেই, খামার থেকে ডিম সংগ্রহ করে মিডিয়া নামে পরিচিত স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। প্রতিদিন রাতে এই ডিম পৌঁছে যায় রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ডিমের আড়তে। প্রতিটি ডিম ১০ টাকা ২০ পয়সা থেকে ১০টাকা ৩০ পয়সায় কিনে নেয় আড়তদাররা। একই রাতে তারা আরো ৩০ পয়সা বেশিতে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন বলে জানালেন ঢাকা তেঁজগাও আশেক এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।
আড়ত থেকে সংগ্রহ করা ডিম ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বাজারে তোলে পাইকারি ব্যবসায়ীরা। প্রতিটি ডিম ৫০ থেকে ৬০ পয়সা বেশিতে ১১ টাকা ২০ পয়সা করে খুচরা দোকানে বিক্রি করে তারা। খুচরা দোকানীরা প্রতিটি ডিমে ৮০ পয়সা থেকে ১ টাকা লাভে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করেন ১২ টাকা বা তারও বেশি দামে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান জানালেন, উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছাতে মাঝখানে মুনাফার বেশির ভাগ অংশই ভোগ করে মধ্যস্থতাকারীরা। বিপণন ও বাজার ব্যবস্থাপনার কারণেই প্রান্তিক খামারি ও ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।