চলমান এসএসসি পরীক্ষায় কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় গ্রেফতার ভূরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুমন আলী তার রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রশ্নফাঁস, সব ধাপে ‘দায়িত্বে অবহেলা’
ওসি জানান, প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় ভূরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফর রহমানসহ ওই স্কুলের পাঁচ শিক্ষক এক পিয়নকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রধান শিক্ষককে তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। আদালত আবেদন গ্রহণ করে ২৯ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেছিলেন। বৃহস্পতিবার রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ওসি বলেন, ‘গ্রেফতার প্রধান শিক্ষককে আজই নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হবে।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ভূরুঙ্গামারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজাহার আলী বলেন, ‘প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে কারা কারা জড়িত এবং মামলা সংশ্লিষ্ট আরও তথ্য জানতে প্রধান শিক্ষককে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। এজন্য রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছিল।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরখাস্ত
মামলায় এজাহারনামীয় অপর আসামি ও ভূরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পলাতক অফিস সহকারী আবু হানিফকে গ্রেফতারের চেষ্ট চলছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত কার্যক্রম শেষ করেছে বলে জানা গেছে। তবে কমিটি এখনও বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়নি বলে জানিয়েছেন ওই শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. কামরুল ইসলাম।
প্রফেসর কামরুল ইসলাম বলেন, ‘তদন্ত কমিটি তাদের তদন্ত কার্যক্রম শেষ করেছে। তবে এখনও প্রতিবেদন জমা দেয়নি। তারা প্রতিবেদন প্রস্তুত করছেন। দুই-একদিনের মধ্যে তারা প্রতিবেদন জমা দেবেন।’
প্রসঙ্গত, চলমান এসএসসি পরীক্ষায় গত ২০ সেপ্টেম্বর ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষার দিন ভূরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটে। ওই কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফর রহমানের কক্ষ থেকে ছয় বিষয়ের প্রশ্নপত্র উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পর গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান, কৃষি ও রসায়ন– এই চার বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিতসহ ছয় বিষয়ের প্রশ্ন বাতিল করে শিক্ষা বোর্ড। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ভূরুঙ্গামারী নেহাল উদ্দিন পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফর রহমান, ওই বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক আমিনুর রহমান রাসেল, ইসলাম শিক্ষা বিষয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক জোবায়ের হোসেন এবং অফিস সহকারী আবু হানিফের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কমিটি। এ ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমানসহ পাঁচ শিক্ষক ও এক পিয়নকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পলাতক রয়েছে অফিস সহকারী আবু হানিফ।