ভারতের নরেন্দ্র মোদি সরকার মুসলিম ধর্মভিত্তিক সংগঠন ‘পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া’কে (পিএফআই) নিষিদ্ধ করেছে। এর পরেই কংগ্রেস-সহ কোনও কোনও বিরোধী নেতা আরএসএসকেও নিষিদ্ধ করার দাবি তুলেছেন। তারা বলছেন, কোন সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ না থাকা সত্ত্বেও পিএফআইকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তাহলে মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ছড়ানো হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএসকেও নিষিদ্ধ করতে হবে।
উল্রেখ্য, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের কারণে স্বাধীন ভারতে আরএসএসকে এর আগে তিনবার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। সেই তিনবারই কেন্দ্রে ছিল কংগ্রেস সরকার। কিন্তু বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে আরএসএস। তারা এখন প্রকাশ্যেই মুসলিম বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে, আর মোদির সরকারও তাদেরকে পরোক্ষে ইন্ধন যোগাচ্ছে।
মোদির এই একতরফা সিদ্ধান্তে গর্জে উঠেছেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব। তার দাবি, এবার আরএসএসকেও নিষিদ্ধ করতে হবে। কারণ, পিএফআই যেমন মৌলবাদী সংগঠন। তেমনই আরএসএসও মৌলবাদী সংগঠন। অতীতে লালকৃষ্ণ আদবানির রথযাত্রা রুখে দিয়েছিলেন লালুপ্রসাদ যাদব। সেই সময় তিনি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তার কাছ থেকে এমন দাবি তাই প্রত্যাশিতই ছিল বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি।
আরএসএসের সঙ্গে তিনি পিএফআইয়ের তুলনা করছেন কেন? এই প্রশ্নে লালু বলেন, ‘পিআইএফ এমন একটি সংগঠন যার মৌলবাদী দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। তবে, তারা কখনও বিরোধীদের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক কার্যকলাপে লিপ্ত হয়নি।’ কিন্তু আরএসএস তেমনটাই করছে বলে মনে করছেন লালুপ্রসাদ যাদব।
দীর্ঘদিন ধরেই লালুপ্রসাদের সঙ্গী বাম দল সিপিএম। তারা আবার মনে করছে, এই জাতীয় মৌলবাদী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করাই সমস্যা মোকাবিলার একমাত্র পথ নয়। এই ব্যাপারে বিবৃতিতে সিপিএম বলেছে, ‘বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন-এর অধীনে একটি বেআইনি সংগঠন হিসেবে পিআইএফ’কে ঘোষণা করা এই সমস্যা মোকাবিলার সেরা উপায় নয়।’
এই কথা বলতে গিয়ে লালুপ্রসাদ যাদবের মতই পিএফআইকে আরএসএসের সঙ্গে এক আসনে বসিয়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব। তারা বলেছেন, ‘অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে যে আরএসএস এবং মাওবাদীদের মতো সংগঠনের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর ছিল না। পিআইএফ যখনই বেআইনি বা হিংসাত্মক কার্যকলাপে লিপ্ত হবে, কেবলমাত্র তখনই তার বিরুদ্ধে চলতি আইনেই দৃঢ় প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে হবে।