আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য ছড়ানোয় ফেসবুককে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে আজ বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে বলে ।
২০১৭ সালে মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিতারণের লক্ষ্যবস্তু বানায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। মিয়ানমার থেকে কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা হয়। তাদের বাস্তুচ্যুত করার অভিযানকে ত্বরান্বিত করে অনলাইনে বেপরোয়া বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য। এর পর থেকে তারা শরণার্থীশিবিরে বসবাস করছে।
ভুক্তভোগীদের সহযোগিতাকারী সংগঠন ও অধিকারকর্মীরা বলছেন, ফেসবুকের অ্যালগরিদম দ্বারা সহিংসতা বেড়েছে। অ্যালগরিদম উগ্রপন্থী বিষয়বস্তু অতিমাত্রায় ছড়িয়েছে, যা আদতে ক্ষতিকর গুজব ও বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যকে উৎসাহিত করেছে।
প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টি বলেছে, অনেক রোহিঙ্গা ফেসবুকের ‘রিপোর্ট’ ফাংশনের মাধ্যমে রোহিঙ্গাবিরোধী বিষয়বস্তু রিপোর্ট করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। বিদ্বেষপূর্ণ এসব বক্তব্যকে মিয়ানমারে বিপুলসংখ্যক দর্শকের কাছে ছড়িয়ে দিতে এবং পৌঁছানোর সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থাটি ২০২১ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত সাড়া জাগানো ‘ফেসবুক পেপারস’-এ উঠে আসা বিষয়গুলো তুলে ধরেছে। সেখানে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, কোম্পানির নির্বাহীরা জানতেন সাইটটি জাতিগত সংখ্যালঘু ও অন্যান্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ক্ষতিকর বিষয়বস্তু ছড়াতে ভূমিকা রেখেছে।
দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আচরণের নির্দেশিকার অধীন ফেসবুকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের পাশাপাশি উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর ওইসিডি গ্রুপের কাছে মোট তিনটি মামলা করেছেন রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা।
যুক্তরাষ্ট্রে করা মামলাটি গত ডিসেম্বরে ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে দায়ের করা হয়েছিল। সেখানেই ফেসবুক ও এর মূল কোম্পানি মেটার সদর দপ্তর। ওই মামলায় ১৫ হাজার কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়েছে শরণার্থীরা।
ফেসবুককে তার প্ল্যাটফর্মজুড়ে মানবাধিকার সুরক্ষামূলক দায়িত্বশীল পদক্ষেপ গ্রহণে আগে থেকেই তৎপর হওয়ার এবং একই সঙ্গে জাতীয় কর্তৃপক্ষকে তাদের তদারকি বাড়ানোরও আহ্বান জানানো হয়েছে।