বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৮:৫১ অপরাহ্ন

ঘাট ইজারাদারের গাফিলতিতেই এই দুর্ঘটনা

প্রতিনিধির / ১৮৫ বার
আপডেট : শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২
ঘাট ইজারাদারের গাফিলতিতেই এই দুর্ঘটনা
ঘাট ইজারাদারের গাফিলতিতেই এই দুর্ঘটনা

করতোয়ায় নৌকাডুবির জন্য আউলিয়া ঘাটের ইজারাদারকে দায়ী করেছেন বদেশ্বরী মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি নিতিশ কুমার বকসী।

তিনি বলেছেন, পূণ্যার্থীদের যাতায়াতের জন্য ছয়টি নৌকা দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঘাটে এসেছিল মাত্র একটি। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরও বাকি নৌকাগুলো না আসায় একটিতেই উঠে পার হওয়ার চেষ্টা করেন পূণ্যার্থীরা। ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী ওঠায় মাঝ নদীতে নৌকাটি ডুবে যায়। ইজারাদারের গাফিলতিতেই এত বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। বাড়তি নৌকা দিলে এমনটা ঘটত না।

অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক নিতিশ কুমার বকশী দীর্ঘদিন ধরে বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের বদেশ্বরী মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একই সঙ্গে তিনি বদেশ্বরী মন্দির প্রাঙ্গণে প্রতিষ্ঠিত অনাথ আশ্রম পরিচালনা করছেন। ওই আশ্রমেই বসবাস করেন তিনি।

নৌকাডুবির ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে নিতিশ কুমার গণমাধ্যমকে বলেন, মহালয়ার অনুষ্ঠানে পূণ্যার্থীতের যাতায়াতের জন্য মহালয়া পরিচালনা কমিটি স্থানীয় প্রশাসনসহ আউলিয়া ঘাট ইজারাদারের অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করে অন্তত ছয়টি নৌকা দেওয়ার অনুরোধ করে। অনুষ্ঠানের আগের দিনও ঘাট পরিদর্শন করে ছয়টি নৌকা রাখার অনুরোধ করা হয়। ইজারাদারের অংশীজনরা তাতে সম্মতি প্রদান করেন এবং যথাসময়ে ঘাটে নৌকা থাকবে বলে আশ্বস্ত করেন। কিন্তু পরদিন ঘাটে দুটি নৌকা দেওয়া হয়।

মহালয়ার দিন সকালে ভক্তদের উপস্থিতি কম হওয়ায় কমিটির সহ-সভাপতি শক্তিপদ রায় ঘাটে গিয়ে নৌকার কথা জিজ্ঞাসা করলে তারা (ইজারাদারের লোকজন) জানায়, পাঁচটি নৌকা আসতেছে। এরও কিছু পরে মন্দিরের পুরোহিতের ছেলে তুলশিকে ঘাটে পাঠিয়ে নৌকার খোঁজ নেওয়া হয়। তখনও তারা (ইজারাদারের লোকজন) জানায়, নৌকা কাছাকাছি চলে আসছে। সকাল গড়িয়ে দুপুর হলেও ঘাটে বাড়তি কোনও নৌকা আসেনি। ভক্তরা দীর্ঘক্ষণ ঘাটে অপেক্ষা করেও পার হতে না পারায় অস্থির আর অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছিল। ফলে এক নৌকাতেই অনেক ভক্ত উঠে নদী পার হওয়ার চেষ্টা করে। এতে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।

একইসঙ্গে ঘাটে উপস্থিত পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও গ্রাম পুলিশের সদস্যদের আরও কঠোর হয়ে অতিরিক্ত যাত্রী উঠতে বাধা না দেওয়ারও সমালোচনা করেন নিতিশ কুমার।

স্বজন হারানো ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর খোঁজ-খবর নিচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমি প্রতিটি পরিবারে যাচ্ছি। যারা বেঁচে ফিরেছেন তাদের মুখে ঘটনার বর্ণনা শুনে বলছি। ইজারাদারের লোকরা কথা মতো নৌকা সরবরাহ করলে এত বড় দুর্ঘটনা হতো না।

নিহতদের মধ্যে ৮০ শতাংশই দরিদ্র পরিবারের সদস্য জানিয়ে নিতিশ কুমার বক্সী বলেন, এই পরিবারগুলোর অনেকেই তাদের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়েছেন। সাময়িক অর্থ সহায়তা তাদের জন্য যথেষ্ঠ নয়। এদের উপার্জনের ব্যবস্থা না করলে পরিবারগুলো আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ঘটনার পর থেকে আউলিয়া ঘাটের ইজারাদার আব্দুল জব্বার পলাতক রয়েছেন বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। তার সঙ্গে কথা বলতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ