বিশ্বের বড় বড় তেল কোম্পানি তাদের তেলক্ষেত্র থেকে বিপুল পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের তথ্য গোপন রেখেছে। এসব কোম্পানির মধ্যে রয়েছেÑবিপি, এনি, এক্সনমোবিল, শেভরন, শেল প্রভৃতি। বিবিসির এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। খবর: বিবিসি, আল জাজিরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তেল উৎপাদনের সময় উত্তোলন করা তেল থেকে যে বাড়তি প্রাকৃতিক গ্যাস নির্গত হয়, তা পুড়িয়ে ফেলা হয়। আর এ থেকে বাতাসে নির্গত হয় কার্বন ডাই-অক্সাইড, মিথেন ও কালো ধোঁয়ার মারাত্মক এক মিশ্রণ, যা বায়ুদূষণ ঘটায় এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ত্বরান্বিত করে।
বিপি, এনি, এক্সনমোবিল, শেভরন আর শেল ২০১৫ সালে অঙ্গীকার করেছিল, তারা কতটা অবাঞ্ছিত গ্যাস পোড়াচ্ছে, তা ঘোষণা করবে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে জরুরি কারণ ছাড়া এভাবে গ্যাস পোড়ানো বন্ধ করে দেবে। শেল বলেছিল, তারা ২০২৫ সালের মধ্যেই এটা বন্ধ করবে। তবে প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, যেসব ক্ষেত্রে তারা দৈনন্দিনভাবে পরিচালনার জন্য অন্য কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছে, সেখানে এই পোড়া গ্যাস নির্গমনের তথ্য প্রকাশের দায়িত্ব অন্য কোম্পানিগুলোর।
উপগ্রহ থেকে বাতাসে গ্যাস পোড়ানোর যে তথ্য বিশ্বব্যাংক সংগ্রহ করে, তা বিশ্লেষণ করে বিবিসি প্রত্যেকটা সাইটে গ্যাসের নির্গমন চিহ্নিত করেছে। তারা বলছে, ২০২১ সালে এ ধরনের আগুন থেকে প্রায় দুই কোটি টন কার্বন নির্গত হয়েছে, যে তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। এ নির্গমন বছরে ৪৪ লাখ গাড়ি থেকে নির্গত গ্রিনহাউস গ্যাসের সমান।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ তেল ক্ষেত্রগুলোর কয়েকটি রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব ইরাকের বাসরা, রুমাইলা, পশ্চিম কুরনা, জুবায়ের ও নাহরান ওমারে। সেখানকার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের সন্দেহ শৈশবকালীন রক্তের ক্যানসার সেখানে বাড়ছে এবং এর জন্য দায়ী গ্যাস পোড়ানো। সবচেয়ে বেশি পরিমাণ গ্যাস জ্বালানো হয় ২৫ মাইল দূরের রুমাইলা তেল ক্ষেত্রে। বিবিসির হিসাব অনুযায়ী, এখান থেকে যে জ্বালানি উৎপাদিত হয়, তা দিয়ে এক বছরে ব্রিটেনের প্রায় ৩০ লাখ বাড়িতে বিদ্যুতের জোগান দেয়া সম্ভব।