শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:১৬ অপরাহ্ন

তমব্রু সীমান্তের ওপারে মাইন বিস্ফোরণে রোহিঙ্গার মৃত্যুর খবর

প্রতিনিধির / ১৫২ বার
আপডেট : সোমবার, ৩ অক্টোবর, ২০২২
তমব্রু সীমান্তের ওপারে মাইন বিস্ফোরণে রোহিঙ্গার মৃত্যুর খবর
তমব্রু সীমান্তের ওপারে মাইন বিস্ফোরণে রোহিঙ্গার মৃত্যুর খবর

বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তে শূন্যরেখায় বসবাসরত এক রোহিঙ্গা যুবক মিয়ানমার অভ্যন্তরে মাইন বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

রোববার সকালে তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ওই যুবক নিহত এবং আরও একজন আহত হন বলে জানিয়েছেন তমব্রু শূন্যরেখা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কমিউনিটি নেতা দীল মোহাম্মদ।

নিহত ওমর ফারুক (১৮) নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তমব্রু সীমান্তে শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৩ নম্বর ব্লকের বাসিন্দা মো. আইয়ুবের ছেলে। আহত মো. সাহাবুল্লাহ ওরফে আব্বুইয়া একই ক্যাম্পের ১০ নম্বর ব্লকের বাসিন্দা আবুল হোসেনের ছেলে।

নিহতের স্বজনদের বরাতে দীল মোহাম্মদ সাংবাদিকদের বলেন, “সকালে ওমর ফারুক ও সাহাবুল্লাহ মিলে সীমান্তে অতিক্রম করে মাছ ধরতে যায়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আনুমানিক দেড় কিলোমিটার দূরে মেধা পাহাড় নামে পাহাড়ি এলাকায় পৌঁছলে আকস্মিক মাইন বিস্ফোরিত হয়।

“মাইন বিস্ফোরণে ওমর ফারুকের হাঁটুর নিচ পর্যন্ত দুই পা উড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়, সামান্য আহত হয় সাহাবুল্লাহ। বিকাল ৪টায় ওমর ফারুকের লাশ নিয়ে সাহাবুল্লাহ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছার পর ঘটনাটি জানা যায়।”

নিষিদ্ধ স্থলমাইন মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর ব্যবহারের নজির রেড ক্রসের গত মার্চ মাসের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

তাতে বলা হয়, স্থল মাইনসহ নানা বিস্ফোরকের বিস্ফোরণে মিয়ানমারে শত শত মানুষ হতাহত হচ্ছে প্রতি বছর। গত বছরও এমন বিস্ফোরণে আহত ১৬০ জনকে সহায়তা দিয়েছে রেড ক্রস।

রাখাইন প্রদেশের মতো সংঘাতপ্রবণ এলাকাগুলোতে এই বিস্ফোরণের ঝুঁকি বাড়ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়

মিয়ানমারে রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গাদের বাস, সেখানে নিপীড়নের শিকার হয়ে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা এখন বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে। পালিয়ে সীমান্তের শূন্য রেখায়ও আশ্রয় নিয়ে আছে এই মুসলিম জনগোষ্ঠীর একটি দল।

সম্প্রতি রাখাইনে নতুন করে সংঘাত দেখা দেওয়ার পর বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মর্টার শেল ও গোলাবর্ষণে হতাহতের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জাতিসংঘে চিঠি পাঠায় শূন্যরেখায় অবস্থানরত এই রোহিঙ্গারা।

তাদের নেতা দীল মোহাম্মদ জানান, রোববার সন্ধ্যায় জানাজা শেষে ওমর ফারুকের লাশ শূন্যরেখায়ই করবস্থানে দাফন করা হয়েছে।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসকারী এক যুবক মিয়ানমার অভ্যন্তরে মাইন বিস্ফোরণে মারা যাওয়ার খবরটি তিনি শুনেছেন।

“নিহতের দুই পা উড়ে গেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সে মারা যায় বলে শূন্যরেখার ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা জানিয়েছে।”

এ বিষয়ে কথা বলতে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবির কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী হোসাইন কবিরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

এর আগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে তমব্রু সীমান্তের হেডম্যান পাড়ার যুবক অন্ন্যাই তংচঙ্গা (২৮) গুরুতর আহত হয়েছিলেন। মাইন বিস্ফোরণে তার এক পা উড়ে যায়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ