নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ব্যাট হাতে একাই লড়াই চালালেন সাকিব আল হাসান। ঝড়ো গতিতে তিনি তুলে নেন ক্যারিয়ারের ১১তম ফিফটি। কিন্তু বাকি ব্যাটারদের ব্যর্থতায় এদিন ৪৮ রানের ব্যবধানে হারতে হয় বাংলাদেশকে।
ক্রাইস্টচার্চে বুধবার (১২ অক্টোবর) ত্রিদেশীয় সিরিজে ফাইনালের লড়াইয়ে টিকে থাকার ম্যাচে বাংলাদেশকে ২০৯ রানের লক্ষ্য বেঁধে দেয় নিউজিল্যান্ড। জবাব দিতে নেমে নির্ধারিত ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬০ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ছাড়া এদিন ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে পারেননি অন্য টাইগার ব্যাটাররা। সাকিব ৪৪ বলে ৭০ রান করে আউট হন। কিউই বোলারদের মধ্যে ২৪ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেন অ্যাডাম মিলনে। দুটি করে উইকেট তুলে নেন টিম সাউদি ও মাইকেল ব্রেসওয়েল।
এর আগে জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দেয়ার বদলে স্ট্রাইকরেটের বারোটা বাজিয়ে ১২ বলে ১১ রান করে সাজঘরে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে অ্যাডাম মিলনের করা তৃতীয় বলটির লাইন মিস করে বোল্ড হন তিনি।
দীর্ঘদিন পর ওপেনিংয়ে ফিরে আসা লিটন এদিন আশা জাগালেও সাজঘরে ফেরেন ১৬ বলে ২৩ রান করে। মাইকেল ব্রেসওয়েলের করা ইনিংসের পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বল ওভার বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে গাপটিলের হাতে ক্যাচবন্দি হন লিটন।
প্রায় এক বছর পর দলে ফেরা সৌম্য সরকারকে এদিন আশার আলো দেখাতে দেননি অ্যাডাম মিলনে। সাকিবের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে তাদের করা ৪৩ রানের জুটির বেশিদূর এগোতে দেননি এ কিউই পেসার। ৩ বাউন্ডারিতে ১৭ বলে ২৩ রান করে ট্রেন্ট বোল্টের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন সৌম্য।
৯৮ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৪ বলে ৪ রান করে মাইকেল ব্রেসওয়েলের স্পিনের লাইন মিস করে বোল্ড হন আফিফ হোসেন। তার পরে ক্রিজে এসে একে একে বিদায় নেন নুরুল হাসান সোহান ও ইয়াসির আলী। দলের প্রয়োজনে ইম্প্যাক্টফুল ইনিংস খেলার বুলি আওড়ানো সোহান এদিন ফেরেন ৬ বলে ২ রান করে। শ্রীরামের চোখে বাউন্ডারি-ওভার বাউন্ডারির সামর্থবান ব্যাটার ইয়াসির ৬ বলে ৬ রান করে সাউদির বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচবন্দি হন।
অপরপ্রান্তে অবশ্য একাই দলকে টেনে নিয়ে যেতে থাকেন সাকিব। তুলে নেন ক্যারিয়ারের ১১তম ফিফটি। ইনিংসের ১৯তম ওভারে এসে তিনিও বিদায় নিলে ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে যায় বাংলাদেশ। অবশ্য তার বিদায়ের আগেই পরাজয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল টাইগারদের।
৪৪ বল মোকাবিলায় ৮ চার ও এক ছক্কায় ৭০ রান করেন সাকিব। ওয়াইড লাইনের বাইরে সাউদির করা বল হিট করতে গিয়ে ব্যাটার কানায় লেগে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচবন্দি হন টাইগার অধিনায়ক। শেষ পর্যন্ত ১৬০ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
এর আগে ডেভন কনওয়ের ও গ্লেন ফিলিপসের বিধ্বংসী ব্যাটে ভর করে নির্ধারিত ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০৮ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। কনওয়ে ৪০ বল মোকাবিলায় ৫ চার ও ৩ ছক্কার মারে ৬৪ রান করেন। অন্যদিকে ২৪ বল মোকাবিলায় ৫ ছক্কা ও ২ চারের মারে ৬০ রান করেন ফিলিপস।
টাইগার বোলারদের মধ্যে এদিন সাইফুদ্দিন ছাড়া বাকি সবার ইকোনমি রেট ছিল দশের উপর। ৩৭ রান খরচায় সাইফুদ্দিন ২ উইকেট শিকার করেন। এবাদত ২ উইকেট তুলতে খরচ করেন ৪০ রান। অন্য পেসার শরিফুলের এক উইকেট শিকার করতে খরচ ৪১ রান। এদিন কোনো উইকেটের দেখা পাননি টাইগার স্পিনাররা।
টানা তিন হারে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল খেলার স্বপ্ন ভঙ্গ হলো সাকিব বাহিনীর। আগামী ১৪ অক্টোবর ফাইনালে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড।