মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ১১:২৩ পূর্বাহ্ন

ময়মনসিংহে স্ত্রী কে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়া স্বামী গ্রেপ্তার

প্রতিনিধির / ৪৬ বার
আপডেট : সোমবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২২
ময়মনসিংহে স্ত্রী কে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়া স্বামী গ্রেপ্তার
ময়মনসিংহে স্ত্রী কে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়া স্বামী গ্রেপ্তার

শুক্রবার সকালে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে আকুয়া-রহমতপুর বাইপাস রোডের বাদেকল্পা এলাকা থেকে অজ্ঞাত নারীর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নিহতের পরিচয় শনাক্ত হয়। নিহতের নাম তাছলিমা (৩২)। তিনি নান্দাইলের ভাসাটি গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা আব্দুর রশিদ বাদী হয়ে কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলার বাদী ও তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ওসি শাহ কামাল আকন্দ আরও বলেন, নিহত তাছলিমার সঙ্গে ফুলপুরের মেহেদীর সঙ্গে বিয়ে হয়। এটা ছিল তাছলিমার তৃতীয় বিয়ে। এই বিয়ের পর থেকে তাছলিমা তার স্বামী মেহেদীকে নিয়ে চট্টগ্রামে বসবাস করছিলেন। গত ১১ অক্টোবর তারা স্বামী-স্ত্রী চট্টগ্রাম থেকে গাজীপুরের বোর্ড বাজার এলাকায় জনৈক স্বপনের বাসায় ভাড়া উঠেন। পরদিন বুধবার রাতে ওই বাসায় স্ত্রী তাছলিমাকে হত্যা করে স্বামী মেহেদী পালিয়ে যায়। নিজের থেকে স্ত্রীর বয়স বেশি, স্ত্রীর সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে ঝগড়া ও তৃতীয় স্বামী হয়ে থাকতে ভালো না লাগায় শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মেহেদী।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশের আরও একটি সফল অভিযান। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অজ্ঞাত বস্তাবন্দী লাশের (গৃহবধূ) রহস্য উদঘাটন, হত্যাকাণ্ডের মূলহোতাসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার ও লাশ বহনে ব্যবহৃত প্রাইভেটকার জব্দ করেছে।

রোববার (১৬ অক্টোবর) রাতে গাজীপুরসহ আশপাশের এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার নিহতের স্বামী মেহেদী ও বাসার মালিক লাশ গুমের মহানায়ক স্বপন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।সদর সার্কেল এবং কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ সোমবার (১৭ অক্টোবর) সকালে কোতোয়ালী মডেল থানায় সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

ওসি শাহ কামাল আকন্দ আরও বলেন, নিহতের পরিচয় শনাক্তের পর পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞার নির্দেশে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অজ্ঞাত এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য দ্রুততম সময়ে উদঘাটন এবং হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন- নিহতের স্বামী মেহেদী হাসান (২২) এবং ভাড়াটিয়া বাসার মালিক স্বপন বেপরী (৩৮)। এদের মধ্যে মেহেদী জেলার ফুলপুর উপজেলার গোয়াডাঙা গ্রামের ছোহরাব আলীর ছেলে। আর স্বপন বেপারী গাজীপুরের গাছা থানার দুলাল মার্টেক এলাকার বাসিন্দা।

গ্রেপ্তারকৃত স্বামী মেহেদী ও বাড়ির মালিক স্বপনের বরাত দিয়ে ওসি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর স্বামী মেহেদী লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির মালিক স্বপন নতুন ভাড়াটিয়া তাছলিমা ও তার স্বামী মেহেদীর জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে ওই বাসায় যায়। এ সময় দরজার কড়া নেড়ে শব্দ না পেয়ে দরজা ধাক্কা দেয় এবং দরজা খুলে তাছলিমার উলঙ্গ মরদেহ পরে থাকতে দেখতে পায়। স্বপন ভয়ে পুলিশ কিংবা তেমন কাউকে কিছু না জানিয়ে লাশ গুমের পরিকল্পনা শুরু করে।

বৃহস্পতিবার দিনভর ঘর বন্ধ রাখার পর রাতে লাশ বস্তাবন্দী করে স্বপনের নিজস্ব প্রাইভেটকারে করে নির্জন স্থানে ফেলে দিতে ময়মনসিংহের দিকে রওনা দেয়। কোথাও সুবিধা জনক স্থান না পেয়ে অবশেষে আকুয়া-রহমতপুর বাইপাসের বাদেকল্পা এলাকায় ওই নারীর বস্তাবন্দী লাশ ফেলে পালিয়ে যায় স্বপন ও তার সহযোগীরা।

এসআই নিরুপম নাগ, মিনহাজ উদ্দিন, এএসআই সুজন চন্দ্র সাহা, কনস্টেবল জোবায়ের ও নিজাম উদ্দিন এই অভিযান পরিচালনা করেন। এসআই নিরুপম নাগ বলেন, ওসি শাহ কামাল আকন্দের পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনায় টানা অভিযান চালিয়ে লাশ উদ্ধারের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মামলার রহস্য উদঘাটন ও খুনিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।

ব্রিফিংকালে সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিনুল ইসলাম ফকিরসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ