শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২০ অপরাহ্ন

এই পর্যন্ত আমার যাত্রায় আমি গর্বিত:বেনজেমা

প্রতিনিধির / ৮৫ বার
আপডেট : মঙ্গলবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২২
এই পর্যন্ত আমার যাত্রায় আমি গর্বিত:বেনজেমা
এই পর্যন্ত আমার যাত্রায় আমি গর্বিত:বেনজেমা

স্বপ্নের মতো মৌসুম কাটানোর পর করিম বেনজেমার হাতে ব্যালন ডি’অরের ট্রফিটা দেখতে পাচ্ছিলেন অনেকেই। রিয়াল মাদ্রিদের ফরাসি এই স্ট্রাইকারের হাতে যে পুরস্কারটি উঠবে, তা অনুমেয়ই ছিল। বেশিরভাগ ফুটবলপ্রেমীর অনুমানই বাস্তবে রূপ নিলো। ২০২২ সালের ব্যালন ডি’অর জিতেছেন বেনজেমা। প্রথমবারের মতো এই পুরস্কারটি জিতলেন তিনি।

তারকা এই স্ট্রাইকারের সাফল্যে ফ্রান্সেরও দীর্ঘদিনের অপেক্ষা ফুরালো। ফ্রান্সের সর্বশেষ ফুটবলার হিসেবে ১৯৯৮ সালে ব্যালন ডি’অর জেতেন জিদান। কিংবদন্তি এই ফুটবলারের পর পুরস্কারটি দেশে ফেরালেন বেনজেমা। নিজেদের ঘরের পুরস্কারই এতোদিন ভাগাভাগি করে নিয়েছেন অন্যরা। ২০০৮ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত হয় মেসি, না হয় রোনালদো এই পুরস্কার জেতেন। ২০১৮ সালে জেতেন লুকা মদ্রিচ, পরের বছর আবারও মেসি।

গত বছর রেকর্ড সপ্তমবারের মতো ব্যালন ডি’অর জেতেন মেসি। কিন্তু এবার ৩০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকাতেও ছিলেন না আর্জেন্টাইন এই ফুটবল জাদকুর। ২০০৫ সালের প্রথমবারের মতো বর্ষসেরার এই পুরস্কারে নাম ছিল না তার। নাম থাকলেও অনেক পিছিয়ে আছেন রোনালদোর। এবারের তালিকায় ২০তম স্থানে আছেন পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকা এই ফুটবলার।

ফ্রান্সের দীর্ঘ অপেক্ষা ফুরানোর পাশাপাশি আর্জেন্টিনা, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল ও জার্মানির পাশে নিজের দেশের নামটি বসালেন বেনজেমা। প্রতিটি দেশেই সাতবার করে গেছে এই পুরস্কারটি। চার দেশের কয়েকজন ফুটবলার মিলে সাতবার ব্যালন ডি’অর জিতলেও আর্জেন্টিনার হয়ে মেসি একাই সবগুলো জিতেছেন।

সোমবার রাতে প্যারিসে জমকালো অনুষ্ঠানে বেনজেমার হাতে তুলে তুলে দেওয়া হয় ফরাসি সাময়িকী ‘ফ্রান্স ফুটবল’- এর পুরস্কার, ব্যালন ডি’অর ২০২২। স্বদেশী ও গুরু জিনেদিন জিদানের হাত থেকে পুরস্কারটি নেন তিনি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেকটা পথ পেরিয়ে অবশেষে ব্যালন ডি’অরে চুমু এঁকে দেওয়ার সুযোগ হলো বেনজেমার।

এবারের ব্যালন ডি’অর জেতার পথে বেনজেমা পেছনে ফেলেছেন রবার্ট লেভানডোভস্কি, কেভিন ডি ব্রুইনে ও সাদিও মানেকে। মুখভর্তি দাড়ি নিয়ে অনুষ্ঠানে হাজির হওয়া বেনজেমা ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা রাতে দেখা দেন ভিন্ন সাজে। তার চোখে ছিল সোনালি ফ্রেমের চশমা, শাদা শার্টের ওপর পড়েছিলেন কালো স্যুট।

ব্যালন ডি’অর হাতে নিয়ে উচ্ছ্বসিত বেনজেমা বলেন, ‘এটা আমাকে গর্বিত করেছে। আমি কখনও হাল ছাড়িনি। আমার জীবনে দুজন আদর্শ জিদান এবং রোনালদো। আমার মধ্যে সব সময় এ স্বপ্ন ছিল যে, সবকিছু সম্ভব। জীবনে এমন সময় এসেছে, যখন আমি ফ্রান্স দলে ছিলাম না। তবে আমি কঠিন পরিশ্রম করেছি এবং কখনও হাল ছাড়িনি।’গত মৌসুমে রিয়ালের রেকর্ড ১৪তম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল বেনজেমার। দলের দুঃসময়ে তিনি ছিলেন কাণ্ডারীর ভূমিকায়। যখনই দল বিপদে, তখনই আলোক বর্তিকা হাতে ছুটে এসেছেন তিনি। ১৫ গোল করে আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন বেনজেমা। এর মধ্যে ১০টি গোলই করেন নকআউট পর্বে।

ইউরোপ সেরা হওয়ার লড়াইয়ে শেষ ষোলো ও কোয়ার্টার-ফাইনালে বেনজেমার হ্যাটট্রিকেই পিএসজি ও চেলসিকে হারায় রিয়াল। সেমি-ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে দুই লেগ মিলিয়ে ভাগ্য নির্ধারণী গোলটিও করেন তিনি। একইভাবে লা লিগায়ও দুর্বার ছিলেন বেনজেমা। রিয়ালের শিরোপা জয়ের মিশনে ৩২ ম্যাচে ২৭ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন তিনি। ফ্রান্সের নেশন্স লিগ জয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন বেনজেমা। চার দলের ফাইনালসের সেমি-ফাইনাল ও ফাইনালে একটি করে গোল করেন তিনি।

টানা দ্বিতীয়বারের মতো বর্ষসেরা নারী খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছে বার্সেলোনার স্প্যানিশ তারকা অ্যালেক্সিয়া পুতেয়াস। বর্ষসেরা ক্লাব হয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। লেভ ইয়েশিন ট্রফি (সেরা গোলরক্ষক) উঠেছে রিয়ালের থিবো কোর্তোয়ার হাতে। জার্ড মুলার ট্রফি (সেরা স্ট্রাইকার) জিতেছেন বায়ার্ন ছেড়ে বার্সেলোনা পাড়ি জমানো রবার্ট লেভানডোভস্কি। সক্রেটিস অ্যাওয়ার্ড (দাতব্য কাজে সম্পৃক্ততা) জিতেছেন সাদিও মানে। কোপা ট্রফি (অনূর্ধ্ব-২১ বছর বয়সী সেরা খেলোয়াড়) জিতেছেন বার্সার তরুণ স্প্যানিশ মিডফিল্ডার গাভি।

১৯৫৬ সাল থেকে ইউরোপের সেরা খেলোয়াড়কে ব্যালন ডি’অর পুরস্কার দেওয়া চালু হয়। ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত পুরস্কারটি শুধু ইউরোপের খেলোয়াড়দের দেওয়া হতো। এর পর থেকে ইউরোপে খেলা বিশ্বের যেকোনো খেলোয়াড়ের জন্য পুরস্কারটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ২০০৭ সাল থেকে কেবল ইউরোপের সেরা নয়, পুরস্কারটি দেওয়া শুরু হয় বিশ্বের সেরা ফুটবলারকে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ