শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:২৮ পূর্বাহ্ন

শুটিং নেই এফডিসিতে, বেতন পাচ্ছেন না কর্মকর্তারা

প্রতিনিধির / ৮৮ বার
আপডেট : শনিবার, ২২ অক্টোবর, ২০২২
শুটিং নেই এফডিসিতে, বেতন পাচ্ছেন না কর্মকর্তারা
শুটিং নেই এফডিসিতে, বেতন পাচ্ছেন না কর্মকর্তারা

জৌলুস হারিয়েছে চলচ্চিত্রের আঁতুরঘর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)। একসময় শিল্পীদের আনাগোনায় মুখরিত থাকতো এই অঙ্গনের প্রতিটি প্রাঙ্গন। অথচ সেই চিত্র এখন কালের গহ্বরে।

আগের মতো নেই শুটিং, নেই শিল্পীদের আনাগোনা। সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার (কেপিআই) ভেতরে এখনো মানুষের দেখা মিললেও, সবাই যেন অলস সময় কাটাচ্ছেন। এই চিত্র একদিনে নয়, বদলেছে বছর কয়েক সময় নিয়ে।শুধু চিত্রই নয়, বিএডিসির কর্মকর্তাদের মাঝেও যেন নেমে এসেছে হতাশার ছায়া।

কারণ গত দু’মাস ধরে তারা সম্মানি (বেতন) পাচ্ছেন না। এফডিসির কর্মকর্তাদের অনেকেই বলছেন, গত মাসের বেতন এখনো পাইনি। এ মাসের বেতন তো দূরের কথা। অথচ বছর কয়েক আগে মাসের শুরুতে এই কর্মকর্তারা বেতন পেয়ে যেতেন। বর্তমান পরিস্থিতির কারণে সরকারি এই কর্মকর্তাদের কাজের প্রতি আগ্রহও কমে যাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের সময় অনলাইন’কে বলেন, ‘বেতন নিয়মিত না হওয়ার পেছনে অনেক কারণ আছে। একটি কারণ- শুটিং না থাকা। আগে এফডিসির প্রতিটি শুটিং ফ্লোরে নিয়মিত শুটিং হতো। কিন্তু এখন এখানে ছবির শুটিং নেই বললেই চলে।

আর শুটিং কমে যাওয়ার পেছনেও রয়েছে অনেক কারণ। এর প্রধাণ একটি কারণ হচ্ছে, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। এখানে শুটিং করতে হলে অনেক নিয়ম-কানুন মেনে শুটিং করতে হয়। এর মধ্যে আবার কাগজপত্র নিয়ে প্রযোজক-পরিচালকদের এ টেবিল, ও টেবিল দৌড়াতে হয় আবার ভাড়াও বেশি। এসব কারণে অনেকেই এখন এফডিসিতে শুটিং করতে চান না। যদি তাদের কাজের পথটি সহজ করা হয়, তাহলে এফডিসিতে শুটিং সংখ্যা বাড়বে। আর শুটিং হলেই এফডিসির আয়ও হবে।’

বিষয়টি নিয়ে এফডিসির হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো আলাউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, গত কয়েক মাস ধরে বেতন অনিয়মিত।’ কী কারণে এমনটা হয়েছে জানতে চাইলে কোনো উত্তর দেননি এই কর্মকর্তা।

বর্তমান এফডিসিতে শুটিং কমে যাওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হয় এফডিসির অতিরিক্ত পরিচালক উৎপাদন শাখা মামুনুর রশিদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের এফডিসির অবস্থা আগের মতো নেই। এমনিতেই দেশে শুটিং কম। আর এফডিসির ভেতরে শুটিং নেই বললেই চলে। যে কয়েকটি শুটিং হচ্ছে এর মধ্যে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ফ্লোর ভাড়া নিয়ে শুটিং করছে। বর্তমানে আমাদের শুটিং ফ্লোর-ই আছে পাঁচটা। এর মধ্যে তিনটা বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে কাছে বুকিং। বাকি দুটায় তেমন একটা কাজ নেই। আমাদের ৩, ৪, ৫ তিনটা ফ্লোর ভেঙে ফেলা হয়েছে। আপনার জানেন, সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বহুতল বিল্ডিংয়ের কাজ শেষ হলে শুটিং বাড়বে। এখন শুটিংয়ে সংখ্যা কমে যাওয়ায় এফডিসির জৌলুস আগের মতো আর নেই। আর আমাদের কথা আর কি বলব?’

ফ্লোর ভাড়া নিয়ে নাকি অনেক আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আছে? এ বিষয়ে মামুনুর রশিদ বলেন, ‘এসব মিথ্যা কথা। এখানে শুটিং করতে হলে কিছু নিয়ম মেনে শুটিং করতে। শুধু এখানে না আপনি যেখানেই শুটিং করেন, সেখানেও নিয়ম মেনে আপনাকে শুটিং করতে হবে। অনেকেই এসব বলে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জলঘোলা করার চেষ্টা করছে।’এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিল্পীদের আনাগোনা কম থাকলেও বহিরাগতের আনাগোনা থেমে নেই। অথচ কেপিআইভুক্ত এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর থাকার কথা। কিন্তু এফডিসির বেলায় তা হয়েছে উল্টো। কোনো শুটিং হলে সেখানে সাধারণ মানুষ বেশ জটলা পাকিয়ে থাকে। আর সেলফি তোলার জন্য হিড়িকও পরে।

শুধু তাই নয়, ফ্লোর ভাড়া এবং শুটিংসহ আনুসাঙ্গিক খরচ এফডিসির তুলনায় বাইরে অনেক কম। এসব কারণে সিনেমার অনেকে নির্মাতাই এখন বাইরের লোকেশনে শুটিং করে থাকেন। যার কারণে ধীরে ধীরে শুটিং শূন্য হয়ে পরছে এফডিসি।এফডিসির বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে জানতে বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ