বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৫৩ অপরাহ্ন

আইএমফের ঋণ পাওয়া গেলে অর্থনীতিতে সংকট থেকে রেহাই পাওয়া যাবে

প্রতিনিধির / ৯১ বার
আপডেট : রবিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২২
আইএমফের ঋণ পাওয়া গেলে অর্থনীতিতে সংকট থেকে রেহাই পাওয়া যাবে
আইএমফের ঋণ পাওয়া গেলে অর্থনীতিতে সংকট থেকে রেহাই পাওয়া যাবে

জানা গেছে, প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি ডলার ঋণ চেয়ে গত চলতি বছরের ২৪ জুলাই আইএমএফের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশের সরকার। আলোচনার জন্য বুধবার (২৬ অক্টোবর) ঢাকায় আসছে আইএমএফের প্রতিনিধিদল। ১৫ দিন ঢাকায় থেকে ঋণ নিয়ে নানান বিষয় আলোচনা করবে সংস্থাটি।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর গণমাধ্যমকে বলেন, করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে চাপের ফেলেছে। বিশেষ করে, প্রবাসী আয় কমে আসা, রপ্তানি আয়ে হোঁচট, রিজার্ভ কমে যাওয়া এবং মূল্যস্ফীতিসহ সবকিছু মিলিয়ে অর্থনীতির চাপ সামাল দিতে আইএমএফের ঋণটা খুবই জরুরি।

তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব ঋণটা আমাদের পেতেই হবে। এজন্য যদি আইএমএফের কিছু শর্ত মানতে হয়, সেটা মেনেই ঋণটা নিতে হবে। কারণ, আইএমএফ ঋণ দিলে বিশ্বব্যাংক তখন আমাদের পাশে থাকবে। তারাও ঋণ দেবে। তখন সব কিছু আসতে আসতে ঠিক হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ গবেষণা পরিচালক মঞ্জুর হোসেনও একই কথা বলছেন। তিনি বলেন, আইএমএফের ঋণটা যতো দ্রুত পাওয়া যাবে, দেশের জন্য ততোই মঙ্গল। ঋণটা পেলে সরকার একটু স্বস্তি পাবে। অর্থনৈতিক চাপ সামাল দিতে পারবে সরকার।

গত কয়েকমাস ধরে দেশের বর্তমান অর্থনীতি চাপে আছে। বিশেষ করে, বৈদেশিক মুদ্রা সংকট, মূল্যস্ফীতি, তেল, গ্যাস, রপ্তানি আয় এবং রেমিট্যান্স কমায় এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ পাওয়া গেলে অর্থনীতিতে যে সংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে, তা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।

এ পরিস্থিতিতে কিছু শর্ত মেনে হলেও আইএমএফের ঋণ নিতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে, আইএমএফ শর্ত কেমন হতে পারে? সেটা সরকারের পক্ষে পালন করা কতটা সহজ হবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।

আইএমএফ যেসব শর্ত দিতে পারে-

১. বাংলাদেশের রাজস্ব ও কর নীতির সংস্কার করতে হবে। বিশেষ করে রাজস্ব বাড়াতে হবে। সেজন্য ব্যয়ভার সীমিত করতে হবে এবং ব্যয়ের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হবে।

২. আর্থিক ব্যবস্থায় আমানত ও ঋণের যে সীমা বেধে দেয়া আছে, সেটা তুলে দিতে হবে।

৩. মুদ্রানীতির আধুনিকায়ন করতে হবে। মুদ্রাবাজারের ওপর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ তুলে দিতে হবে।

৪. রিজার্ভ যথেষ্ট থাকলেও সেটা সুরক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া এবং সতর্কতা নিতে হবে।

৫. দেশের বিভিন্ন খাতের ভর্তুকি কমিয়ে আনতে হবে।

৬. ব্যাংকিং খাতে বিধিমালার কঠোর বাস্তবায়ন ও নজরদারি জোরালো করতে হবে। বিশেষ করে আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে যাতে খেলাপি ঋণ হ্রাস পায়।

৭. আর্থিক খাতের দুর্বলতা দূর করা এবং পুঁজি বাজার শক্তিশালী করে তুলতে হবে।

৮. করোনার সময়কার খরচের নিরীক্ষা সম্পন্ন করা হলেও সেটা প্রকাশ করা উচিত।

৯. রপ্তানির বহুমুখীকরণ, বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পদক্ষেপ নেয়া, উৎপাদন বাড়ানো, মানব সম্পদের উন্নয়ন ও দুর্নীতি বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া।

১০. জলবায়ু পরিবর্তনে পদক্ষেপ ও তহবিল বরাদ্দে সংস্কার কার্যক্রমেরও পরামর্শ।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ