ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ঝড়োবাতাসে গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুঁটি হেলে পড়ে প্রায় ৩৬ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন লক্ষ্মীপুর।মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল ৪টা পর্যন্ত লক্ষ্মীপুরের কোথাও বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া হয়নি। শুধু লক্ষ্মীপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) কার্যালয়ে গিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলতে ও পাখা চলতে দেখা গেছে। এতে বিপর্যয়ে পড়েছে জনজীবন। মোবাইল নেটওয়ার্কও প্রায় ২০ ঘণ্টা বন্ধ ছিল।
এদিকে লক্ষ্মীপুর জজ আদালতে অন্ধকারেও বিচারকার্য চলতে দেখা গেছে। তবে আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিনের কক্ষে মোমবাতি জ্বলতে দেখা যায়।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চকবাজার মসজিদ মার্কেট, তমিজ মার্কেট, হকার্স মার্কেট, পৌর সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা ক্রেতাশূন্য অন্ধকার দোকানে বসে রয়েছেন। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক বিপর্যয় হয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন পুরো জেলায়ই একই অবস্থা বিরাজ করছে।
পিডিবি কার্যালয় সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ঝড়োবাতাসে নোয়াখালী থেকে লক্ষ্মীপুরের বিদ্যুতের ৩৩ কেভি সংযোগ তারের ওপর গাছপালা ভেঙে পড়েছে। সদর উপজেলার জকসিন এলাকায় বিদ্যুতের টাওয়ার হেলে পড়েছে। শহরের সমসেরাবাদ এলাকায় পানি ট্যাংকের সামনে পিলার ভেঙে গেছে। এতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে। রামগঞ্জ গ্রিড থেকে পিডিবি কার্যালয়ে সংযোগ নেওয়া হয়েছে। তারা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যাগুলো সমাধান করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার চেষ্টায় কাজ করছেন।মিষ্টির দোকানের ব্যবসায়ী রতন দাস বলেন, দুদিন ধরে বিদ্যুৎ নেই। এতে মিষ্টি ও দধি নষ্ট হওয়ার পথে। বিক্রিও নেই।
কাপড় ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান ও রাকিব হোসেন বলেন, সোমবার ভোর ৪টার দিকে বিদ্যুৎ চলে গেছে। এরপর থেকে প্রায় ৩৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন লক্ষ্মীপুর। অন্ধকার দোকানে ক্রেতারা আসেন না। এ জন্য দুদিন ধরে বিক্রি নেই বললেই চলে।টেলিকম ব্যবসায়ী রফিক রকি বলেন, আমাদের পুরো কাজ বিদ্যুতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। মোবাইলে চার্জ নেই। চার্জ থাকলেও নেটওয়ার্ক নেই। ফটোকপি মেশিন চালাতে পারছি না। এ জন্য ক্রেতারা এসে ফিরে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগে অভিযোগকেন্দ্রে কর্মরত মো. সোহেল বলেন, জকসিন এলাকায় বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে গেছে। সেখানে নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন মাহমুদ শামিম ফরহাদসহ পিডিবি অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন। দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ দিতে আমরা চেষ্টা করছি। তবে কখন বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া হবে, তা জানাতে পারেননি তিনি।
লক্ষ্মীপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন মাহমুদ শামিম ফরহাদ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে, ঠিক করা হচ্ছে। ঠিক হলেই দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল করা হবে।