চলতি অর্থবছরের জাতীয় বাজেট প্রস্তাবে সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ নেওয়ার কথা রয়েছে সরকারের। তবে নতুন সঞ্চয়পত্র কেনায় বেশকিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। চলতি অর্থবছরে থেকে পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে গ্রাহকের আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ কারণে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমছে বলে মনে জানান খাত সংশ্লিষ্টরা।
গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ২ শতাংশের মতো কমিয়ে দেয় সরকার। এরপরও কিছুটা বাড়লেও পরে তা কমে যায়। গত কয়েক মাস ধরে সঞ্চয় বিক্রি অনেকাংশ কমেছে। এখন আরও তলানিতে নেমে এসেছে।
সঞ্চয়পত্রে সুদহার হ্রাসসহ বিভিন্ন শর্তের কারণে আগ্রহ কমছে বিনিয়োগকারীদের। চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-আগস্ট-সেপ্টেম্বর) ৭৩১ কোটি ৭৭ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে (প্রথম তিন মাস) এর পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর মাসে ব্যাংক, ডাকঘর ও অন্যান্য অফিস থেকে ৩৩০ কোটি ৫৭ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। যা তার আগের মাস আগস্টে মাত্র আট কোটি টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল। আর চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই মাসে ৩৯৩ কোটি ১১ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল।
গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে এক লাখ আট হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল। এর মধ্যে গ্রাহকদের মূল টাকা (বিনিয়োগ) ও মুনাফা (সুদ) বাবদ পরিশোধ করা হয়েছিল ৮৮ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারকে সুদ পরিশোধ করা হয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা। গত অর্থবছর শেষে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধের পর সরকারের নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ১৯ হাজার ৯১৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। যা তার আগের অর্থবছরের (২০২০-২১) চেয়ে ৫২ দশমিক ৪৪ শতাংশ কম।
গত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ৪২ হাজার কোটি টাকা নিট ঋণ নিয়েছিল সরকার। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ছিল ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র খাতের নিট ঋণ ছিল ৪৯ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা, ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে সরকার ঋণ নিয়েছিল ৪৬ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে নিয়েছিল ৫২ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা।