বৈদ্যুতিক সেচ পাম্পের মালিক আকাশ আহমেদ জানান, রোববার সন্ধ্যায় বাজার থেকে বাড়ি ফেরার সময়ও ট্রান্সফরমারটি ছিল। সকালে দেখি, চুরি হয়ে গেছে। আমার স্কিমে প্রায় ৯০ বিঘা আমন ধানসহ বিভিন্ন আবাদ রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সবজিরও চাষ করা হয়েছে। এসব ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাবে যদি দ্রুত ট্রান্সফরমার ঠিক না করা যায়।
মেহেরপুরের গাংনীতে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় চাষিরা ফসল আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। রোববার (৩০ অক্টোবর) রাতে উপজেলার দেবীপুর ভিটাপাড়া ইসহাকের ডিপের মাঠে তিনটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়। এর আগেও বিভিন্ন সময় ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে।
সন্ধ্যার পর দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকার সুযোগে ট্রান্সফরমার চুরি করে নিয়ে যায় চোর। এখন আমনের আবাদ চলছে। এ মুহূর্তে ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় আমন ধান নিয়ে খুব সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এসময় ধানে পানি না দিলে চিটা পড়ে যাবে। এতে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে চাষিদের।
ট্রান্সফরমারের দামও অনেক। এই মুহূর্তে আমাদের ট্রান্সফর্মার কেনা সম্ভব না। যদি দ্রুত এ ট্রান্সফরমারের ব্যবস্থা করা না হয়, তাহলে অনেক চাষি ক্ষতির শিকার হবে।
বৈদ্যুতিক সেচ পাম্পের মালিক আব্দুস সালাম জানান, তিনটি ডিপের স্কিমে প্রায় কয়েক ‘শ’ বিঘা জমির আবাদ রয়েছে। জ্বালানির দাম অনেক বেশি। মেশিনের মাধ্যমে সেচ দিতে গেলে খরচ অনেক বেড়ে যাবে। এই ঘটনায় দোষীদের বিচারের আওতায় আনার অনুরোধ জানান তিনি।
আমন চাষি নবিস উদ্দিন জানান, ‘আমার তিন বিঘা জমিতে ধানের আবাদ রয়েছে। এ মুহূর্তে ধানের সেচ দিতে না পারলে ক্ষতি হয়ে যাবে। এখনো আমার ধানে অনেকগুলো সেচ দিতে হবে। ধানের সেচ দিতে না পারলে ধান চিটা হয়ে যাবে। আর এতে ধানের ফলন কমে যাবে।’
ধান চাষি ফসির উদ্দিন উদ্দিন বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যার পর বিদ্যুৎ চলে যায়। দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকার সুযোগে চোরেরা ট্রান্সফরমারগুলো চুরি করে নিয়ে যায়। এর মধ্যে যে মূল্যবান পিতল ছিল, সেগুলো নিয়ে যায় আর ঠোসগুলো ফেলে যায়। আমি আমার ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছি।’
মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার আবু রায়হান জানান, ট্রান্সফরমার চুরির বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমরা যত দ্রুত সম্ভব বিষয়টির সমাধান করবো। চাষিদের যেন কৃষি খাতে কোনো সমস্যা না হয়, বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
গাংনী থানার (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ট্রান্সফরমার চুরির খবর শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।