সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৬ অপরাহ্ন

নোয়াখালীর হাতিয়ায় নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে

প্রতিনিধির / ১৫৪ বার
আপডেট : বুধবার, ২ নভেম্বর, ২০২২
নোয়াখালীর হাতিয়ায় নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে
নোয়াখালীর হাতিয়ায় নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে

শীত আগমনের শুরুতে আবহাওয়ার পরিবর্তন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হঠাৎ করে দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। এতে হাসপাতালের শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে শিশু রোগীর সংখ্যা ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশ কয়েকগুণ বেড়েছে। স্থান সংকুলান না হওয়ায় বাধ্য হয়ে একই বেডে ২/৩ রোগীকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। শয্যা সংকটে অনেকে বাধ্য হয়ে হাসপাতালের বারান্দায় ও ফ্লোরে নিতে হচ্ছে চিকিৎসা। ডাক্তারের সংখ্যা কম হওয়ায় বৃদ্ধি পাওয়া সেই রোগাক্রান্ত শিশু গার্ডিয়ানদের সেবা নিতে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে দ্বিগুণ।

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। হাসপাতালে শয্যা না পেয়ে বারান্দায় শুয়ে ও বসে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে আক্রান্ত রোগীদের। আর এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।

জানা যায়, গত সপ্তাহ থেকে উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রতিদিন নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন ৫০-৬০ জন। মঙ্গলবার যার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে।

নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু রোগী ছাড়াও হাসপাতালে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষও রয়েছে। ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ৪ (চার) জন। একসঙ্গে এত রোগীর চাপ সামাল দিতে গিয়ে একদিকে যেমন চিকিৎসক ও নার্সদের কষ্ট পেতে হচ্ছে, অন্যদিকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রোগী ও স্বজনদের। হাসপাতালে ভর্তিবস্থায় মোবারক নামের দেড় বছর বয়সী এক শিশু রোগীর মৃত্যু হয়েছে আজ। সে উপজেলার চরকিং ইউনিয়ন আফাজিয়া এলাকার নাজিম উদ্দিনের ছেলে।

মোবারকের মা জানান, ঠান্ডা লেগে তার ছেলে মোবারক অসুস্থ হলে গতকাল হাসপাতালে ভর্তি করান। বাহার নামের এক ব্যক্তি ক্ষোভ ঝেড়ে বলেন, তার ১০ মাস বয়সী ফাতেমা ঠিক মতো সেবা পাচ্ছেন না, নার্স’রা সদাচার করছেন না।

এছাড়াও হাসপাতালে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশসহ নানা সমস্যারও শেষ নেই। রোগীর স্বজনরা জানান, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে তাদের রোগী আরও অসুস্থ হচ্ছে। এখানে তারা প্রকৃত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না। টয়লেট ব্যবহারের অযোগ্য। পানি পর্যন্ত টয়লেটে নেই। এমন অভিযোগের শেষ নেই। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় রাউন্ডে থাকা অবস্থায় ডাক্তার ইউসুফ সোহাগকে রোগীর মাত্রা বেড়ে যাওয়া, সেবা ও ডাক্তার সংকটসহ নানা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, রোগীর মায়েদের অপরিস্কার ও অসচেতনতা, আবহাওয়ার পরিবর্তন, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এবং ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে শিশুরোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, বর্তমানে তারা চারজন কর্তব্যরত ডাক্তার রয়েছেন। ডা. শেখ মাহমুদ ট্রেইনিং-এ রয়েছেন। ডাক্তার খাদিজা রহমানও বলেন, চিকিংসা বিভাগ আমাদেরকে ডাক্তার না দিলে আমরা কী করবো। বিরতিহীন ভাবে রোগীদেরকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন বলে ডাক্তার খাদিজা রহমান জানান।

নোয়াখালী জেলার সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন, কর্তব্যরত যারাই আছেন তাদের সবাইকে রাউন্ডে যাওয়াসহ সঠিক দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে স্মরণ করে দেওয়া হবে। অব্যবস্থাপনার ব্যাপারটিও তিনি দেখতেছেন বলে জানান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ

Categories