শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন

রেলের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার একর জমি অবৈধ দখলদারের কব্জায়

প্রতিনিধির / ৯৫ বার
আপডেট : শুক্রবার, ৪ নভেম্বর, ২০২২
রেলের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার একর জমি অবৈধ দখলদারের কব্জায়
রেলের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার একর জমি অবৈধ দখলদারের কব্জায়

সারা দেশে রেলের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার একর জমি অবৈধ দখলদারের কব্জায় থাকলেও তা উদ্ধারে নেই কার্যকর উদ্যোগ। প্রভাবশালীরা এসব জায়গায় ঘর কিংবা দোকানপাট বানিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন বছরের পর বছর।মাঝেমধ্যে রেল কর্তৃপক্ষ বিচ্ছিন্নভাবে উচ্ছেদ আভিযান চালায় বটে, কিন্তু জায়গা আর উদ্ধার হয়না। এ নিয়ে অসহায়ত্ব জানান খোদ রেলপথ মন্ত্রীও।

রাজধানীর উত্তরা পাবলিক কলেজ। নিয়মের বাইরে গিয়ে রেল লাইন ঘেঁষেই কলেজটি নির্মাণ করা হয়। পাশেই রেলওয়ের জায়গা দখল করে তৈরি হয় চার তলার একটি কমপ্লেক্স। সম্প্রতি সেখানে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয় । কিন্তু দখলদারমুক্ত হয়নি জায়গাটি।উত্তরা পাবলিক কলেজের প্রতিষ্ঠাতা এ এইচ এম সেলিম জানান, এই জমি আমরা লিজ নিয়েছি। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ তারা জেনেই অভিযান পরিচালনা করেছে। কি কারণে তারা কলেজ ভেঙেছে তারাই বলতে পারে।

পাশেই আব্দুল কাদির মার্কেট। সেখানে উদ্ধার অভিযান চালিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আইনের মারপ্যাচে উচ্চ আদালত থেকে আনা হয়েছে স্থগিতাদেশ। যার কারণে মার্কেট ভেঙ্গে দিলেও জায়গা বেদখলই থেকে গেছে।এই রেলওয়ে আমাদের কাছ থেকেই নিয়েছে পরে, আমরা রেলওয়ে থেকে নিয়েছি এবং মার্কেট করেছি। তাদেরকে আমরা টাকা পয়সাও দেই। কিন্তু কোনো কিছু না বলে তারা এসে সব ভেঙে দিয়ে গিয়েছে।

রাজধানীর বিমান বন্দর স্টেশন থেকে টঙ্গী রেললাইন পর্যন্ত পুরোটাই বেদখলে রেখেছে প্রভাবশালীরা। যা কোনোভাবেই উদ্ধার করা যাচ্ছে না।রেলওয়ে পুলিশ, বিমান বন্দর স্টেশনের ফাড়ি ইনচার্জ কামরুল হাসান জানান, এখানে রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা এই জায়গাগুলো দখল করেছে রেখেছ। আমরা কয়েকবার রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে অভিযান পরিচালনা করেছি কিন্তু উচ্ছেদের পর আবার বসে যায়।

কমলাপুর স্টেশন হওয়ার আগে ঢাকার প্রথম রেলস্টেশন ছিল রাজধানীর ফুলবাড়িয়ায়। সেই ফুলবাড়িয়াতেই বহু জায়গা এখন বেদখল। আর এই বেদখলের কথা স্বীকারও করেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন রেলওয়ের ১২ টি মার্কেট দখল করে রেখেছে। তাদের সাথে কথা হয়েছে, রেলওয়েকে তারা ৫ পার্সেন্ট লাভ দেবে। এই সব মার্কেট উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না।

দেশে সব মিলিয়ে ৫ হাজার ৪৫৫ একর জমিই এখন বেদখলে। তবে বাস্তব চিত্র আরও ভয়াবহ বলছে সংশ্লিষ্টরা। সংস্থাটির ১৮ হাজার একরের বেশি জমি ব্যবহার হয় না, যার বেশিরভাগই বেদখলে।রেলমন্ত্রী আরও বলেন, রেলওয়ের আগে যেরকম জনবল ছিল এখন সেটা নেই । যার কারণে উদ্ধার অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না। বেদখল জমিগুলোকে অন্য একটা ম্যানেজমেন্ট করতে হবে। সেটাই চিন্তা করছি।জমি উদ্ধার করতে সাত বছরের জেল-জরিমানার বিধান রেখে ২০১৬ সালে একটি আইন করে সরকার। কিন্তু এই আইন কাউকে সাজা দেওয়ার নজির গেল ৬ বছরেও নেই।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ