বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের দিকে দৃষ্টি এখন সবার। বঙ্গবন্ধু উদ্যানের পশ্চিম প্রান্তে একটি অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্য দেবেন জাতীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এ লক্ষ্যে ৫০ ফুট দীর্ঘ এবং ২৫ ফুট প্রস্থ বাঁশ-কাঠের মঞ্চ করা হয়েছে। মাঠে এবং আশপাশের বিভিন্ন সড়কে সাঁটানো হয়েছে শতাধিক মাইক। দুই দিন ধরে প্রত্যন্ত অঞ্চলের নেতা-কর্মীরা মাঠে অবস্থান নেওয়ায় তাদের নিরাপত্তার জন্য করা হয়েছে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলী হায়দার বাবুল বলেন, স্থানীয় প্রশাসন বিএনপিকে মাঠের স্থায়ী মঞ্চ দেয়নি।
এর আগে এই মাঠে সব রাজনৈতিক কর্মসূচিতে স্থায়ী মঞ্চ ব্যবহার করা হয়েছে। এবার স্থায়ী মঞ্চ ব্যবহার করতে না দেওয়ায় বাধ্য হয়ে তারা অস্থায়ী মঞ্চ করেছেন। সমাবেশস্থলে শৃঙ্খলা রক্ষায়ও নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবায়েদুল হক চাঁন। গণসমাবেশের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে তিনি জানান। আজ জোহরের নামাজের পরই আনুষ্ঠানিক গণসমাবেশ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক। তার আগেই মাঠে হাজার হাজার কর্মী অবস্থান নিয়েছেন বলে তিনি জানান। গণসমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্যে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত হবেন বলে আশা তার।বরিশাল বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করতে ৩৬ ঘণ্টা আগেই সমাবেশস্থলে অবস্থান নিয়েছেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা -বাংলাদেশ প্রতিদিন
অবরুদ্ধ বরিশালে আজ বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। সমাবেশের জন্য প্রস্তুত নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যান। প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধু উদ্যানের অস্থায়ী মঞ্চে গণসমাবেশ করবে তারা। এ লক্ষ্যে নির্মাণ করা হয়েছে মঞ্চ। মাঠে এবং মাঠের বাইরে সাঁটানো হয়েছে শতাধিক মাইক। রাতে মাঠে রাত-যাপনের জন্য করা হয় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। সমাবেশের দুই দিন আগে মাঠে অবস্থান নেন হাজার হাজার নেতা-কর্মী। এ রিপোর্ট লেখার সময়ও দলে দলে লোকজন আসছিল সমাবেশস্থলে। খন্ড খন্ড মিছিলের মাধ্যমে তাদের উজ্জীবিত রাখছিলেন নেতা-কর্মীরা। আজকের সমাবেশস্থল জনসমুদ্রে পরিণত করার মধ্য দিয়ে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করার কথা বলেন কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতারা। তবে গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে কোনো নাশকতা হলে সমুচিত জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
গণসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে ক্ষমতাসীনরা সব চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রধান সমন্বয়ক প্রফেসর ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, সমাবেশের এক দিন আগেই মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে। আরও জনস্রোত আসছে। আজকের গণসমাবেশে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস থাকবেন প্রধান বক্তা। এ ছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানসহ জাতীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন। আজকের বিভাগীয় গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে সরকারকে লাল কার্ড দেখানো হবে বলে তিনি জানান। এদিকে দুই দিন ধরে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে অবস্থান নেওয়া নেতা-কর্মীদের চাঙা রাখতে মিছিলে মিছিলে মুখরিত করে রেখেছেন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এর মাধ্যমে ঢাকার মহাসমাবেশ সফল হবে বলে দাবি তাদের। বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে কোনো ধরনের নাশকতা হলে সমুচিত জবাব দেওয়ার কথা বলেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, আওয়ামী লীগ শান্তিতে বিশ্বাসী। তারা শান্তিপূর্ণ জনসমাবেশ করলে কোনো সমস্যা নেই। নাশকতা করলে সমুচিত জবাব দেবে আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধু উদ্যানে গণসমাবেশস্থলের উত্তর পাশে ৭ নভেম্বর একটি সরকারি অনুষ্ঠানের জন্য সংরক্ষিত রেখেছে প্রশাসন। এ নিয়ে ঝামেলার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বরিশাল : সড়ক ও নৌপথে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন বরিশাল। বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে আজ (গতকাল) থেকে দুই দিন বন্ধ থাকবে সব যাত্রীবাহী যানবাহন। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে জনসাধারণ। এদিকে লঞ্চ-বাস-থ্রি হুইলার ও খেয়া নৌকা বন্ধের পরও মিছিলের পর মিছিল আসছে নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বিএনপির গণসমাবেশস্থলে। কোনো বাধা বিএনপির জনস্রোত ঠেকাতে পারবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
রোগী পারাপারও বন্ধ : বাস-লঞ্চ এবং থ্রি-হুইলার বন্ধের পর এবার বরিশালের বিভিন্ন স্থানে খেয়া নৌকা চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল সকাল ৬টা থেকে নগরীর চরকাউয়া খেয়া এবং কাটাদিয়া খেয়া চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা এই খেয়া নৌকায় চলাচল করেন হাজার হাজার মানুষ। আকস্মিক খেয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। রোগী পরিবহনও বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে খেয়াঘাট কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ৪ ও ৫ নভেম্বর বরিশালের সব রুটে বাস, লঞ্চ এবং থ্রি-হুইলার চলাচল বন্ধের খবর আগেভাগেই জেনে যায় জনসাধারণ।