বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) স্থানীয় সময় ভোররাত ৩টার দিকে ঘণ্টায় একটানা ১২০ কিলোমিটার বাতাসের বেগ নিয়ে হারিকেন ‘নিকোল’ মায়ামির উত্তর দিকে আটলান্টিক মহাসাগরের তীবরবর্তী ভোরো বিচের কাছ দিয়ে সাগর থেকে উঠে আসে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের আটলান্টিক উপকূল জুড়ে বয়ে যাচ্ছে ক্রান্তীয় ঝড় ‘নিকোল’। এরফলে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ও অন্তত দুই জনের প্রাণহানি হয়েছে। ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।প্রতিবেদনে বলা হয়, ঝড়টি এখন কিছুটা দুর্বল হতে শুরু করেছে। কিন্তু ঝড়ো বাতাসের তীব্রতা এখনও রয়ে গেছে। পাশাপাশি শুরু হয়েছে ভারি বৃষ্টি আর এতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে।
চলতি বছরের অষ্টম আটলান্টিক হারিকেন ‘নিকোল’ স্থলে উঠে এগিয়ে যাওয়ার সময় কিছুটা দুর্বল হয়ে ক্রান্তীয় ঝড়ে পরিণত হয়। এ ঝড়ের কারণে ফ্লোরিডার প্রায় সাড়ে ৩ লাখ বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ বিহীন হয়ে পড়েছে।এক সংবাদ সম্মেলনে ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডেসান্টিস জানান, তারা প্রস্তুত। ঝড়ের পর যে প্রয়োজন দেখা দেবে তা মেটানোর মতো যথেষ্ট সম্পদ মজুদ আছে। এটি একটি বড় ধরনের ঝড়। অঙ্গরাজ্যের অনেকটা অংশ জুড়ে এর প্রভাব পড়েছে। মূল উদ্বেগ ‘নিকোল’ এর ঝড়ো হাওয়া নিয়ে।
ফ্লোরিডার ২ কোটি ২০ লাখ বাসিন্দার অধিকাংশই ঝড়ের কারণে জারি করা বিভিন্ন ধরনের সতর্কতার মধ্যে আছে। বিশাল ঢেউ তীব্র বেগে তীরের দিকে এসে সৈকতে আছড়ে পড়ছে। ঝড়ো বাতাসে পাম গাছের মাথাগুলো নুয়ে পড়ছে। বৈদ্যুতিক লাইনগুলো ভীষণভাবে দুলছে।কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ঝড়ে ছিঁড়ে পড়া বৈদ্যুতিক তারে স্পৃষ্ট হয়ে দুই ব্যক্তির প্রাণহানি হয়েছে। ঝড় থেমে যাওয়ার পরপরই অঙ্গরাজ্য জুড়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ঠিক করতে ১৭ হাজার কর্মীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
ঙ্গরাজ্যের কর্মকর্তারা ১৫টি জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করেছেন এবং রাজ্যজুড়ে ৬০০ ন্যাশনাল গার্ড প্রস্তুত রেখেছেন। বৃহস্পতিবার অঙ্গরাজ্যটির ৬০টিরও বেশি এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছিল।অরল্যান্ডো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বুধবার (৯ নভেম্বর) বাণিজ্যিক ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রাখে। এছাড়াও রাজ্যজুড়ে ওয়াল্ট ডিজনি পার্কসহ অন্যান্য থিম পার্কও সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়।
ভেরো বিচের প্রায় ৮০ মাইল উত্তরে কেপ ক্যানাভেরালের কেনেডি স্পেস সেন্টারে লঞ্চ প্যাডে উৎক্ষেপণের জন্য রাখা নাসার চার বিলিয়ন ডলারের নতুন একটি মুন রকেট ঝড়ে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।