দেশে মোট জমির ৭০ শতাংশই আবাদযোগ্য। এ হার বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। দেশের কৃষিতে উৎপাদনশীলতাও বেশি। এক জমিতে বছরে চার থেকে পাঁচবারও ফসল ফলানো যায়। এত সুবিধা সত্ত্বেও মোট দেশজ আয়ে (জিডিপি) কৃষির অবদান কমছে।
রপ্তানির জন্য কৃষিপণ্যের প্রক্রিয়াজাতকরণে আধুনিক প্রযুক্তির অভাব রয়েছে। দক্ষ শ্রমিকের সংকটও প্রকট। অথচ খাদ্য নিরাপত্তা এবং নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে এ খাতের সম্ভাবনা ব্যাপক। এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে কৃষিপণ্যের প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে বিনিয়োগ করতে পারেন দেশি-বিদেশি উদ্যোক্তারা। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক ঋণসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে সরকারের পক্ষ থেকে।
গতকাল রোববার আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) আয়োজিত ‘খাদ্য নিরাপত্তা এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি সম্ভাবনা’ শীর্ষক একক বক্তৃতায় কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এসব কথা বলেন। রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব এবং সঞ্চালনা করেন অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ।কৃষিমন্ত্রী বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা এবং নিরাপদ খাদ্যের জন্য উৎপাদনশীলতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন। এ জন্য কৃষিতে বিনিয়োগ, আধুনিক হিমাগার এবং জলবায়ুসহিষুষ্ণ ফসলের জাত প্রয়োজন। প্রক্রিয়াজাত কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। বিদেশিদের পাশাপাশি দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের প্রতিও বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত অভিঘাত কৃষিকে নতুন চ্যালেঞ্জে ফেলেছে। খরা, বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছ্বাস বাড়ছে। আগামীতে আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কৃষির সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কৃষির উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন মন্ত্রী।স্বাগত বক্তব্যে অ্যামচেম সভাপতি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবছর ১৮০ বিলিয়ন ডলারের প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে থাকে। যেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি মাত্র ১৫ লাখ ডলার। অর্থাৎ শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ। এ খাতে বড় বাজার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের সামনে। দেশের কৃষিপণ্যের প্রধান বাজার হতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, সাবেক রাষ্ট্রদূত ফারুক সোবহান, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মজিদ, অ্যামচেমের সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলাম প্রমুখ।