সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল লাইমস্টোন বা চুনাপাথর আমদানিতে নতুন করে আরোপিত ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক্ক ও অতিরিক্ত ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে এ খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমএ)।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল আমারিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ দাবি জানান সংগঠনটির সভাপতি মো. আলমগীর কবির। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মেট্রোসেম সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শহীদুল্লাহ, প্রিমিয়ার সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলিমুল হক প্রমুখ।আলমগীর কবির বলেন, ডলার সংকটের কারণে কাঁচামাল আমদানিতে বিঘ্ন হচ্ছে, খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এলসি খোলার ক্ষেত্রে বিরাট বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন উদ্যোক্তারা। লোডশেডিংয়ের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। গ্যাস সংকটের কারণে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে পরিবহন ব্যয় বেড়েছে। এসব কারণে নানামুখী সমস্যায় রয়েছে সিমেন্ট শিল্প।
কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে গত নভেম্বর থেকে সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল লাইমস্টোনের ওপর আকস্মিক ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক্ক ও ৩ শতাংশ অগ্রিম আয়করের সঙ্গে আরও ২ শতাংশ আরোপ করা হয়েছে। এতে সিমেন্ট খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নও বাধাগ্রস্ত হবে। তাই এ খাতকে টিকিয়ে রাখতে শুল্ক্ক প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।দেশের চাহিদা মিটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সিমেন্ট রপ্তানি হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে প্রায় ৩৫টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান সিমেন্ট উৎপাদন করছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর বার্ষিক কার্যকরী উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৭ কোটি ৯০ লাখ টন। যার বিপরীতে দেশে চাহিদা রয়েছে প্রায় ৩ কোটি ৯০ লাখ টনের। চাহিদার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণের বেশি উৎপাদন হওয়া বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতা রয়েছে। ফলে নামমাত্র মূল্যে সিমেন্ট বিক্রি করতে হয়। এতে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সিমেন্ট উৎপাদনের জন্য প্রধান কাঁচামাল হলো- ক্লিঙ্কার, স্লাগ, লাইমস্টোন, ফ্লাই অ্যাশ ও জিপসাম। এগুলো আমদানি করতে হয়। লাইমস্টোন আমদানিতে আগে থেকেই ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর ও ৩ শতাংশ অগ্রিম কর রয়েছে। নতুন করে শুল্ক্কায়নের ফলে বর্তমানে আমদানি মূল্যের ওপর ২৭ শতাংশের পরিবর্তে প্রায় ৬৭ শতাংশ শুল্ক্ক ও কর পরিশোধ করে লাইমস্টোন ছাড় করাতে হচ্ছে।আলমগীর কবির বলেন, আমদানি পর্যায় ছাড়াও বিক্রয় পর্যায়েও ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর ধার্য করা আছে। অর্থাৎ একটি সিমেন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লোকসান করলেও তাকে চূড়ান্ত কর দায় হিসেবে এই অগ্রিম আয়কর পরিশোধ করতে হবে, যা কোনো বিবেচনায়ই গ্রহণযোগ্য নয়।