গোপালগঞ্জ থেকে আমিনবাজার লাইনটিতে মোট ২২৬টি টাওয়ার রয়েছে। এর মধ্যে খরস্রোতা পদ্মা পাড়ির জন্য নদীতে এবং নদীর দুই প্রান্ত মিলে মোট ১১টি উঁচু টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির (পিজিসিবি) নবনির্মিত আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সফলভাবে চালু (চার্জ) করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে গোপালগঞ্জ গ্রিড সাব-স্টেশন প্রান্ত থেকে ৪০০ কেভি ভোল্টেজ দিয়ে লাইনটি চালু করা হয়। গোপালগঞ্জ থেকে আমিনবাজার গ্রিড সা-বস্টেশন পর্যন্ত লাইনটির দৈর্ঘ্য ৮২.৫ কিলোমিটার; যার মধ্যে পদ্মা নদীতে ৭.৫ কিলোমিটার রিভারক্রসিং রয়েছে।
৪০০ কেভি ভোল্টেজে লাইনটি সফলভাবে চার্জ করায় শিগগিরই সব ধরণের কারিগরি প্রস্তুতি ও মূল্যায়ন শেষে এই লাইনে বিদ্যুৎ সঞ্চালন (লোড ফ্লো) শুরু করা হবে।নবনির্মিত লাইনটি চালু করায় আগে নির্মিত পায়রা-গোপালগঞ্জ ৪০০ কেভি লাইন এবং গোপালগঞ্জ-মোংলা ৪০০ কেভি লাইন ঢাকার উপকণ্ঠের আমিনবাজার গ্রিড উপকেন্দ্রের সাথে যুক্ত হলো। এতে বৃহত্তর খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের সাথে জাতীয় গ্রিডের সংযোগ শক্তিশালী ও অধিকতর নির্ভরযোগ্য হয়েছে।পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের আওতায় পদ্মা নদীতে নির্মাণ হওয়া বৈদ্যুতিক টাওয়ার দিয়ে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বৃত্ত বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হতে যাচ্ছে, যা দেশের বিদ্যুৎ সেক্টরের যুগান্তকারী এক অধ্যায়।
স্বপ্ন জয়ের পদ্মা সেতু শুধু সড়ক যোগাযোগেই নয়, বিদ্যুৎ খাতেও বিপ্লব ঘটাতে চলছে। এজন্য বিশ্বের অন্যতম খরস্রোতা পদ্মার বুকে ৭টি বৈদ্যুতিক টাওয়ার বসে। পদ্মা সেতুর আদলে জার্মানির হ্যামারে নদীর তলদেশে অন্তত ১১০ মিটার গভীর পর্যন্ত স্থাপন করা ৩৬ পাইলের ওপরেই বসেছে টাওয়ারের প্ল্যাটফর্ম। সেতুর সাথে গত জুনে সম্পন্ন হওয়া এই প্লাটফর্ম থেকেই ১২৬ মিটার উচ্চতার টাওয়ার করে সঞ্চালন লাইন সম্পন্ন হলো বিজয়ের মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। নদীতে একটি থেকে আরেকটি টাওয়ারের দূরত্ব ৮৩০ মিটার। পদ্মার ওপর দিয়ে যাওয়া এই সঞ্চালন লাইন জাতীয় গ্রিডকে বিশেষ উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
পদ্মা সেতুর ২ কিলোমিটার ভাটি দিয়ে ঢাকা-খুলনা ব্যাকবোন ৪০০ কেভি এই সঞ্চালন লাইন দেশের বিদ্যুত চিত্র পাল্টে দিবে বলে জানান পিজিসিবি’র প্রধান প্রকৌশলী (সঞ্চালন-১) মোরশেদ আলম খান।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আমিনবাজার-মাওয়া-মোংলা পর্যন্ত ১৬৪ দশমিক ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিট লাইন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকারও বেশি।