তীব্র শীতে নাকাল উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের জনজীবন। ঘন কুয়াশার সঙ্গে বেড়েছে ঠাণ্ডা বাতাস। চলছে শৈত্যপ্রবাহও। গতকাল মঙ্গলবার জেলার তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৬.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, চলতি মৌসুমে যা এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন।
পঞ্চগড় জেলাজুড়ে সকাল থেকেই ঘন কুয়াশা ছিল। সকালে সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত অনেককেই সড়কের পাশে বসে আগুন পোহাতে দেখা গেছে। সকাল ১০টার পর দেখা মেলে সূর্যের। তবে সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই শীতের তীব্রতা বাড়ে। কয়েক দিন ধরে তীব্র শীতে বেশি বিপাকে পড়েছে জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ। কাজের জন্য বের হলেও ঠিকমতো কাজ মিলছে না তাদের।
এদিকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গতকাল সন্ধ্যায় আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়, আজ বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশের আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকবে। আর সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। নদীর আশপাশের এলাকায় মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এ ছাড়া সারা দেশে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। তবে আগামী চার দিন হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে।
গতকাল বাড়ির উঠানে বসে আগুন পোহাচ্ছিলেন তুলারডাঙ্গা এলাকার নাজিনা বেগম। তিনি বলেন, ‘কয় দিন হাতে কুহাকাপ (কঠিন) শীত পৈছে বাপু। কাপড় পইল্লেও হাড় পর্যন্ত ঠাণ্ডা লাগেছে। নদীর পাড়ত বাড়ি। ঘরবাড়ি ভাঙা। হু হু করি বাতাস ঢুকেছে ঘরখানত। দুই এগনা কাঁথা-কম্বল আছে। ওইলা দিয়া ঠাণ্ডা মানে না।’
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, বর্তমানে পঞ্চগড়ের ওপর দিয়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। কয়েক দিন আবহাওয়া এমনই থাকতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, পাবনা, নওগাঁ ও চুয়াডাঙ্গা জেলাসহ রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটা অব্যাহত থাকতে পারে। এ ছাড়া সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। তবে আগামী দুই দিন পর রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ কালের কণ্ঠকে বলেন, মূলত শীত আবার বাড়বে আগামী সোমবার বা মঙ্গলবার থেকে। শনিবার, রবিবার দেশের কোথাও হালকা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। তার পর থেকেই শীত আবার বাড়বে। এমনকি ওই সময় দেশে বৃষ্টি না হয়ে ভারতেও বৃষ্টি হতে পারে। তখন ওই বৃষ্টির প্রভাব দেশে পড়বে।