বিএনপির গণ-অবস্থান কর্মসূচির বিপরীতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সতর্ক অবস্থান নেয় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দলটির নেতারা বলেন, কোনো ধরনের বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হলে তা প্রতিরোধ করার পরিকল্পনা ছিল তাদের। বিএনপির নেতারা বারবারই আন্দোলন করে ব্যর্থ হয়েছে। আগামী দিনেও বিরোধীদের সম্ভাব্য বিশৃঙ্খলার চেষ্টা প্রতিহত করতে আওয়মী লীগের নেতাকর্মীরা প্রস্তুত থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিক্ষোভ-সমাবেশর মধ্য দিয়ে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থান নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয় আওয়ামী লীগ। সমাবেশগুলোতে অংশ নিয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের নেতারা বিএনপিকে মাঠে ছাড় না দেয়ার ঘোষণা দেন।রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বিএনপির কর্মসূচির দিকে লক্ষ্য রাখে আওয়ামী লীগ। সে জন্য ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে দলের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সকাল থেকে জড়ো হন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী।
সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির আন্দোলন ভুয়া। তাদেরকে বাংলার মাটিতে আর ক্ষমতায় আসতে দেওয়া যেতে পারে না। রাষ্ট্রকে মেরামত করবে? রাষ্ট্রকে আবার ক্ষমতা পেলে তারা ধ্বংস করবে। এই দেশের গণতন্ত্র বাঁচবে না, তারা ক্ষমতায় এলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাঁচবে না। তারা ক্ষমতায় এলে স্বাধীনতার আদর্শ বাঁচবে না। তারা ক্ষমতায় এলে গণতন্ত্রের বস্ত্রহানি ঘটবে। এই অপশক্তি জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক, সাম্প্রদায়িকতার পৃষ্ঠপোষক।বিএনপি-জামায়াতের ‘নৈরাজ্যের’ প্রতিবাদে শান্তি সমাবেশ করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। বিকেলে রাজধানীর চিড়িয়াখানা রোডের ঈদগাঁও মাঠে এ সমাবেশে হয়। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচির সঞ্চালনায় শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির সকল আন্দোলই ব্যর্থ হয়েছে। আগামী নির্বাচনেও তারা ব্যর্থ জনগণের কাছে ব্যর্থ হবে।
এদিকে বিএনপির কর্মসূচিকে ঘিরে উত্তর ও দক্ষিণে সমাবেশ করেছে আওয়ামী যুবলীগের নেতাকর্মীরা। রাজধানীর ফার্মগেট মোড়ে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এক সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের নেতারা সরকার পতনের ডাক দিয়ে তাদের নেতাকর্মীদের বারবার বিভ্রান্ত করছে। কিন্তু সরকার পতন এত সহজ না, কারণ এই সরকার জনগণের সরকার। বিএনপি যদি সরকার পতন করতে না পারে, তাহলে পল্টন কার্যালয়ের সামনে দলটির নেতাদের কান ধরে উঠবস করে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। দক্ষিণ যুবলীগও সমাবেশ করেছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে। সেখানেও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বিএনপির সড়যন্ত্র মোকাবেলার ঘোষণা দিয়েছেন।উত্তর আওয়ামী লীগের সমাবেশে তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, দয়া করে আর ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। ১০ ডিসেম্বর বিএনপির কোমর ভেঙেছে, আবার ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করলে পা ভেঙে যাবে।
এদিকে ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে বিএনপি ও সমমনা কয়েকটি দলের গণ-অবস্থান কর্মসূচির বিরুদ্ধে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘সতর্ক পাহারা’ বসায় ছাত্রলীগ। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস-নৈরাজ্য-দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র-সংবিধানবিরোধী অপতৎপরতার প্রতিবাদে তারা এ পাহারা বসায়। সেখানে অবস্থান নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন মহিলা কলেজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।