বগুড়ার ধুনটে যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় অভিযান চালিয়ে চার জনকে আটক করেছে নৌ পুলিশ। এ সময় বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত একটি বাল্কহেড জব্দ করা হয়েছে। শনিবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের শহড়াবাড়ি ঘাট এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
আটককৃতরা হলেন- ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের শহড়াবাড়ী গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে আলিফ (২০), একই গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে একরাম (২০), হেলাল মন্ডলের ছেলে লিমন মিয়া (২০) এবং শফি মন্ডলের ছেলে সবুজ মন্ডল (২৫)। নৌ পুলিশের টাঙ্গাইল অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার ইসমাইল মিঞা ও সিরাজগঞ্জ সদর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালনা করা হয়।জানা যায়, গত বছরের ২ অক্টোবর বগুড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের চৈবের মৌজার ৩৬ দশমিক ৯৩ একর সরকারি খাস জমি ছয় মাসের জন্য বালু মহাল হিসেবে ইজারা দেওয়া হয়। উপজেলা যুবলীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক বেলাল হোসেন ওই বালু মহালের ইজারাদার হিসেবে নিযুক্ত হন। কিন্তু বর্তমানে ইজারকৃত বালু মহালের নির্ধারিত স্থানে চর জেগে ওঠায় ইজারাদার বেলাল হোসেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও তীর সংরক্ষণ প্রকল্পসহ আশেপাশের ব্যক্তি মালিকানাধাঈন ফসলি জমির পাশে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছে।
এদিকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় ২০০২ সালে নদী ভাঙ্গন রক্ষায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বানিয়াজান স্পার এবং ২০১৬ সালে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নদীর ডান তীর সংরক্ষন প্রকল্প এখন হুমকির মুখে পড়েছে।ইজারাদার ও সাব-ইজারাদাররা যত্রতত্রভাবে বালু উত্তোলনের কারণে সরকারের কোটি টাকার সম্পদ যেভাবে হুমকির মুখে পড়েছে, তেমনি নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষষের বসতভিটা ও ফসলি জমি ফের ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে।অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে স্থানীয় এলাকাবাসী মানববন্ধনসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। এসব বিষয়ে সম্প্রতি কয়েকটি জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে নৌ পুলিশ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি গোচর হয়।
এ বিষয়ে নৌ পুলিশের টাঙ্গাইল অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার ইসমাইল মিঞা বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে ধুনটের যমুনা নদীতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে গিয়ে দেখতে পাই, যেখানে বালু মহাল ইজারা দেওয়া হয়েছে সেখান থেকে কোনো বালু উত্তোলন করা হচ্ছে না। তারা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাশে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। এ কারণে ওই স্থান থেকে চার জনকে আটক এবং একটি বাল্বহেড জব্দ করা হয়েছে।’এ ঘটনায় ধুনট থানায় মামলা দায়েরের পর রবিবার সকালে আটকদের বগুড়া আদালতে পাঠানো হয়েছে।