দক্ষিণ আফ্রিকা আর সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের ধাক্কায় শুরুর আগেই জৌলুস হারিয়ে বসে থাকা বিপিএলে তবু আলো ছড়াচ্ছিলেন পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা। কিন্তু ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) ধাক্কায় সেই আলোও এখন নিভে যাওয়ার উপক্রম। কারণ বিপিএল খেলতে বাংলাদেশে থাকা ক্রিকেটারদের ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেশে ফিরে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। ফ্র্যাঞ্চাইজিদের অনুরোধেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। ক্লান্তি-শ্রান্তি কাটিয়ে পিএসএলের অষ্টম আসর শুরুর আগে নিজ নিজ দলের খেলোয়াড়রা যাতে ঝরঝরে থাকেন, সে জন্যই ফ্র্যাঞ্চাইজিরা ক্রিকেটারদের ডেকে পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছিল বোর্ডকে।
অবশ্য বিপিএলের পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের কারোরই আসর শেষ করে যাওয়ার কথা ছিল না। পিসিবি তাঁদের অনাপত্তিপত্র (এনওসি) দিয়েছিল ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্তই। এখন নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী ছয় দিন আগেই ফিরে যেতে হচ্ছে তাঁদের। অর্থাৎ পিএসএল শুরুর ১১ দিন আগে। বিপিএলের সিলেট পর্ব শেষ হতে না হতেই পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা চলে গেলে আক্রান্ত হওয়ার কথা সব দলেরই। সাত ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রতিটিতেই অন্তত তিনজন করে পাকিস্তানি আছেন। সর্বোচ্চ পাঁচজন আছেন বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসে।অবশ্য এ রকম যে হতে পারে, সে অনুমানও ছিল কোনো কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির। এই যেমন ফরচুন বরিশালই। দলটির হেড কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম গত সন্ধ্যায় সিলেটের ফ্লাইট ধরার আগে বলে গেলেন, ‘কয়েক দিন ধরেই শুনছিলাম যে এই নির্দেশনাটি আসতে পারে।’ সেটি এসে যাওয়ার ফলে সম্ভাব্য ক্ষতি মেনে নেওয়ার মানসিক প্রস্তুতিও যেন নিয়ে রেখেছেন, ‘এই সিদ্ধান্তে সব দলেরই কমবেশি সমস্যা হবে। কারণ এমনিতেও খুব বেশি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারকে আমরা এই আসরে পাইনি। পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা চলে গেলে আমাদের শক্তি কমবে নিশ্চিতভাবেই। তা ছাড়া বারবার খেলোয়াড় পরিবর্তন করা কোনো দলের জন্যই ভালো নয়।’ বিপিএলের নবম আসরে ব্যাট হাতে নিয়মিতই ঝড় তুলতে থাকা ইফতিখার আহমেদের পাশাপাশি বরিশালকে ছাড়তে হবে হায়দার আলী ও মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়রকে।
যদিও পিসিবির এই সিদ্ধান্তের পরও বিপিএলের কোনো কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি দাবি করছে, তাদের পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের পিসিবির দেওয়া আগের অনাপত্তিপত্র অনুযায়ী ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্তই পাওয়া যাবে। নিজ নিজ ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে কথা বলে বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি ক্রিকেটার নাকি বিপিএলের আরো কিছু ম্যাচ খেলে যাওয়ার ব্যাপারটি নিশ্চিতও করেছেন। সেই হিসাবে রংপুর রাইডার্সের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা কম। দলটির নির্বাহী পরিচালক শানিয়ান তানিম বলছিলেন সেটিই, ‘আমাদের পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা থাকছে। ওরা যাবে ৯ ফেব্রুয়ারি। পিএসএলে ওরা যেসব ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলবে, তাদের সঙ্গে কথা বলে এরই মধ্যে আমাদের নিশ্চিতও করেছে। কাজেই আরো কিছুদিন আমরা ওদের পাচ্ছি।’ তাই শোয়েব মালিক, হারিস রউফ ও মোহাম্মদ নওয়াজকে এখনই হারাচ্ছে না ২০১৭-র চ্যাম্পিয়নরা।একই রকম তৎপরতা থাকার কথা অন্যান্য দলের পাকিস্তানি ক্রিকেটারদেরও। কারণ আগেভাগে চলে যেতে হলে বিপিএল থেকে আয়ের অঙ্কেও তা প্রভাব ফেলবে। তবে রংপুরের মতো এখনই নিশ্চিত করে বলার মতো অবস্থায় বোধ হয় নেই আর কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি। মোহাম্মদ রিজওয়ান, হাসান আলী, খুশদিল শাহ, আবরার আহমেদ এবং নাসিম শাহকে নিয়ে বিপাক থেকে কুমিল্লাও বেরিয়ে আসতে পেরেছে কি না, সে খোঁজ নিতে গিয়ে শোনা দলটির ম্যানেজার আহসানউল্লাহ হাসানের বক্তব্য বরং আরো বিস্ময় ছড়াতে বাধ্য, ‘আমাদের পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বললাম। এ রকম কিছু (পিসিবির নির্দেশনা) দিয়েছে কি না, ওরাও সে বিষয়ে নিশ্চিত নয়।’
সম্প্রতি প্রকাশিত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক মূল্য গত বছর রেকর্ড পরিমাণ ছিল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বের প্রায় সব দেশেই মূল্যস্ফীতি রেকর্ড উচ্চতায় ওঠে। যুদ্ধের কারণে কৃষ্ণ সাগরের সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার কারণে খাদ্যের দাম বাড়তে থাকে।এফএও বলেছে, গম ও ভুট্টার দাম গত বছর রেকর্ড উচ্চে পৌঁছেছে, যদিও ডিসেম্বরে অন্যান্য শস্যের দামের সঙ্গে এগুলোর দাম কমেছে। ২০২২ সালে এফএওর খাদ্যমূল্য সূচকের গড় মান ছিল ১৪৩.৭ পয়েন্ট। ১৯৯০ সালে এফএও মূল্য সূচক প্রবর্তন করার পর যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। সূচক অনুযায়ী ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে মূল্যসূচকের মান ১৮ পয়েন্ট বেড়েছে। এর ফলে ২০২২ সালে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ১৪.৩ শতাংশ বেড়েছিল।বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈশ্বিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২০২৩ সালে হবে ১.৭ শতাংশ এবং ২০২৪ সালে হবে ২.৭ শতাংশ।