বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৪১ পূর্বাহ্ন

এয়ারলাইন্সের ২৩ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক

প্রতিনিধির / ৪৮ বার
আপডেট : সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩
এয়ারলাইন্সের ২৩ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক
এয়ারলাইন্সের ২৩ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক

মিশর থেকে বোয়িংয়ের দুটি উড়োজাহাজ লিজ নেওয়া ও রি-ডেলিভারি পর্যন্ত ১ হাজার ১৬১ কোটি টাকা ক্ষতি সাধনের অভিযোগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ২৩ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার অনুমোদন দিয়েছে দুদক।সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সচিব মাহবুব হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে শিগগির মামলাটি দায়ের করবে বলে জানা গেছে।

 

দুদক অনুমোদিত মামলার আসামিরা হলেন- বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের ফ্লাইট অপারেশনের সাবেক পরিচালক ক্যাপ্টেন ইনরাত আহমেদ, সাবেক ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল আলম সিদ্দিক (এস এ সিদ্দিক), মহা ব্যবস্থাপক (মুদ্রণও প্রকাশনা) আবদুর রহমান ফারুকী, সার্ভিসেস অ্যান্ড অডিটের সাবেক প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার শহীদ উদ্দিন মোহাম্মদ হানিফ, সাবেক প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার (এমসিসিঅ্যান্ডএলএম) দেবেশ চৌধুরী, ক্যাবের কনসালটেন্ট গোলাম সারওয়ার ও ক্যাবের প্রকৌশলী কর্মকর্তা মো. সাদেকুল ইসলাম ভূঞা, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ডিজিএম কামাল উদ্দিন আহমেদ, প্রধান প্রকৌশলী এ আর এম কায়সার জামান, শরীফ রুহুল কুদ্দুস (প্রিন্সিপাল সিস্টেম ইঞ্জি (স্ট্রাকচার), ক্যাপ্টেন মো. নজরুল ইসলাম শামিম, উপ মহাব্যবস্থাপক (এওসি, এসিপি) জিয়া আহমেদ, চিফ পার্সার (অবসরপ্রাপ্ত) কাজী মোসাদ্দেক আলী, ফ্লাইটপার্সার মো. শহিদুল্লাহ কায়সার ডিউক, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. আজাদ রহমান, সাবেক ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল কাদির, সাবেক উপ-প্রধান প্রকৌশলী মো. শাহজাহান, সাবেক ইঞ্জিনিয়ার অফিসার মো. জাহিদ হোসেন, সহকারী ব্যবস্থাপক মো. ফজলুল হক বসুনিয়, ব্যবস্থাপক মো. আতাউর রহমান, চিফ পার্সার মোহাম্মদ সাজ্জাদ উল হক (শাহিন) , ফ্লাইট পার্সার শাহনাজ বেগম ঝর্ণা এবং সাবেক চিফ ইঞ্জিনিয়ার গাজী মাহমুদ ইকবাল।

জানা গেছে, ২০১৪ সালে পাঁচ বছরের চুক্তিতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর উড়োজাহাজ দুটি লিজ নেয় বিমান। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফ্লাইট পরিচালনার পর একটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। দেড় বছরের মাথায় বাকি ইঞ্জিনটিও নষ্ট হয়।উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে আবারও ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। পরে ভাড়ায় আনা সেই ইঞ্জিনও নষ্ট হয়ে যায়। এটি মেরামত করতে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়। তবে কোনো সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। সে কারণে ইজিপ্ট এয়ার এবং মেরামতকারী কোম্পানি- উভয়কেই অর্থ দিতে হয়েছে বিমানের। দুটি উড়োজাহাজের জন্য প্রতি মাসে ১ হাজার ১৬১ কোটি কোটি টাকা করে ভর্তুকি দিতে হয় রাষ্ট্রের।

এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিষয়টি দুদকে পাঠানোর সুপারিশ করে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। বিষয়টি দুদকে আসার পর অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়। এরপর দুই সদস্যের একটি অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়।মিশর থেকে বোয়িংয়ের দুটি উড়োজাহাজ লিজ সংক্রান্ত ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের প্রধান কার্যালয়ে গত বছরের ১ জুন অভিযান পরিচালনা করে দুদক। সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিনের নেতৃত্ব ওই অভিযান চালানো হয়। মাঝে বদলিজনিত কারণে দুদক টিম পুনর্গঠন করা হয়। বর্তমান উপ-পরিচালক আনোয়ারুল হকের নেতৃত্ব টিম গঠিত হয়।

সেসময় অভিযানের বিষয়ে দুদকের জনসংযোগ শাখার উপ-পরিচালক মুহাম্মদ আরিফ সাদেক জানান, মূলত তারা অনিয়ম সংক্রান্ত নথিপত্র সংগ্রহ করতেই সেখানে গেছেন। এটা অভিযান নয়। অনুসন্ধানের অংশ হিসেবেই দুদক টিম সেখানে গেছে। বাংলাদেশ বিমানের কাছে ১৩ ধরনের নথিপত্রও তলব করে দুদক।২০২২ সালের ২৪ মার্চ সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ওই অনিয়মের অভিযোগ দুদকের মাধ্যমে তদন্তের জন্য কার্যবিবরণীর অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে দুটি মিশরীয় এয়ারক্র্যাফট লিজ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগে গঠিত সংসদীয় সাব কমিটির প্রতিবেদন, বিশেষ করে চুক্তিপত্র প্রণয়ন এবং যান্ত্রিক পরীক্ষা-নিরীক্ষাকরণ টিমের কার্যক্রম ত্রুটিপূর্ণ থাকায় স্থায়ী কমিটির সুপারিশসহ এসব বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে দুদকে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ