অনিয়ম করে কেউ ভোটে জয়ী হলে সেই ফলাফলের গেজেট প্রকাশ হওয়ার পরও তা বাতিলের ক্ষমতা পেতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) ভোট বাতিলের ক্ষমতাসংক্রান্ত ঐ সংশোধনী প্রস্তাবে আইন মন্ত্রণালয়ের সায় মিলেছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচনের গেজেট হওয়ার পরে অনিয়ম হলে আরপিওতে কোনো কিছু করার ক্ষমতা নাই জানিয়ে এই কমিশনার বলেন, ‘বন্ধ করা, বা কিছু করার জন্যই সংশোধনীর প্রস্তাবটা আমরা দিয়েছিলাম। ফলাফল ঘোষণার পরেও যেন ক্ষমতাটা কমিশনের হাতে থাকে। কিন্তু উনারা বললেন যে, ৯১ ধারা দিয়েই কাভার হচ্ছে। ৯১ দিয়ে আসলে কাভার হয় না, আমরা যতটুকু জানি।’ময়মনসিংহের দুর্গাপুরের একটি ঘটনা টেনে এই কমিশনার বলেন, ‘আমি যোগ দেওয়ার কিছুদিন পরেই একটা ফাইল এলো। এতে দেখলাম যে ময়মনসিংহের দুর্গাপুরে একটা নির্বাচনে বোধহয় ব্যালট ছিনতাই হয়ে গিয়েছিল। তখন কমিশন গেজেট হওয়ার পর ভোট বাতিল করেছিল। কিন্তু হাইকোর্ট বলে দিলেন, যে গেজেট হওয়ার পর কমিশনের করার কিছু থাকে না। আমরা এজন্য কমিশনের হাতে ক্ষমতা যেন থাকে এই প্রস্তাব করেছিলাম। উনারা জানতে চাইলে আমরা এই ঘটনাটির ব্যাখ্যা দিয়েছিলাম।’
রাশেদা সুলতানা আরো বলেন, ‘গেজেট হওয়ার পরে তো ট্রাইব্যুনাল। গেজেট হওয়ার আগে তো কেউ ট্রাইব্যুনালে যেতে পারবেন না। যখন এক জন হারবে, তিনি আইনের আশ্রয় নিতেই পারেন, উনার রাইট। তখন কোর্ট কমিশনের কাছে ব্যালট চাইল, এটি তো উদ্ধার হয় নাই। কখন কার কাছে চলে গেছে। তো যেটা উদ্ধার হয় নাই, সেটা কীভাবে কোর্টকে দেবে। এক্ষেত্রে তো কমিশনের কিছু করার থাকবে না। এই রকম পরিস্থিতি যদি সামনে আসে কমিশনের হাতে অবশ্যই একটা ক্ষমতা থাকা উচিত, যে ঐ নির্বাচনটা বন্ধ করে দেওয়া যায়। কারণ যিনি ডিপ্রাইভড হলেন বলে মনে করেন, তার তো ক্ষতিপূরণের জায়গা নেই। এই কারণে আমরা সংশোধন আনার প্রয়োজন মনে করেছি।’আইন মন্ত্রণালয়ের যারা বৈঠকে ছিলেন তারা নির্বাচন কমিশনের যুক্তিখণ্ডনে খুশি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা বলছেন আর কোনো অসুবিধা নেই। এখন কেবিনেটে যাবে। পাশ হবে সংসদে। এটাই উনারা পাঠাবেন। ভেটিংয়ে আর বাদ যাচ্ছে না। কেবিনেট থেকে সংসদে যাবে। উনারা যদি মনে করেন কোনটা রাখব, কোনটা রাখব না, এতে তো কারোরই কিছু বলার নাই। এটা আইন মন্ত্রণালয়েরও প্র্যাকটিক্যালি কিছু করার থাকবে না।’
দু-একটা জায়গায় আরো চিন্তাভাবনা করার জন্য আইন মন্ত্রণালয় বলেছিল জানিয়ে এই কমিশনার বলেন, ‘তার মধ্যে একটা ছিল আমরা যেটা চাচ্ছিলাম ইভিএমে আঙুলের ছাপ যে মেলে না, এতে ১ শতাংশ ভোটারকে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার আঙুলের ছাপ ব্যবহারের বিষয়টি নির্ধারিত করে দিতে। এটা আইনে চলে আসুক যে এক শতাংশের বেশি অ্যালাউ করব না। উনারা (আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা) জানালেন যে এটা বিধিমালা দিয়ে কাভার করা সম্ভব। এই একটা পয়েন্টে উনারা আপত্তি করেছিলেন।’