আলজারি জোসেফের অফ স্টাম্পের বাইরের বল পয়েন্ট দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠিয়েই হুঙ্কার দিলেন এইডেন মারক্রাম। টেস্ট ক্রিকেটে ফেরার ম্যাচটি যে দারুণ এক সেঞ্চুরিতে রাঙালেন তিনি। সেটাও আবার নিজের ঘরের মাঠ সেঞ্চুরিয়নে। কার্যকর ফিফটি করলেন ডিন এলগার। বড় সংগ্রহের শক্ত ভিত পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারলেন না দক্ষিণ আফ্রিকার বাকি ব্যাটসম্যানরা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে ৮ উইকেটে ৩১৪ রান নিয়ে মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) প্রথম দিন শেষ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। মারক্রাম ও এলগার ছাড়া দলটির হয়ে ৩০ রানও করতে পারেননি আর কেউ। সবশেষ অস্ট্রেলিয়া সিরিজ থেকে বাদ পড়েছিলেন মারক্রাম। সাদা পোশাকে ফিরেই ১১৫ রান করেন এই ওপেনার। ১৭৪ বলের ইনিংসটিতে মারেন ১৮টি চার। টেস্টে এটি তার ষষ্ঠ শতক। দুই বছর পর তিন অঙ্কের স্বাদ পেলেন তিনি। সবশেষ সেঞ্চুরি করেছিলেন ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে, পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিণ্ডিতে।মারক্রামের সঙ্গে ১৪১ রানের উদ্বোধনী জুটিতে ১১ চারে ৭১ রান করেন আরেক ওপেনার এলগার। সুপারসস্পোর্ট পার্কের হালকা ঘাসের ছোঁয়া থাকা পিচে টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা শুরুতেই হারাতে পারত উইকেট। কিন্তু নবম ওভারে তৃতীয় স্লিপে এলগারের সহজ ক্যাচ ফেলেন রোস্টন চেইস।
কাইল মেয়ার্সের বলে ১০ রানে জীবন পাওয়া এলগার স্বাচ্ছন্দ্য ছিলেন না পরেও। তবে শেষ পর্যন্ত প্রথম সেশন কাটিয়ে দেওয়া এই ব্যাটসম্যান ক্যারিয়ারের ২৩তম টেস্ট ফিফটি স্পর্শ করেন ৮৪ বলে। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলে যাওয়া মারক্রামের পঞ্চাশ আসে লাঞ্চ বিরতির পর, ৯০ বলে।জমে যাওয়া এই উদ্বোধনী জুটিতে ফাটল ধরান জোসেফ। এই পেসারের শর্ট বলে আপার কাট শট খেলে বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন এলগার। অভিষিক্ত টনি ডি জরজিকে নিয়ে দ্বিতীয় সেশনের বাকিটা কাটিয়ে দেন মারক্রাম। দারুণ সব শটে রান বাড়াতে থাকা এই ব্যাটসম্যান চা-বিরতিতে যান ৯৭ রান নিয়ে। বিরতির পর দ্বিতীয় ওভারে জোসেফকে ওই চার, আর মারক্রামের তিন অঙ্কের উষ্ণ ছোঁয়া পাওয়ার উল্লাস। ব্যাট-হেলমেট উঁচিয়ে ধরে মুহূর্তটি উদযাপন করেন তিনি।
জোসেফের পরের ওভারে তিন বলের মধ্যে দুই উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। রান আউটে কাটা পড়েন ডি জরজি (৪ চারে )। এলবিডব্লিউ হয়ে অধিনায়ক হিসেবে টেস্ট অভিষেকেই শূন্য রানের তেতো স্বাদ পান টেম্বা বাভুমা। মারক্রামকেও বেশিক্ষণ টিকতে দেননি জোসেফ। দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে স্টাম্প এলোমেলো করে দিয়ে এই ব্যাটসম্যানের প্রতিরোধ ভাঙেন তিনি।নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোর এই ধারা চলতে থাকে পরেও। দলের ফেরা কিগার পিটারসেন, হাইনরিখ ক্লসেন, সেনুরান মুথুসামি করতে পারেননি কিছু। নবম উইকেটে মার্কো ইয়ানসেন ও অভিষিক্ত জেরল্ড কুটসিয়ার অবিচ্ছিন্ন ১৪ রানের জুটিতে দিন শেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৮২ ওভারে ৩১৪/৮ (এলগার ৭১, মারক্রাম ১১৫, ডি জরজি ২৮, বাভুমা ০, পিটারসেন ১৪, ক্লসেন ২০, মুথুসামি ৩, ইয়ানসেন ১৭*, রাবাদা ৮, কুটসিয়া ১১*; রোচ ১৫-১-৬৫-১, জোসেফ ১৬-০-৬০-৩, মেয়ার্স ১০-২-২৩-১, গ্যাব্রিয়েল ১২-১-৪৯-১, হোল্ডার ১৪-১-৬৪-১, চেইস ১৪-০-৩৩-০, ব্ল্যাকউড ১-০-৪-০)।