৩৬ বছর পর আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতেছে। ১৯৭৮, ১৯৮৬-র পর ২০২২। নীল-সাদা ‘লা আলবিসেলেস্তে’দের জার্সিতে দুই তারার বদলে এখন তিন তারা শোভা পায়, জার্সিতে তাকালে চোখ আটকে যায় থ্রি স্টারের ওপরে। লিওনেল মেসির ভুবনজয়ী দলের অন্যতম যোদ্ধা ছিলেন গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। মেসি যাকে ভালোবেসে দিবু বলে ডাকেন। কাতারে অসাধারণ সব সেভ দিয়ে আর্জেন্টিনায় নায়কের হাতে উঠেছে সোনালি দস্তানা। সেই এমি মার্টিনেজকেই এবার ফিফা বর্ষসেরা গোলকিপারের সম্মানে ভূষিত করেছে প্যারিসে। এমিই হয়েছেন ফিফা দ্য বেস্ট।
ফিফা দ্য বেস্ট পুরস্কার মঞ্চে এমি যা বলেছেন, তা ভাইরাল হয়ে গেছে। জানতে চাওয়া হয়েছিল, তার আইডল কারা। শুনে এমি বলেন, ‘আমাকে সব সময় জিজ্ঞাসা করা হতো যে, কে আমার আইডল, আমি ছোটবেলায় কাদের দেখে বড় হয়েছি।’ এ কথা বলতে বলতেই এমির চোখে জল চলে আসে।তিনি বলেন, ‘আমার মা ৮-৯ ঘণ্টা বাড়ি পরিষ্কার করত, বাবা কাজ করত। ওরাই তো আমার আইডল।’ জোকারের কথা শুনে দর্শকদের চোখে জল চলে এসেছিল ঐ রাতে। এমি শুধুই গোলকিপার নন, তিনি একজন চরিত্রও বটে। কখনো হাসেন, কখনো তাতান, আবার কখনো কেঁদে ফেলেন! অনেকেই তাকে ফুটবলের জোকার বলেন এহেন চরিত্রের জন্য।
আর্জেন্টিনাকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করার নেপথ্যে মেসির চেয়ে কোনো অংশে কম করেননি মার্টিনেজ। মেসিকে যেভাবে আগলে রাখেন দর্শক, তেমনি মার্টিনেজের পারফরম্যান্সও সমানভাবে উল্লেখ করেন। টুর্নামেন্টের সেরা গোলকিপার হওয়ার জন্যই তার হাতে উঠেছিল গোল্ডেন গ্লাভস। দুরন্ত মেজাজে অবধারিত সব গোল রুখে, ট্যাঙ্গো নাচ করে গ্যালারি মাতিয়েছেন মার্টিনেজ।সেই মার্টিনেজ তীব্র বিতর্কে জড়ান, ফাইনালে পুরস্কার মঞ্চে। তিনি গোল্ডেন গ্লাভস হাতে নিয়ে অত্যন্ত অশালীন ভঙ্গি করেছিলেন ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে। মার্টিনেজ এক রেডিও সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘ফরাসিরা আমাকে টিটকিরি দিয়েছিল। তাই আমি ঐ অঙ্গভঙ্গি করেছিলাম। আমার কাছে অহংকারের কোনো জায়গা নেই। আমরা অনেক সহ্য করেছি।’ মার্টিনেজের সেই অঙ্গভঙ্গি পৃথিবী জুড়ে সমালোচনা হলেও অনেক সেলিব্রিটিও সেই একই অঙ্গভঙ্গি করে ভাইরাল হয়েছেন।