মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:৩৬ অপরাহ্ন

পাইকারি থেকে খুচরায় এলেই সবজির দাম দ্বিগুণ

প্রতিনিধির / ৫১ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৩
পাইকারি থেকে খুচরায় এলেই সবজির দাম দ্বিগুণ
পাইকারি থেকে খুচরায় এলেই সবজির দাম দ্বিগুণ

গত রমজান থেকে এবার দেশে প্রায় সব খাদ্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এরমধ্যে রোজায় সাধারণত যে সবজির চাহিদা থাকে তাও হাতের নাগালে নেই ভোক্তাদের। দেখা গেছে, এই সবজিগুলো পাইকারি থেকে খুচরায় এলেই দেড় থেকে দ্বিগুণ দাম বেড়ে যায়।বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) ঢাকার কারওয়ান বাজার এবং হাতিরপুল কাঁচাবাজার ও রাজধানীর বিজয় সরণি এলাকার কলমিলতা বাজার ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র।

 

এরমধ্যে কারওয়ান বাজারে পাইকারিতে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ৬০ টাকা, গোল বেগুণ ৪০-৫০ টাকা, লম্বা বেগুণ ৬০-৭০ টাকা, ছোট লেবু প্রতি হালি ২০-২৫ টাকা ও ধনেপাতা প্রতি কেজি ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছিলো।কিন্তু খুচরা বাজারে এসেই এসব সবজির দাম বেড়ে যায় দ্বিগুণ। হাতিরপুল কাঁচাবাজার ও কলমিলতা বাজারে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার খুচরায় প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ১০০-১২০ টাকা, গোল বেগুণ ৬০-৮০ টাকা, লম্বা বেগুণ ৮০-১০০ টাকা, ছোট লেবু প্রতি হালি ৪০-৪৫ টাকা ও ধনেপাতা প্রতি কেজি ১২০-১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিলো।

একই অবস্থা কারওয়ান বাজারেও রয়েছে। সেখানে পাইকারি আড়ত থেকে ১০-২০ মিটার দূরে খুচরা সবজির বাজার। এই দূরত্বে পরিবহন খরচ নেই বললেই চলে। তবে সেখানেও সবজির দাম কেজিতে বেড়ে যায় ১০-২০ টাকা।এদিকে কারওয়ান বাজারে যখন রাতে সবজিগুলো আসে তখন আড়তে আরও কমদামে কেনাবেচা চলে। তিন স্তরের এসব বাজারের তফাৎ শুধু একটাই। তা হলো, পাইকারি বাজার থেকে সর্বনিম্ন পাঁচ কেজি কিনতে হবে। অন্যদিকে খুচরা বাজারে নিজের চাহিদামতো কেনা যায়।

রমজানে সবজির মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে বেগুনের। কারণ এ সবজি দিয়ে তৈরি হয় বেগুনি। কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, পাইকারিতে প্রতি পাঁচ কেজি হিসাবে নিলে কেজিপ্রতি গোল বেগুনের দাম ৩৫-৪০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। অথচ খুচরার কোথাও বেগুনের দাম ৬০ টাকার নিচে নেই।সবজির দাম এত বেশি কেন জানতে চাইলে কলমিলতা বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা আসাদুল্লা বলেন, দোকানের ভাড়া, পরিবহন খরচ আছে। আমরা ২-৩ জন লোক কাজ করি। মূলধন খাটাতে হয়। তাই এইটুকু মুনাফা করতেই হয়।

তিনি আরও বলেন, পাইকারি থেকে খুচরায় পণ্যের ঘাটতি রয়েছে। বেছে বেছে অনেক খারাপ পণ্য আলাদা করে কম দামে বিক্রি করতে হয়। সেটা কিন্তু হিসাবে নিতে হবে।আসাদুল্লা বলেন, আড়তদারিতেই আমাদের কেজিতে তিন থেকে চার টাকা খরচ পড়ে যায়। এরপর কাঁচা পণ্য ১০ শতাংশ নষ্ট হিসেবে ধরতে হয়। আবার অনেক মাল (সবজি) বেচাই হয় না। সেগুলো দিতে হয় ফেলে।

এই ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সবাই সীমিত লাভ রেখে বিক্রি করে। আমাদের জায়গায় এসে দেখেন। লোকসান দিয়ে অনেক দোকান বন্ধ হয়ে গেছে গত কয়েক মাসে।হাতিরপুলের আরেক খুচরা সবজি ব্যবসায়ী কুদ্দুস মিয়া বলেন, বাইর থেকে যতটা লাভ দেখা যায়, আসলে ততটা হয় না। দোকান ভাড়া এখন বেড়েছে। ১০ হাজার টাকার নিচে পাওয়া যায় না কর্মচারী। অদৃশ্য কিছু খরচ আছে, সেটা সবাই জানে। হিজরাও পর্যন্ত এসে চাঁদা নেয়।

এদিকে পাইকারি সবজি বিক্রেতা আবুল কালাম বলেন, সবজির বাজার প্রতিনিয়তই উঠানামা করে। বিভিন্ন কারণে স্থানভেদে তারতম্য দেখা যায় সবজির দামে। এই সুযোগে খুচরা বিক্রেতারা বেশি দাম নেয়। এ প্রবণতা তাদের বেশি।তিনি বলেন, আড়ত থেকে খুচরা বাজার পর্যন্ত কয়েক হাত ঘুরে সবজি বেচাকেনার কারণে পাইকারি ও খুচরাপর্যায়ে দামের অস্বাভাবিক তারতম্য ঘটে। আবার উপলক্ষ্য পেলে নানা ছুতায় বাড়ানো হয় সবজির দাম। এ কারণে ভোগান্তিতে পড়েন ভোক্তারা। দাম কম পান উৎপাদকরা, লাভবান হন মূলত মধ্যস্বত্বভোগীরা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ