শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১২:৫০ অপরাহ্ন

যমুনার পাড় রক্ষায় অস্বাভাবিক ব্যয়ের ছক

প্রতিনিধির / ৫৪ বার
আপডেট : সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০২৩
যমুনার পাড় রক্ষায় অস্বাভাবিক ব্যয়ের ছক
যমুনার পাড় রক্ষায় অস্বাভাবিক ব্যয়ের ছক

যমুনা নদীর পাড় রক্ষা সংক্রান্ত একটি প্রকল্পে অস্বাভাবিক অর্থ ব্যয়ের প্রাক্কলনের তথ্য পাওয়া গেছে। প্রকল্পের পরামর্শক ফি বাবদ ধরা হয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা, যা অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। একই সঙ্গে রাখা হয়েছে অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্যয়ের খাত। এমনকি গ্রোয়েন নির্মাণে একই ধরনের অন্য প্রকল্পের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি খরচ প্রাক্কলন করা হয়েছে। যদিও প্রকল্পটি নেওয়া হচ্ছে নতুন একটি প্রযুক্তির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হিসেবে।

এ অবস্থায় প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার আগেই নানা প্রশ্ন উঠেছে। যে কারণে বিভিন্ন ব্যয় বন্ধ অথবা কমানোর সুপারিশ করেছে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি)। ‘যমুনা রিভার সাসটেইনেবল ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট-১ রিভারব্যাংক প্রটেকশন অ্যান্ড রিভারব্যাংক ট্রেনিং (কম্পোনেন্ট-১) অ্যান্ড ডিজাস্টার রিস্ক ফাইন্যান্সিং (কম্পোনেন্ট-৩)’ শীর্ষক এ প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এতে মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ১০৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে জিওবি (সরকারের তহবিল) ২১৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। এছাড়া প্রকল্প সহায়তা বাবদ মিলবে ৮৯৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

জানা গেছে, প্রকল্পের ব্যয় প্রাক্কলনে ভিলেজ প্ল্যাটফর্ম তৈরি বাবদ ৩৯ কোটি ১০ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। এছাড়াও জিও ব্যাগ দিয়ে প্ল্যাটফর্মটি সুরক্ষার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা। অথচ প্রকল্পের মূল্য উদ্দেশ্যের সঙ্গে এই দুই খাতের কোনোটারই কোনো সম্পর্ক নেই। আবার প্রয়োজন না থাকলেও পরামর্শক ফি বাবদ রাখা হয়েছে ২১৯ কোটি টাকা। এছাড়াও প্রকল্প এলাকায় আন্তর্জাতিক নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট নির্মাণ বাবদ ২৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ৪ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়ছে। যদিও প্রকল্পের উদ্দেশ্যের সঙ্গে এ খাতও সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।এ ধরনের বেশকিছু অস্বাভাবিক ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যয় প্রাক্কলন করায় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ প্রকল্প নিয়ে অনুষ্ঠিত পিইসি সভার সদস্যরাই এমন প্রশ্ন তুলেছেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পিইসি সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লি প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য এ কে এম ফজলুল হক। সভায় প্রকল্পের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ড. রবীন কুমার বিশ্বাস।

সভায় জানানো হয়, ২০১৯ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) ২৪০ মিলিয়ন (২৪ কোটি) টাকা ব্যয় সম্বলিত একটি প্রকল্পের পিডিপিপি করে। পরে তা পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে দাখিল করে বাপাউবো। প্রকল্পের নাম ছিল- ‘সাসটেইনেবল ম্যানেজমেন্ট অব ব্রহ্মপুত্র-যমুনা রিভার ইনক্লুডিং চ্যানেলাইজেশন অ্যান্ড রিভারব্যাংক স্ট্যাবিলাইজেশন’।এরপর ২০২০ সালের জুনে এ প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য বিশ্বব্যাংককে চিঠি দেয় আর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ। পরের মাস জুলাইয়ে প্রকল্পটিতে অর্থায়নের জন্য এডিবিকে অনুরোধ করা হয়। তবে প্রকল্পে নেভিগেশন কম্পোনেন্ট অন্তর্ভুক্ত থাকায় ওই বছরের আগস্টে নতুন করে পিডিপিপি গঠনের পরামর্শ দেয় বিশ্বব্যাংক। প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন পর্যায়ে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়কে অন্তর্ভুক্ত করে পিডিপিপি গঠনের পরামর্শ দেয় বিশ্বব্যাংক।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্ত পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়। পরের মাস নভেম্বরে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্যর সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় প্রকল্পের অর্থায়ন বিশেষ করে সমীক্ষা সম্পন্নের বিষয়ে উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে যোগাযোগের দায়িত্ব পায় ইআরডি।এরপর ২০২০ সালের ডিসেম্বরে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সভাপতিত্বে প্রকল্প প্রণয়ন সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিশ্বব্যাংক কর্তৃক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হয়। তাদের সুপারিশের আলোকে যমুনা নদীর পাড় রক্ষা সংক্রান্ত প্রকল্পের ডিপিপি প্রণয়ন করা হয়েছে।

সভায় কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লি প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রধান মো. ছায়েদুজ্জামান বলেন, পদ্মা ও যমুনা নদীতে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব প্রযুক্তিতে অসংখ্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এখন বলা হচ্ছে এ প্রকল্পে নতুন প্রযুক্তি টপ ব্লকড পারমিয়েবল গ্রোয়েনের (টিবিপিজি) মাধ্যমে নদীর প্রশস্ততা কমিয়ে আনা হবে। যথাযথ স্টাডি ছাড়া ঋণের টাকায় এমন একটি পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রয়োজন কতটা তা স্পষ্ট নয়। পৃথিবীর কোথাও এ ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিত্রে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি অতিরিক্ত সচিব এস এম রেজাউল মোস্তফা কামাল বলেন, গাইবান্ধার কামারখালীতে যমুনা নদীর ওপর ৫টি পারমিয়েবল গ্রোয়েন করা হয়েছে। যমুনা নদীতে বাস্তবায়িত পারমিয়েবল গ্রোয়েনের ফলাফল সন্তোষজনক। যেহেতু যমুনা নদীর প্রশস্ততা প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেহেতু তা কমানোর জন্য এ ধরনের প্রযুক্তি বাস্তবায়ন প্রয়োজন। প্রাথমিকভাবে ৩টি স্থানে গ্রোয়েন নির্মাণের প্রস্তাব করেছিল বিশ্বব্যাংক। তবে তা কমিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে নদীর দুই পাড়ে দুইটি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে গ্রোয়েন নির্মাণের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

অপরদিকে কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লি প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপ-প্রধান (সেচ) মো. সামছুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত (কম্পোনেন্ট-১) প্রকল্পের প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই ওয়ার্কশপে প্রফেসর ড. আইনুন নিশাত ‘মাল্টি ক্রাইটেরিয়া অ্যানালাইসিস ফর্মুলেশন’র বিষয়ে তার উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি নদী সংকুচিত করার বিরোধিতা করেন। তার অভিমত, টিবিপিজি নির্মাণ এই পকল্পের জন্য উপযুক্ত নয়। তিনি নদীকে সংকুচিত করার ধারণার বিরোধিতা করেন। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, প্রকল্পের স্টাডিতে টার্ম অব রেফারেন্স ত্রুটিপূর্ণ। এ স্টাডির জন্য প্লাবন সমভূমিকে বিবেচনা করতে হবে।কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লি প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম-প্রধান (সেচ) মহা. এনামূল হক বলেন, ডিপিপি-তে বলা হয়েছে টিবিপিজির জন্য প্রস্তাবিত স্থানে কোনো রিসার্কুলেটিং ফ্লো তৈরি হবে না। অথচ টিবিপিজি নির্মাণের স্থানের নদীগর্ভে ৫ স্তর বিশিষ্ট জিও ব্যাগ ব্যবহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে প্রতীয়মান হয় যথাযথ স্টাডি সম্পন্ন না করেই গ্রোয়েনের ডিজাইন করা হয়েছে।

এদিকে, প্রকল্পের মূল্য উদ্দেশ্যের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকলেও ভিলেজ প্ল্যাটফর্ম তেরি বাবদ ৩৯ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। পাশাপাশি জিও ব্যাগ দিয়ে প্ল্যাটফর্মটি সুরক্ষার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এছাড়াও ড্রেজিং বাবদ খরচ ধরা হয়েছে ১২৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। তবে সভায় এসব ব্যয় বাদ দেওয়ার অভিমত দেওয়া হয়।সভার আলোচনায় উঠে আসে প্রকল্পের পরামর্শক ফি’র বিষয়। এ বাবদ খরচ ধরা হয়েছে ২১৯ কোটি টাকা, যা অত্যধিক। এ খরচের মধ্যে সরকার দেবে ৬৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্ল্যানিং ও ডিজাইন উইংয়ের নিজস্ব ৭১ জন কর্মকর্তা রয়েছে। এছাড়া বাপাউবো এরই মধ্যে যমুনা নদীতে একই ধরনের বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। ফলে দেখা যাচ্ছে তাদের কর্মকর্তাদের এ ধরনের কাজে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। এ কারণে এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নে অধিক সংখ্যক পরামর্শকের প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন না প্রকল্প প্রণয়ন সংক্রান্ত সভার সদস্যরা।

জিওবি খাতে পরামর্শক বাবদ ৬৫ কোটি টাকা বরাদ্দের কারণ জানতে চাওয়া হলে বাপাউবোর প্রতিনিধি সভাকে জানান, পরামর্শকদের অগ্রিম আয়কর (এআইটি) বাবদ এ অর্থ রাখা হয়েছে।অর্থ বিভাগের প্রতিনিধি বলেন, যমুনা নদীতে গ্রোয়েন নির্মাণের ক্ষেত্রে একই ধরনের অন্য একটি প্রকল্পে এক কিলোমিটার কাজের খরচ ২৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। অথচ এ প্রকল্পের ক্ষেত্রে ৭৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে, যা বাস্তবসম্মত নয়।

তিনি বলেন, খুব বেশি প্রয়োজন না হলে ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ে নিরুৎসাহিত করা হলো। একই সঙ্গে এই প্রকল্প থেকে মোটরযান ক্রয় বাবদ এক কোটি ৫২ লাখ টাকা ও জলযান ক্রয় বাবদ ৮০ লাখ টাকা বাদ দেওয়ার প্রস্তাব করেন তিনি।সভায় কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লি প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপ-প্রধান (সেচ) মো. সামছুল ইসলাম বলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বৈদেশিক ঋণে বাস্তবায়িত হবে। তবে ঋণের পরিমাণ, সুদের হার, গ্রেস পিরিয়ড এবং ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ডিপিপিতে উল্লেখ নেই।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) যুগ্ম সচিব মুহাম্মদ রেজাউল করিম এ সময় জানান, প্রস্তাবিত ডিপিপিতে ঋণের পরিমাণ, সুদের হার, গ্রেস পিরিয়ড এবং ঋণ পরিশোধের সময়সীমা উল্লেখ করা হবে।ভৌত অবকাঠামো বিভাগের যুগ্ম-প্রধান কবির আহামদ বলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পে প্রিমিয়াম ভর্তুকি খাতে ক্ষতিপূরণ ২৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা এবং সুরক্ষা তহবিল খাতে ক্ষতিপূরণ ২৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা রাখা হয়েছে। খাত দুটি পরিচালনার ক্ষেত্রে পরামর্শক নিয়োগ বাবদ ২৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে, যা অযৌক্তিক।

তিনি আরও বলেন, এই প্রকল্পের উদ্দেশ্যগুলো হলো- সব নদীকে চ্যানেলাইজড করা, নতুন একটি প্রযুক্তির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ, প্রযুক্তিটি সফল হলে পরবর্তীতে বড় কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা। প্রস্তাবিত প্রকল্পের উদ্দেশ্যের সঙ্গে নদী পাড়ে অবস্থিত পরিবারগুলোর মধ্যে ভর্তুকি প্রদান, প্রটেকশন ফান্ড প্রদান এবং পরামর্শক নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়গুলি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নয়।বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের পরিচালক আয়েশা আক্তার বলেন, প্রকল্পে বিদেশে প্রশিক্ষণ ও এক্সপোজার ভিজিট খাতে বিদেশি অনুদানের সঙ্গে জিওবি অংশ রয়েছে। এই প্রকল্পের ফেজ-২ এর স্টাডির জন্য ৫৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় অধিক।

আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের উপ-প্রধান আফরোজা আক্তার চৌধুরী বলেন, একাডেমিক ভবন ও আন্তর্জাতিক নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট এই প্রকল্পের উদ্দেশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে একাডেমিক ভবন ও আন্তর্জাতিক নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট নির্মাণ বাদ দেওয়া যেতে পারে।এদিকে, পিইসি সভায় আলোচনার মাধ্যমে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে- টিবিপিজি নির্মাণের আগে গাণিতিক মডেলের পাশাপাশি যমুনা নদীর হুবহু নমুনা তৈর করে ফিজিক্যাল মডেল উপস্থান করতে হবে। গ্রোয়েন নির্মাণ স্থানে প্রস্তাবিত ড্রেজিং বাবদ ১২৬ কোটি টাকা প্রকল্প ব্যয় থেকে বাদ দিতে হবে। এছাড়া ভিলেজ প্ল্যাটফর্ম তৈরি এবং জিও ব্যাগ দিয়ে প্ল্যাটফর্ম সুরক্ষা বাবদ রাখা ৫৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা প্রকল্প ব্যয় থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

একই সঙ্গে পরামর্শক খাতে প্রস্তাবিত ব্যয় যৌক্তিকভাবে কমানোর সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রকল্পের আওতায় সংস্থান করা অনুদানের অর্থের মধ্যে পরামর্শক ব্যয় সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। জিওবি অংশ থেকে শুধুমাত্র এআইটি এবং ভ্যাট দিতে হবে। ডিপিপি থেকে একাডেমিক ভবন, আন্তর্জাতিক নদী গবেষণা ইনস্টিটিউট নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ৩১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা প্রকল্প ব্যয় থেকে বাদ দিতে হবে।পাশাপাশি প্রকল্পটি থেকে মোটরযান ও জলযান ক্রয় বাবদ ২ কোটি ৩২ লাখ টাকা বাদ দিতে হবে। প্রয়োজন না হলে ভূমি অধিগ্রহণ বাদ রাখতে হবে। প্রকল্পের ফেজ-২ এর স্টাডি খাতে ৫৬ কোটি টাকার মধ্যে জিওবি অংশ বাদ দিতে হবে এবং ব্যয় যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে ফেজ-২ এর স্টাডি করতে হবে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের ঋণের পরিমাণ, সুদের হার, গ্রেস পিরিয়ড এবং ঋণ পরিশোধের সময়সীমা উল্লেখ করতে হবে।

এসব বিষয়ে কথা বলতে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লি প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য এ কে এম ফজলুল হকের সঙ্গে জাগো নিউজের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়। তবে তিনি প্রকল্পটি নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ড. রবীন কুমার বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও প্রকল্পটি নিয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ