স্থানীয় বুলিয়ন বাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও পোদ্দারদের সঙ্গে চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এ সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে স্বর্ণের পাইকারি বাজার। তারা স্বর্ণের বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে প্রতিনিয়ত স্থানীয় পোদ্দার বা বুলিয়ন বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়াচ্ছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি কমপ্লেক্সে আগামী বাজেট উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এতে উপস্থিত ছিলেন বাজুসের সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর, সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন, রিপনুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগারওয়ালা প্রমুখ।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাজুসের সহসভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বুলিয়ন বাজারেও স্বর্ণের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এই সংকট উত্তরণে ব্যাগেজ রুলের আওতায় স্বর্ণের বার আনার ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক-করের হার বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, বৈধভাবে স্বর্ণের চাহিদা পূরণে বড় বাধা কাঁচামাল এবং এ শিল্পের যন্ত্রপাতির উচ্চ আমদানি শুল্ক। বর্তমানে প্রায় সব ধরনের পণ্য ও যন্ত্রপাতির আমদানি শুল্ক ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ। এতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি ৫ শতাংশ হারে উচ্চ ভ্যাট এবং উৎপাদন খরচের কারণে ভোক্তা পর্যায়ে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে দেশের দামের পার্থক্য হচ্ছে। এতে ক্রেতা হারাচ্ছেন জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা। তবে দেশে স্বর্ণ পরিশোধনাগার স্থাপন হওয়ায় ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ লেখা স্বর্ণের বার ও অলংকার রপ্তানির দুয়ার খুলছে। বাংলাদেশকে প্রতিযোগিতায় সক্ষম করতে জুয়েলারি খাতে আরোপিত শুল্ককর ও ভ্যাট হার কমানো এবং আর্থিক প্রণোদনা দিতে হবে।
আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভুক্তির জন্য বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছে বাজুস। এর মধ্যে রয়েছে– স্বর্ণ ও স্বর্ণের অলংকার, রুপা বা রুপার অলংকার বিক্রির ক্ষেত্রে আরোপিত ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা এবং যত দ্রুত সম্ভব নিবন্ধনকৃত জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন বিতরণ এবং স্বর্ণ পরিশোধনাগার শিল্পে ১০ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া।এ ছাড়া অপরিশোধিত আকরিক স্বর্ণে আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ এবং আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণে শুল্ক ১০ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। এতে স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধ হবে বলে আশা করছে বাজুস।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বৈদেশিক মুদ্রার অপব্যবহার করে প্রতিদিন চোরাচালানের মাধ্যমে দেশে প্রায় ২০০ কোটি টাকার অবৈধ স্বর্ণালংকর ও বার আসছে। টাকায় যার পরিমাণ বছরে প্রায় ৭৩ হাজার কোটি। এটি বন্ধে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।