সৌদি আরব ও ওপেকভুক্ত দেশগুলো হঠাৎ করেই বড় মাপে তেল উৎপাদন হ্রাসের ঘোষণা দিয়েছে। প্রতিদিন ১৬ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা এসেছে। আর এই ঘোষণায় অনিশ্চয়তায় থাকা বিশ্ব জ্বালানি বাজারে আরো অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ওপেকের এই সিদ্ধান্ত বিপদ ডেকে আনবে- যুক্তরাষ্ট্র এমন হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছে।
ফিন্যানশিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জো বাইডেনের প্রশাসন ও রিয়াদের সঙ্গে সম্পর্ক এখন ভালো যাচ্ছে না। এমন একসময় এসে স্বাধীন অর্থনীতির ভিত গড়ে তোলার কৌশল হাতে নিয়েছে সৌদি। আরবিসি ক্যাপিটাল মার্কেটসের পণ্য কৌশল প্রধান হেলিমা ক্রফট বলেছেন, আসলে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা কমানোর অর্থনৈতিক কৌশল নিতে চলেছে সৌদি।অন্যদিকে সাম্প্রতিক সময়ে চীনের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছে সৌদি। সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনে যুক্ত হতে চলেছে দেশটি। যেখানে আছে রাশিয়াও।
চীনের মধ্যস্থতায় চিরবৈরী ইরানের সঙ্গে আবারও সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের পথে হেঁটেছে মোহাম্মদ বিন সালমানের দেশ। অন্যদিকে চীনা কম্পানি রংশেং পেট্রকেমিক্যালের ১০ শতাংশ শেয়ার কেনার জন্য ৩৬০ কোটি ডলারের একটি চুক্তিও করেছে রিয়াদ। এর আওতায় প্রতিদিন চার লাখ ৮০ হাজার ক্রুড তেল সরবরাহ করবে সৌদি।যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে গিয়ে বিশ্ব অংশীদারত্ব বাড়ানোর পরিকল্পনা হিসেবে সৌদি এসব কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণভাবে মার্কিন সম্পর্কের পটবদল হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে দ্বন্দ্বের মেরুকরণেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো তাদের বিশ্ব অংশীদারত্বে এমন বৈচিত্র্য আনছে বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।
সৌদি লেখক আলি শিহাবি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একমুখী সম্পর্কের দিন শেষ। এখন আমরা আরো উন্মুক্ত সম্পর্কের পথে হাঁটছি। যুক্তরাষ্ট্রের মতো চীন, ভারত, ফ্রান্সহ অন্যদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক শক্তিশালী।’এদিকে ‘জাই হামিদ’ নামের এক বিশ্লেষক ক্রিপ্টোপলিটন ওয়েবসাইটে একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। যেখানে তিনি দেখানোর চেষ্টা করেছেন, কিভাবে মার্কিন প্রভাব বলয় থেকে স্বাধীন অর্থনীতি গড়ার পরিকল্পনা করছে মোহাম্মদ বিন সালমানের সৌদি।