শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:১৮ পূর্বাহ্ন

নির্বাচন ১৪ মে, চ্যালেঞ্জের মুখে এরদোয়ান

প্রতিনিধির / ১৩৬ বার
আপডেট : শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৩
নির্বাচন ১৪ মে, চ্যালেঞ্জের মুখে এরদোয়ান
নির্বাচন ১৪ মে, চ্যালেঞ্জের মুখে এরদোয়ান

দুই দশক ধরে তুরস্ক শাসন করছেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। সংসদীয় ব্যবস্থা থেকে প্রেসিডেন্ট-প্রধান ব্যবস্থা চালু করেছেন। কড়াহাতে বিক্ষোভ মোকাবিলা করেছেন। ইউরোপ তথা বিশ্ব যেন তুরস্ককে গুরুত্ব দিতে বাধ্য হয় সেই চেষ্টা করেছেন। এর আগের নির্বাচনগুলোতে কার্যত তেমন কোনো কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েননি তিনি। কিন্তু এবার পড়েছেন।

আগামী ১৪ মে তুরস্নেক অনুষ্ঠিত হবে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সেখানে এরদোয়ানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হবেন কেমাল কিরিচদারোলু। সাবেক এই আমলা সৎ ও দায়িত্বশীল মানুষ হিসেবে তুর্কি জনগণের কাছে বেশ পরিচিত। চাকরিজীবনে কঠোরভাবে দুর্নীতির মোকাবিলা করতে চেয়েছেন, একাধিকবার তাকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে। বছর দুয়েক আগেও ভাবা যায়নি, প্রধান বিরোধী প্রার্থী হয়ে এরদোয়ানকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবেন কেমাল। কিন্তু আজ সেটাই বাস্তব।

এরদোয়ান এই মুহূর্তে কিছুটা চাপের মধ্যে রয়েছেন সত্য। তবে তাকে হারানো ও পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া বিরোধীদের জন্য সহজ হবে না।প্রেসিডেন্ট থাকার ক্ষেত্রে এরদোয়ানের পথে প্রধান কাঁটা হলো, জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মানুষের ক্ষোভ। শুধু যে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে তা নয়, দেশটির অর্থনীতিও সংকটে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের কথা না শুনে এরদোয়ান নিজের আর্থিক নীতিতে চলেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে, যার কারণে সংকট আরও বেড়েছে। তার প্রভাব গিয়ে পড়েছে মানুষের জীবনে, কর্মসংস্থানে।

তাছাড়া গত ৬ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণপূর্ব তুরস্কে পরপর দুটি বিধ্বংসী ভূমিকম্পে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ মারা যান। বিরোধীদের অভিযোগ, সরকারের অবহেলায় হাজার হাজার ভবন নির্মাণে দুর্নীতি হয়েছিল, যেগুলো ধসে পড়ায় এই বিপুল প্রাণহানি হয়েছে। এছাড়া পরিস্থিতি অনুযায়ী যেভাবে ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজে সরকারের ঝাঁপিয়ে পড়া উচিত ছিল, সেটিও হয়নি। পরে উদ্ধারকাজে দেরির জন্য এরদোয়ান নিজেই জনগণের কাছে ক্ষমা চান।

বিরোধীরা মূলত কয়েকটি দাবিতে একজোট হয়েছেন- এরদোয়ানকে সরাতে হবে, জিনিসপত্রের দাম কমাতে হবে ও অর্থনীতির হাল ফেরাতে হবে।এক্ষেত্রে কেমাল কিরিচদারোলুর কৃতিত্ব হলো, তিনি অনেকগুলো বিরোধী দলকে একজোট করতে পেরেছেন। এর সাধারণ সূত্র ছিল- এরদোয়ানের বিরোধিতা। তাছাড়া কেমাল অন্য দলের অধিকাংশ দাবি মেনে নিয়েই তাদের জোটে টেনে এনেছেন।

কী বলছে সমীক্ষা?
দ্য গার্ডিয়ানের খবর অনুসারে, অধিকাংশ সমীক্ষায় কেমালকে সামান্য হলেও এগিয়ে দেখা যাচ্ছে। অন্তত, তিনি লড়াই করছেন। দীর্ঘদিন পরে এরদোয়ান যে লড়াইয়ের মুখে পড়েছেন, তা সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া থেকে বোঝা যাচ্ছে। এরদোয়ানের অনেক সমর্থকও বলছেন, জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় তারা বীতশ্রদ্ধ। তাই এবার এরদোয়ানের বিরুদ্ধে ভোট দিতে পারেন।কেমাল প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি ভোটে জিতলে তুরস্কে আবার সংসদীয় ব্যবস্থা চালু করবেন। কারণ, একজনের হাতে সব ক্ষমতা কুক্ষিগত হোক, তা তারা চান না। এরদোয়ান প্রবর্তিত এক ব্যক্তির শাসনের কুফল মানুষ বুঝতে পারছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

এরদোয়ানকে হারানো সহজ নয়
এরদোয়ান এই মুহূর্তে কিছুটা চাপের মধ্যে রয়েছেন তা সত্য। তবে তাকে হারানো ও পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া বিরোধীদের পক্ষেও সহজ কাজ নয়। বেশ কয়েকটি সমীক্ষায় বলছে, পার্লামেন্টে বিরোধীরা একেপি পার্টিকে সামান্য ব্যবধানে হারাতে পারলেও এরদোয়ানকে হারাতে পারবেন না কেমাল। তার পক্ষে এরদোয়ানের মতো ঝানু রাজনীতিককে হারানো খুবই কঠিন। তাছাড়া তুর্কি প্রেসিডেন্টের অনুগামীর সংখ্যাও কম নয়। তাদের একটি অংশ নিঃসন্দেহে ক্ষুব্ধ, কিন্তু শেষপর্যন্ত তারা সত্যিই এরদোয়ানের বিরুদ্ধে ভোট দেবেন কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।তবু আশাবাদী জোট গড়া ছয়টি বিরোধী দল। তাদের দাবি, জনগণের প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হচ্ছে, কেমালই কামাল করতে পারেন।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ