কোচিং ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছেন ১০ বছর হলো। তার পরও এত দিন উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের একটা রেকর্ড নিজের দখলে রেখেছিলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কিংবদন্তি কোচ স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন। পরশু রাতে ফার্গুসনের সেই রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের ইতালিয়ান কোচ কার্লো আনচেলত্তি। দুজনেই চ্যাম্পিয়নস লিগে সর্বোচ্চ ১৯০টি করে ম্যাচে কোচিং করিয়েছেন।
পরশু রাতে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে মুখোমুখি হয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার সিটি। রিয়ালের ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর এই ম্যাচের মধ্য দিয়েই ফার্গুসনের রেকর্ডটিতে ভাগ বসান ৬৩ বছর বয়সী আনচেলত্তি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১৭ মে বুধবারই হয়তো ফার্গুসনকে পেছনে ফেলে আনচেলত্তি রেকর্ডটা একান্তই নিজের করে নেবেন। সেদিনই যে রিয়াল-ম্যানসিটির সেমিফাইনালের ফিরতি লেগ।
১৯৮৬ থেকে ২০১৩, দীর্ঘ ২৭ বছর একটানা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে কোচিং করিয়েছেন ফার্গুসন। এই এক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়েই রেকর্ডটা গড়েছিলেন তিনি। অন্যদিকে ক্লাব ক্যারিয়ারে আনচেলত্তি এ পর্যন্ত কোচিং করিয়েছেন ১০টি ক্লাবে। এর মধ্যে আটটি ক্লাবের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে কোচিং করিয়েছেন। আনচেলত্তি পার্মার হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে কোচিং করিয়েছেন ছয়টি ম্যাচে, জুভেন্টাসের হয়ে ১০ ম্যাচে, এসি মিলানের হয়ে ৭৩ ম্যাচে, চেলসির হয়ে ১৮ ম্যাচে, পিএসজির হয়ে ১০ ম্যাচে, বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে ১২ ম্যাচে, নাপোলির হয়ে ১২ ম্যাচে এবং দুই দফায় রিয়াল মাদ্রিদের দায়িত্ব পালন করলেন ৪৯ ম্যাচে। মানে, আগামী বুধবারই রিয়ালের হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে ৫০ ম্যাচে কোচিং করানোর মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলবেন আনচেলত্তি।
ম্যাচের সংখ্যায় সমান হলেও অন্য একটা দিক থেকে আগেই ফার্গুসনকে পেছনে ফেলেছেন আনচেলত্তি। ফার্গি ১৯০ ম্যাচের ১০২টিতে দলকে জিতিয়েছিলেন। আনচেলত্তি জিতেছেন ১০৭ ম্যাচে। শিরোপা জয়েও আনচেলত্তি এগিয়ে। এরই মধ্যে ইতিহাসের একমাত্র কোচ হিসেবে চারটি চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জিতেছেন আনচেলত্তি। দুবার এসি মিলানের হয়ে, দুবার রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে। বিপরীতে ফার্গি শিরোপা জিতেছেন মাত্র দুই বার।
ফার্গুসনের রেকর্ড ছোঁয়ার ম্যাচটিতে হলুদ কার্ড পেয়েছেন আনচেলত্তি। ম্যান সিটির গোলটার আগে বল টাচলাইনের বাইরে চলে গিয়েছিল। তার পরও খেলা চালিয়ে যান রেফারি। আর সেই সুযোগেই সিটিকে সমতায় ফেরানো গোলটা করেন কেভিন ডি ব্রুইনা। আনচেলত্তি তাই গোল বাতিলের দাবি জানান তীব্র ভাষায়! এ কাজ করতে গিয়েই হলুদ কার্ড দেখতে হয়েছে তাকে। তবে হলুদ কার্ড পেয়েও আনচেলত্তি দমে যাননি। বরং ম্যাচ শেষেও নিজের দাবিতে অনড় থেকে বলেন, ‘গোলটা বাতিল করা উচিত ছিল।’ রেফারির সমালোচনাও করেছেন তিনি।