পশ্চিমবঙ্গে এই মরসুমের প্রথম কালবৈশাখী। সোমবার বিকেল পাঁচটায় মাত্র তিন মিনিটের জন্য প্রবল ঝড়ে লন্ডভন্ড সব। ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ৮৪ কিলোমিটার। ঝড়ে প্রচুর গাছ ভেঙে পড়ে এবং টিনের ছাদ ও বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যায়। এর ফলে বেশ কয়েকঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। ঝড়ে ভয়ংকর গরমের হাত থেকে মানুষ রক্ষা পেলেও অকালে চলে গেল আটটি প্রাণ।
কলকাতা, হাওড়া, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুরে ঝড়ের তাণ্ডব ছিল সবচেয়ে বেশি। হাওড়ায় তিনজন, ব্যারাকপুরে দুইজন, দুইজন মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে একজন করে মানুষ মারা গেছেন। কলকাতায় রাস্তা, গাড়ি এবং ট্রেন লাইনের ওপর গাছ উপড়ে পড়ে।ব্যারাকপুরে দুইটি দুঃখজনক ঘটনায় দুই জন মারা গেছেন। ঢালি মধ্যমগ্রামের ২১ বছর বয়সী কৌশিকের ওপর ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়ে।হাসপাতালে নেওয়ার পথে কৌশিক মারা যায়।
এছাড়া ব্যারাকপুরেই অরুণ বিশ্বাস ও তার স্ত্রী সরস্বতী বাড়ির কাছে একটি দোকানে গিয়েছিলেন। এমন সময় একটি নারকেল গাছ তাদের উপর ভেঙে পড়ে। ঘটনাস্থলে সরস্বতীর মৃত্যু হয়। অরুণ গুরত্বর আহত হন। হাওড়ায় পি কে রায়চৌধুরী লেনে ঝড়ের পর একটি বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ১২ বছর বয়সী শিশু খুশবু যাদব মারা যায়। তাকে বাঁচাতে গিয়ে একজন হোমগার্ড গুরুতরভাবে আহত হন। গাছ পড়ে বাগনানে মারা গেছেন রজনী প্রসাদ এবং ছোট আমসা গ্রামে ঘর নিচে চাপা পড়ে মারা গেছেন ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধ। এ ছাড়া পূর্ব মেদিনীপুরে কোলাঘাটের কাছে ঝড়ে বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে একজন এবং বেলপাহাড়িতে দুইজন মারা যায়।
ঝড়ের সময় প্রায় ঘণ্টাখানেক বিমান চলাচল বন্ধ ছিল। কালবৈশাখীর পর হাওড়া ও শিয়ালদহ ডিভিশনের ট্রেন চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। কলকাতায় মেট্রে রেল ঝড়ের পর কিছুটা দেরিতে চললেও কিছুক্ষণ পর তা স্বাভাবিক হয়ে যায়। দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গেছে ফলে দীর্ঘক্ষণ বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে।দেশটির আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এই সপ্তাহজুড়েই ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে। বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।