বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৪ অপরাহ্ন

৪ বছরে ৬ লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা

প্রতিনিধির / ১৪৭ বার
আপডেট : সোমবার, ২২ মে, ২০২৩
৪ বছরে ৬ লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা
৪ বছরে ৬ লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা

আগামী চার বছরে ৬ লাখ ৩৮ হাজার ৭০০ কোটি টাকা মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। যার মধ্যে চলতি বছর ১ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা, ২০২৪ সালে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা, ২০২৫ সালে ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা ও ২০২৬ সালে ২ লাখ ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ভ্যাট আদায় করা হবে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফকে এ তথ্যই জানিয়েছে এনবিআর। চলতি অর্থবছর বাদ দিয়ে মূসক খাত থেকে আগামী তিন অর্থবছরে (২০২৩-২৪, ২০২৪-২৫ ও ২০২৫-২৬) প্রায় ৫ লাখ ১৭ হাজার ৭০০ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করার কথা জানানো হয়েছে। রাজস্ব বোর্ড সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলতি অর্থবছরকে ভিত্তি বছর হিসেবে ধরলে ২০২৬ সাল নাগাদ অতিরিক্ত প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকার ভ্যাট আদায় করতে হবে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ভ্যাট থেকে রাজস্ব আয় করা অনেকগুলো শর্তের ওপর নির্ভরশীল। শর্তের কারণে চাইলেও এনবিআরের পক্ষে রাজস্ব আয় বাড়ানো সম্ভব হবে না।

চলতি (২০২২-২৩) অর্থবছরে ভ্যাট থেকে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। গত এপ্রিল পর্যন্ত অর্থবছরের ১০ মাসে এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ৮৬ হাজার ৯০১ কোটি টাকা, যদিও এসময়ে ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। সে হিসাবে ৮ হাজার ২৪৪ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে। যদিও গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ দশমিক ৪১ শতাংশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানি-রপ্তানি কমে যাওয়ায় প্রবৃদ্ধির পরও চলতি বছর ভ্যাট আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ঘাটতি থাকতে পারে।

কোভিড-১৯ মহামারির ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই ইউরোপে যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার ঢেউ লেগেছে। ছোটখাটো অর্থনীতির দেশের পাশাপাশি আমেরিকা, চীন এবং জাপানের মতো শক্তিশালী অর্থনীতির দেশও এ মন্দার রেশ কাটাতে পারছে না। দেশে বৈদেশিক মুদ্রা সংকটে আমদানি ও রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। দেশের অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে আইএমএফ থেকে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা নিয়েছে বাংলাদেশ। গত ফেব্রুয়ারিতে ঋণের প্রথম কিস্তি বাবদ ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার পেয়েছে।

শুধু ঋণ পরিশোধই নয়, ব্যাংক ও আর্থিক খাত সংস্কারে মানতে হবে আইএমএফের প্রেসক্রিপশন বা শর্ত। এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে নেট আন্তর্জাতিক রিজার্ভ ও অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহের ন্যূনতম স্তর নির্ধারণ, সরকারের বাজেট ঘাটতির ঊর্ধ্বসীমা নির্ধারণ, করছাড়ের ওপর বিস্তারিত নিরীক্ষা, বাজেটের নির্দিষ্ট অংশ সামাজিক ব্যয়ের জন্য রাখা এবং ক্রমান্বয়ে তা বাড়ানো ইত্যাদি। এসব শর্ত পূরণে অগ্রগতি জানতে কয়েক মাস পর পর দেশে আসছে আইএমএফের প্রতিনিধিদল।

প্রথম ঋণ অনুমোদনের প্রায় তিন মাস পর ঋণের শর্তের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনার জন্য গত এপ্রিলের শেষে একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় আসে। গত ২৫ এপ্রিল থেকে ২ মে পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে বৈঠক করে প্রতিনিধিদল।

গত ২৬ এপ্রিল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর সম্মেলন কক্ষে আয়কর, ভ্যাট ও কাস্টমস বিভাগের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করে আইএমএফ প্রতিনিধিদল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে জাপান থাকায় বৈঠকে অংশ নিতে পারেননি। তবে বৈঠকে তিন বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আগামী অর্থবছর ১ লাখ ৪৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ভ্যাট আহরণ করা হবে বলে আইএমএফকে জানিয়েছে এনবিআর। যদিও ভ্যাট উইংয়ের হিসাব অনুযায়ী, গত পাঁচ অর্থবছরের মতো প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ খাত থেকে ১ লাখ ৩৯ হাজার ১০০ কোটি টাকার মতো রাজস্ব আদায় হতে পারে। সে হিসাবে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি থেকে যাবে প্রায় ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ঘাটতি পূরণের জন্য বাড়তি অর্থ আদায়ে বর্তমানে রিটেইল সেক্টরে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস বা ইএফডি এবং সেলস ডাটা কন্ট্রোলার (এসডিসি) মেশিন ইনস্টলেশনে গুরুত্ব দিচ্ছে সংস্থাটি। আইএমএফকে এনবিআর জানিয়েছে, এ খাতে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ইএফডি ও এসডিসি ডিভাইস বসানো হয়েছে, যা মনিটরিং করছে এনবিআর। প্রথম ধাপে এনবিআর ৬০ হাজার ডিভাইস বসাবে আউটসোর্সিং বা ভেন্ডরের মাধ্যমে। পরের পাঁচ বছরে তিন লাখ ইএফডি মেশিন বসানো হবে। এ পরিকল্পনা সফল হলে রাজস্ব আহরণ বাড়বে।

এনবিআর আইএমএফকে জানায়, ভ্যাট হারের মধ্যে পার্থক্যও কমিয়ে আনা হবে। বর্তমানে খুচরায় ১৫ শতাংশ, ই-কমার্সের ওপর সাড়ে ৭ শতাংশসহ অনেক খাতেই ভিন্ন ভিন্ন ভ্যাট হার রয়েছে, যা কমিয়ে আনা হবে। এছাড়া ভ্যাট আদায় বাড়াতে প্রশাসনিক সংস্কারের কথা জানিয়েছে এনবিআর। বর্তমানে ১২টি কমিশনারেটের সঙ্গে আরও পাঁচটি নতুন কমিশনারেট গঠন করার ইচ্ছা আইএমএফকে জানিয়েছে এনবিআর। এর মাধ্যমে মনিটরিং বাড়িয়ে রাজস্ব আয় বাড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে করে এনবিআর।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ভ্যাট লিকেজ বন্ধে এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের তৎপরতা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। এনবিআর কর্মকর্তারা বলছেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের সঠিক অডিট করে ভ্যাট নিরূপণ করার জন্য সংস্থাটির বিশেষায়িত ইউনিট ভ্যাট নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর রয়েছে। এর পাশাপাশি প্রত্যেক ভ্যাট কমিশনারেটও অডিট পরিচালনা করে। ভ্যাট ও আয়কর কমিশনারেটও নিজেদের মধ্যে অডিটের তথ্য আদান-প্রদান করে। সঠিকভাবে অডিট কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারলে রাজস্ব আয় বাড়ানো সম্ভব।

ভ্যাট রাজস্বের প্রায় ৩০ শতাংশ আসে সিগারেট উৎপাদন থেকে। এ খাত থেকে রাজস্ব আয় বাড়াতে আগামী বছরগুলোয় কর নীতি আরও বেশি যৌক্তিকীকরণ করার চেষ্টা থাকবে। এনবিআরের নানাবিধ পদক্ষেপের কারণে প্রতি বছর ভ্যাটের রেজিস্ট্রেশনও বাড়ছে।

আইএমএফকে সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিগারেট থেকে রাজস্ব আয় কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ বাড়ানো সম্ভব হবে না। বিভিন্ন সেগমেন্টের সিগারেটের মধ্যে জটিল আন্তঃসম্পর্কের কারণে এর দাম চাইলেই বাড়ানো যায় না। এছাড়া শীর্ষ ১০ রাজস্ব উপার্জনের জায়গায় একই হারে আয় বাড়বে না। নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় এনবিআর নির্ধারিত সময় পর্যন্ত ট্যাক্স, ভ্যাট অব্যাহতি দিয়ে রেখেছে। সেখানে চাইলেই তা কমানো যাবে না।এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, আমরা তাদের (আইএমএফকে) বলেছি, দেশীয় শিল্পের বিকাশে পোশাক খাত, ভারী শিল্প ও প্রযুক্তিপণ্য প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট, ট্যাক্স অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এসব সুবিধা ২০২৫ ও ২০২৬ সালের দিকে গিয়ে শেষ হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, জনকল্যাণমূলক ও কয়েকটি সেক্টর ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে এসব সুবিধা প্রত্যাহার করতে চায়। পর্যায়ক্রমে অনেক সেক্টর থেকে রাজস্ব সুবিধা তুলে নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ জাগো নিউজকে বলেন, যে লক্ষ্যমাত্রা রাজস্ব বোর্ড জানিয়েছে তার চেয়ে বেশি আদায়ের সক্ষমতা আছে। ইএফডি মেশিন বসানোয় কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। ভ্যাট আদায় বাড়াতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি বাস্তবায়নের ওপরও জোর দিতে হবে এনবিআরকে। ভ্যাট আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে হবে, তাহলে রাজস্ব আয় বাড়বে।

ভ্যাট, আয়কর ও শুল্ক- এ তিন খাত থেকে ২০২৪ থেকে ২০২৬ তিন বছরে প্রায় ১৩ লাখ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার কথা আইএমএফকে জানিয়েছে রাজস্ব বোর্ড। যার মধ্যে ২০২৪ সালে ৪ লাখ ৫০০ কোটি টাকার রাজস্ব, ২০২৫ সালে ৪ লাখ ৭২৯ কোটি ও ২০২৬ সালে ৫ লাখ ৬৭১ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ হবে। এছাড়া চলতি বছর ৩ লাখ ৩৬৮ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হবে।শুল্ক বিভাগ থেকে জানানো হয়, পণ্যের দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য প্রাক-আগমন প্রক্রিয়াকরণ ন্যাশনাল ইনকোয়ারি পয়েন্ট (এনইপি) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ই-নিলাম, ই-পেমেন্ট সিস্টেম, টাইম রিলিজ স্টাডি (টিআরএস) পরিচালিত হয়েছে। এছাড়া ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো, অথরাইজড ইকোনমিক অপারেটরের (এইও) কাজ চলছে। এসব কর্মকাণ্ড গতি পেলে শুল্ক আদায় বাড়বে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, মধ্যমেয়াদি রাজস্ব কৌশলের (এমটিআরএস) একটি ধারণাপত্র বিশ্বব্যাংকে জমা দেওয়া হয়েছে। কাস্টমস রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিশনারেট (সিআরএমসি) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সেখানে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পদায়ন করা হয়েছে। ধীরে ধীরে অন্য সাপোর্ট স্টাফও নিয়োগ করা হবে। অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেম থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এটি ছোট আকারে ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কাজ করবে।এছাড়া আয়কর থেকে জানানো হয়, প্রতি বছর ১৫ শতাংশ হারে আয়কর বাড়ছে। নানাবিধ কার্যক্রমের ফলে কর আদায় আরও বাড়ানো হবে। কর ফাঁকি রোধে অটোমেশন প্রক্রিয়ায় জোর দেওয়া হয়েছে। ই-পেমেন্ট, রির্টানের ই-ফাইলিং, ই-টিন, ই-টিডিএস ও ই-অফিস ম্যানেজমেন্ট প্রবর্তন করা হয়েছে। এসবের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় বাড়ানো সম্ভব। এজন্য রাজস্ব বোর্ডের আর্থিক, হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও দক্ষ মানবসম্পদ প্রয়োজন। এসব পদক্ষেপের ফলে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পাবে, কর ফাকি রোধ করা সম্ভব হবে।

করজাল বাড়াতে রাজস্ব বোর্ড কাজ করছে উল্লেখ করে আইএমএফকে জানানো হয়েছে। দেশে প্রতি বছরই করদাতার সংখ্যা বাড়ছে। গত বছরের তুলনায় চলতি বছর রিটার্নের ই-ফাইলিং ৩০ শতাংশ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক কর আদায়, ডিজিটাল মাধ্যম থেকে কর আদায় ও ট্রান্সফার প্রাইসিংয়ের ক্ষেত্রে স্পেশাল ইউনিট করা হয়েছে। যেখানে দক্ষ জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফলে আগামী তিন বছরে এসব খাত থেকে কর আদায় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে।

এ বিষয়ে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. জায়েদ বখত জাগো নিউজকে বলেন, কর-জিডিপি রেশিও অনেক কম। সেটা রাজস্ব বোর্ড বাড়াতে চায়। নানা কারণে আগে এটা সম্ভব হয়নি। এখন আন্তর্জাতিক সংস্থার চাপ আছে। তাছাড়া বিশ্ব অর্থনীতির যে অবস্থা, তাতে আমরা যদি রাজস্ব আয় বাড়াতে না পারি তাহলে আমাদের জন্য অসুবিধা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ