বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০৬ অপরাহ্ন

খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা

প্রতিনিধির / ১৫৭ বার
আপডেট : মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০২৩
খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা
খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা

খেলাপি ঋণের পরিমাণ শুধু বেড়েই চলেছে। এটি দেশের ব্যাংক খাত এবং অর্থনীতির জন্য মারাত্মক এক ব্যাধি হলেও এর নিরাময়ে সাফল্য অর্জিত না হওয়ার বিষয়টি উদ্বেজনক। জানা যায়, আগে দেওয়া ঋণ পরিশোধে বিশেষ ছাড় তুলে নেওয়া এবারের খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির কারণ।

এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ-তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত ব্যাংক খাতে ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা ঋণের ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ।আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, খেলাপি ঋণের হার সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ সহনীয় বলে ধরা হয়। বাংলাদেশের খেলাপি ঋণ ঝুঁকির তুলনায় প্রায় তিনগুণ। প্রকৃত হিসাবে খেলাপি ঋণ আরও বেশি। এ খাতের সমস্যাগুলো চিহ্নিত এবং এর সমাধানে কী করণীয়, তাও বহুল আলোচিত। কিন্তু তারপরও খেলাপি ঋণ বন্ধে কেন সাফল্য অর্জিত হচ্ছে না, এটা এক প্রশ্ন। যারা ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করছেন না, তাদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কেন আরও কঠোর হচ্ছে না এটাও বারবার আলোচনায় আসে। কর্তৃপক্ষ নমনীয় নীতি গ্রহণ করলে ঋণখেলাপিরা নানা কৌশলের আশ্রয় নেবে, এটাই স্বাভাবিক।

কোনো ঋণগ্রহীতা প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে ঋণখেলাপি হতে পারেন, এটা অস্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়। কারা ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি আর কারা ইচ্ছাকৃত নন, তা নির্ধারণে কর্তৃপক্ষকে সাফল্যের পরিচয় দিতে হবে। যারা প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে ঋণখেলাপি হয়ে থাকেন, তাদের সহায়তা দিয়ে ঋণ পরিশোধে সামর্থ্যবান করে তোলার পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে একটি শ্রেণি আছেন, যারা সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছা করেই ঋণের কিস্তি আটকে রাখেন। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিরা সাধারণত অত্যন্ত ক্ষমতার অধিকারী। যারা ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি, তাদের বিরুদ্ধে যদি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, তাহলে ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা কঠিন হয়ে পড়তে পারে।

অভিযোগ রয়েছে, ব্যাংক কর্মকর্তা ও ঋণের আবেদনকারীদের যোগসাজশেও খেলাপি ঋণ সৃষ্টি হয়। কাজেই ব্যাংক কর্মকর্তারা যাতে কোনোভাবেই দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত হতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যাংক কর্মকর্তারা যদি সর্বোচ্চ সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতেন, তাহলে খেলাপি ঋণের হার অনেকটাই কমে যেত। আমরা জানি, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের বহু কর্মকর্তাই অত্যন্ত ক্ষমতাবান। তাদের উচিত সব ধরনের অন্যায়ের প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়া। তবে এটাও ঠিক, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকর্তা যত ক্ষমতাবানই হোন না কেন, এককভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে বড় ধরনের কোনো ভূমিকা রাখা কঠিন। ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে তাই তারা নীরব থাকেন। তাই প্রয়োজনে আইন আরও কঠোর করতে হবে, যেখানে ঋণখেলাপিদের চিহ্নিত করে তাদের রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে বর্জন করার বিধান থাকবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ