শনিবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:৫৪ পূর্বাহ্ন

ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেয়ারবাজার

প্রতিনিধির / ৭৩ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০২৩
ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেয়ারবাজার
ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেয়ারবাজার

শেয়ারবাজারে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের মূলধনি মুনাফার ওপর কর আরোপ হচ্ছে– এমন তথ্যে মঙ্গলবার ব্যাপক দরপতন হয় শেয়ারবাজারে। এর পরদিনই গতকাল বুধবার ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে এ বাজার। বেশিরভাগ শেয়ারের দর বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি সূচকও বেড়েছে। তবে লেনদেনের ধারা পুনরুদ্ধার হয়নি। ১১ কার্যদিবস পর লেনদেন ৮০০ কোটি টাকার নিচে নেমেছে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে ৩৪৮ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১২৭টির, কমেছে ৪৭টির এবং অপরিবর্তিত বা ফ্লোর প্রাইসে ছিল ১৭৮টি। এর বাইরে ক্রেতার অভাবে মূল বাজারে তালিকাভুক্ত ৪৪ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের কেনাবেচা হয়নি।দর হারানো শেয়ারের তুলনায় দর বৃদ্ধি পাওয়া শেয়ার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেশি হওয়ার প্রভাব ছিল মূল্যসূচকে। ডিএসইএক্স সূচক প্রায় ২৩ পয়েন্ট বেড়ে ৬৩৩৯ পয়েন্টে দাঁড়ায়। মঙ্গলবার আতঙ্কে শেয়ার বিক্রির ফলে দর কমায় সূচক ৪০ পয়েন্ট হারায়।

বড় দরপতনের পরদিনই বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর কারণ কী হতে পারে– এমন প্রশ্নে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস কর্মকর্তারা জানান, প্রস্তাবিত আয়কর আইনে ব্যক্তির মূলধনি মুনাফার ওপর কর আরোপের বিধান থাকছে ঠিকই। ১৯৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশেও ছিল। কিন্তু ২০১৫ সালের ১ জুলাই এসআরও জারি করে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের মূলধনি মুনাফায় কর অব্যাহতি দেওয়া আছে।তবে সবাই যে এমন ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট, তা নয়। এ কারণে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন। যার প্রভাব দেখা গেছে সার্বিক লেনদেনে। বড় দরপতনের দিনে ডিএসইতে প্রায় ১ হাজার ৮৭ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হলেও গতকাল ৭৮৩ কোটি টাকার নিচে নেমেছে। লেনদেন কমেছে ৩০৪ কোটি টাকার বেশি।

বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা জানান, আতঙ্কে শেয়ার বিক্রির ধারা বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের একটা সাধারণ প্রবণতা। বাস্তবতা অনুধাবন না করে এভাবে আতঙ্কিত হয়ে অনেক বিনিয়োগকারী যেমন নিজের আর্থিক ক্ষতি করেন, তেমনি বাজারকে অস্থিতিশীল করে তুলছেন।পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ফ্লোর প্রাইসের ওপরে থাকা বেশিরভাগ কোম্পানির দর বাড়লেও তুলনামূলক বেশি বেড়েছে বীমা খাতের। এ খাতের তালিকাভুক্ত ৫৭ শেয়ারের মধ্যে ৫৩টিরই দর বেড়েছে। একটির দরও কমেনি, তবে তিনটির দর অপরিবর্তিত ছিল। গড়ে এ খাতের শেয়ারদর বেড়েছে সাড়ে ৫ শতাংশ।

এ ছাড়া দর বৃদ্ধির শীর্ষ ২০ শেয়ারের মধ্যে ১৮টিই ছিল বীমা খাতের শেয়ার, যেগুলোর দর সাড়ে ৮ শতাংশ থেকে প্রায় ১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এমনকি সার্বিক শেয়ার লেনদেন কমলেও বীমা খাতের লেনদেন মঙ্গলবারের তুলনায় ২৪ কোটি টাকা বেড়ে ২৬৪ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে, যা ছিল মোট লেনদেনের ৩৩ দশমিক ৭০ শতাংশ।ডিএসইতে এদিন লেনদেনের শেষ পর্যন্ত ১১ কোম্পানির শেয়ার সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়। এর মধ্যে ১০টি ছিল বীমা খাতের। শেয়ারগুলো হলো– অগ্রণী, দেশ জেনারেল, ইসলামিক কমার্শিয়াল, মেঘনা, মেঘনা লাইফ, প্যারামাউন্ট, সোনালী লাইফ, সোনার বাংলা এবং ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। এ ধারায় থাকা একমাত্র ‘নন-ইন্স্যুরেন্স’ শেয়ার ছিল খাদ্য খাতের কোম্পানি বঙ্গজ।

গতকাল ফ্লোর প্রাইসে পড়ে থাকা শেয়ার সংখ্যা চারটি কমে ২১২টিতে নেমেছে। এর মধ্যে ৬টি ফ্লোর প্রাইস থেকে বের হয়েছে। ফের ফ্লোর প্রাইসে নেমেছে দুটি শেয়ার। যেগুলো ফ্লোর প্রাইস ছেড়ে আসা শেয়ারগুলো হলো, সাউথইষ্ট ব্যাংক, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স, পদ্মা অয়েল, কেঅ্যান্ডকিউ এবং রহিম টেক্সটাইল। বিপরীতে ল্যুব-রেফ বাংলাদেশ এবং ন্যাশনাল পলিমারের শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে নেমেছে। এর মধ্যে ল্যুব-রেফের দর হঠাৎ ১০ শতাংশ বৃদ্ধি ও বড় অঙ্কের লেনদেনের পর ফের ফ্লোর প্রাইসে নেমে আসা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ