চিয়া সিডকে বলা হয় ‘সুপারফুড’। প্রাচীনকাল থেকেই এটি খাওয়ার প্রচলন থাকলেও আমাদের দেশে বিগত কয়েক বছর ধরে চিয়া সিড খাওয়ার জনপ্রিয়তা বেড়েছে। প্রোটিন আর ফাইবার সমৃদ্ধ চিয়া সিড খেলে পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে। ফলে সহজে ক্ষুধা পায় না এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকে।
কিন্তু জানেন কি? এই চিয়া সিড খাওয়ার ক্ষেত্রেও কিছু বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে অতিরিক্ত খেয়ে ফেললে। জেনে নেওয়া যাক, চিয়া সিডের ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে:
অ্যালার্জির সমস্যা
চিয়া সিড খেলে অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে মাথা ঘোরা, হাতে বা গলায় চুলকানি, শ্বাসকষ্ট, মুখ ফুলে ওঠার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তিল বীজ ও চিয়া বীজের মধ্যে এক ধরনের যোগসূত্র থাকতে পারে। তাই কারো তিল বীজে অ্যালার্জি থাকলে তাদের চিয়া সিড এড়িয়ে চলাই ভালো।
হজমে বাধা
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে চিয়া সিডের ভূমিকা এখন সবার জানা। তবে মাত্রাতিরিক্ত চিয়া সিড হজমে অসুবিধা করতে পারে। পেট ফাঁপা, গ্যাসের সমস্যা, পেটে ব্যথা হতে পারে। তাছাড়া চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণে ফাইটিক অ্যাসিড থাকে। এই উপাদানটি আমাদের দেহে অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের শোষণে বাধা দেয়।
শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া
চিয়া সিড সাধারণত পানিতে ভিজিয়েই খাওয়া হয়। শুকনা অবস্থায় এই উপাদান গ্রহণ করলে অনেক সময় দমবন্ধের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। আসলে পানিতে চিয়া সিড তার ওজনের প্রায় ২৭ গুণ বেশি ফুলে উঠতে পারে। ফলে শুকনা চিয়া সিড খেয়ে পানি পান করলে তা খাদ্যনালিতে ফুলে উঠে আটকে যেতে পারে এবং শ্বাসবন্ধের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
কিছু গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, চিয়া সিড রক্তচাপ কমায়। তবে চিয়া সিডে থাকা বিপুল পরিমাণ সল্যুবল ফাইবার কিছু ওষুধের শোষণকে ধীর করে কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। এছাড়া চিয়ার ফাইবার এবং ফাইটিক অ্যাসিড আমাদের দেহে জিংক, ক্যালসিয়াম এবং আয়রনের মতো পুষ্টি উপাদান শোষণে বাধা দেয়।
কিডনিতে পাথরের ঝুঁকি
প্রতি আড়াই টেবিল চামচ চিয়া সিডে ১১৫ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম ও ২৪৪ মিলিগ্রাম ফসফরাস থাকে। কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে এই দুইটি উপাদান সেবনেই সতর্ক থাকা উচিত। দৈনিক ফসফরাসের চাহিদার ৩০ শতাংশ একবার চিয়া সিড গ্রহণেই পূরণ হয়ে যায়। এর বাইরে চিয়া সিডে রয়েছে বিপুল পরিমাণ অক্সালেট, এই উপাদানটি ক্যালসিয়ামের সঙ্গে মিলে কিডনিতে পাথর তৈরি করতে পারে।