গত ১৪ বছরে চট্টগ্রামে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের ঘনিষ্ঠ লোকজনের মালিকানায় গড়ে উঠেছে ১৯টি বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র। এসবের পেছনে খরচ প্রায় হাজার কোটি টাকা। চট্টগ্রামের শিকলবাহায় এনার্জিপ্যাকের ১০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার যে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি রয়েছে তা বন্ধ থাকে প্রায়ই। এছাড়াও উৎপাদনে নেই অনেক বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র। গড়ে সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে ৭ থেকে ৮টির উৎপাদন।
২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত গড়ে উঠা ভাড়াভিত্তিক এসব কেন্দ্রের উৎপাদনক্ষমতা ৩ হাজার ৮৩৮ মেগাওয়াট। এছাড়াও আছে ১২৩৭ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষমতার ৫টি সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র। সবমিলিয়ে চট্টগ্রামে বিদ্যুতের চাহিদা ১ হাজার থেকে ১২০০ মেগাওয়াট। চাহিদার প্রায় ৫ গুন বেশি উৎপাদন সক্ষমতার পরও প্রতিদিন লোডশেডিংয়ের ভোগান্তি পোহাতে হয়। ফলে বিপর্যস্ত জনজীবন আর শিল্পখাত।
এ বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ ভাইস চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ যদি নিশ্চিত না করা যায় তবে আমাদের উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটে। এতে আমাদের সব ধরণের খরচ বেড়ে যায়। তাই লোডশেডিং থেকে আমাদের মুক্তি দেয়া উচিত।
কোন পরিকল্পনা ছাড়াই ঢালাওভাবে এসব কেন্দ্র করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সুফল পূর্ণমাত্রায় মিলছে না। তাছাড়া কেন্দ্রগুলোর বেশিরভাগের মালিকই ক্ষমতাচ্যুত সরকারের ঘনিষ্ঠ লোকজন।
চুয়েটের তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক কৌশল বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ড. আহসান উল্লাহ বলেন, আমাদের জন্যে এটা পরিহাস ছাড়া কিছুই নয় যে এত পাওয়ার প্ল্যান্ট, তবুও লোডশেডিংয়ে যাচ্ছে। এর থেকে দুঃখজনক আর কি হতে পারে।
প্রয়োজনের অতিরিক্ত কেন্দ্রগুলো এখন গলারকাঁটা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) জন্য। তাই এসব চুক্তি পুনরায় যাচাই বাছাই করা হচ্ছে বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী রেজাউল করিম।
সরকারি কেন্দ্রের চেয়ে অনেক বেশি খরচসাপেক্ষ এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের কোনটির মেয়াদ আছে ২০৪২ সাল পর্যন্ত।