কানপুর টেস্টের শেষ দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ১৪৬ রানে গুটিয়ে যেতেই নিশ্চিত হয়ে যায়, জয়ের জন্য ৯৫ রান করলেই চলবে ভারতের। লক্ষ্যটা আহামরি নয়। তার ওপর হাতে আছে পুরো দুটো সেশন। ভারতের জয় নিয়ে বোধহয় কারো সামান্যতম সংশয়ও ছিল না। দেখার বিষয় ছিল, ভারত কত দ্রুত ম্যাচটা জেতে!
প্রথম ইনিংসে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে রোহিত শর্মা-যশস্বী জয়সোয়াল-বিরাট কোহলিরা যা করেছেন, তাতে এমন ভাবনাটা মোটেও অমূলক নয়। আগের ইনিংসের তুলনায় অবশ্য কিছুটা দেখেশুনেই খেলেছে ভারত। ওয়ানডে সুলভ ব্যাটিংয়ে ১৭.২ ওভারে ৩ উইকেটে ৯৫ রান পেরিয়েছে স্বাগতিকরা। ৭ উইকেটের জয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজটাও ২-০ ব্যবধানে জিতে নিলেন রোহিত শর্মারা।
অথচ কে বলবে, এ টেস্টের প্রায় অর্ধেকটা খেলাই হয়নি বৃষ্টি আর ভেজা মাঠের কারণে। প্রথম দিনের অর্ধেকটা ভেস্তে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন যখন পরিত্যক্ত হলো, তখন মনে হয়েছিল ম্যাচটা বোধহয় ড্র হতে যাচ্ছে। কিন্তু ম্যাচের গল্প পাল্টে যায় গতকাল চতুর্থ দিন।
বাংলাদেশকে প্রথম ইনিংসে ২৩৩ রানে অলআউট করে টি-টোয়েন্টি স্টাইলে ব্যাটিং করে ২৮৫ রান করে প্রথম ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণা করে ভারত। গতকাল রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেও ২৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে দিন শেষ করেছিল সফরকারীরা। হাতে থাকা ৮ উইকেট নিয়ে দিন শুরু করেও বাংলাদেশ আজ প্রথম সেশন পার করতে পারেনি।
৯৫ রানের সহজ লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওপেনার রোহিত ও জয়সোয়াল আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন। তবে ইনিংসের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে মেহেদী হাসান মিরাজকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে হাসান মাহমুদের হাতে ধরা পড়েন ভারতীয় অধিনায়ক (৭ বলে ৮ রান)।
পঞ্চম ওভারে গিলকেও (৬ রান) ফিরিয়েছেন মিরাজ। অফ স্ট্যাম্পের বাইরে পড়া মিরাজের শর্ট লেংথের ভেতরে ঢোকা বলে ব্যাট লাগাতে পারেননি গিল। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ আউট দিলে রিভিউ নিয়েছিলেন ডানহাতি এ ব্যাটসম্যান। তাতে অবশ্য আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে কোনো পরিবর্তন আসেনি।
এর বাইরে মিরাজের ১১ রানে ব্যাটিং করার সময় মিরাজের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছিলেন জয়সোয়াল। কিছুটা শান্ত সেটি নাগাল পাননি। সে জয়সোয়াল পরে বিরাট কোহলিকে নিয়ে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৫৮ রান যোগ করে ভারতের জয় প্রায় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন। তাইজুলের শিকার হয়ে জয়সোয়াল (৪৫ বলে ৫১ রান) যখন ড্রেসিংরুমে ফিরলেন, জয় থেকে মাত্র ৩ রান দূরে ভারত।
ঋষভ পন্তকে নিয়ে সেটি অনায়াসেই পেরিয়ে যান কোহলি। শেষ পর্যন্ত ৩৯ বলে ২৯ রানে অপরাজিত ছিলেন কোহলি। ইনিংসের ১৮তম ওভারে তাইজুলকে বাউন্ডারি মেরে ভারতের জয় নিশ্চিত করেন পন্ত।
পুরো ম্যাচে দুই দল খেলেছে মোট ১৭৩.৪ ওভার। এর আগে বাংলাদেশ শেষবার ভারতে টেস্ট সিরিজ খেলেছিল ২০১৯ সালে। মজার বিষয়, সেবারও সিরিজের শেষ টেস্টে দুদল মিলিয়ে ১৮০ ওভার খেলার আগেই (১৬১.২ ওভার) ফল বের করেছিলেন কোহলি-রোহিতরা।