শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়ে গলে সিরিজের প্রথম টেস্টে লড়াই করেও শেষ পর্যন্ত ৬৩ রানের হারভাগ্য বরণ করতে হয়েছিল নিউজিল্যান্ডকে। একই ভেন্যুতে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে যেন ক্রিকেটটাই ভুলে যায় কিউইরা। প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার ৬০২ রানের বিপরীতে নিউজিল্যান্ড অলআউট হয়েছিল ৮৮ রানে। স্বাগতিকরা ফলো অন করালে দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিয়েছিল কেইন উইলিয়ামসন-মিচেল স্যান্টনাররা। কিন্তু ইনিংস ব্যবধানের হার এড়াতে সেটি যথেষ্ট ছিল না।
দুঃসময়ের ঘেরাটোপে বন্দী নিউজিল্যান্ড যে শুধু লঙ্কার বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে, এমন নয়। খেলা মাঠে গড়িয়েছে, এমন সর্বশেষ চার টেস্টেই হেরেছে তারা। টেস্টে কিউইদের এমন ছন্দহীনতার দায় নিজের কাঁধে নিয়ে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছেন টিম সাউদি। তাঁর পরিবর্তে টম ল্যাথামকে লাল বলের ক্রিকেটের নেতৃত্বের ভার দিয়েছে নিউজিল্যান্ড।
২০২২ সালে কেইন উইলিয়ামসনের জায়গায় টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে স্থলাভিষিক্ত হন সাউদি। তাঁর অধীনে খেলা ১৪ টেস্টের ৬টিতে জিতেছে নিউজিল্যান্ড। সমান ৬ ম্যাচ হারের পাশাপাশি বাকি দুটি টেস্ট ড্র করেছে কিউইরা। পরিসংখ্যান বিবেচনায় খুব একটা খারাপ না হলেও সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স সাউদির পক্ষে কথা বলে না। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কা সিরিজে কিউইদের অসহায় আত্মসমর্পণে ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতে বাধ্য হন সাউদি।
চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষ দিকে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে ভারত সফরে যাবে নিউজিল্যান্ড। এ সিরিজে কিউইদের নেতৃত্ব দেবেন ল্যাথাম। অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণায় সাউদি বলেছেন, ‘ব্ল্যাক ক্যাপসের নেতৃত্ব দেওয়া আমার কাছে সব সময় স্পেশাল। এটা আমার কাছে খুব সম্মানের ও বড় পাওয়া ছিল। সব সময় চেষ্টা করেছি দলকে অগ্রাধিকার দিতে। আমার এ সিদ্ধান্তও দলের জন্য ভালো বলে মনে করি।’
সাউদি যোগ করেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, দলকে আমার সর্বোচ্চটা দেওয়ার উপায় হচ্ছে মাঠে আমার পারফরম্যান্সে মনোযোগ দেওয়া, নিজের সেরাটা ফিরে পাওয়া, উইকেট নিতে থাকা এবং নিউজিল্যান্ডকে টেস্ট জেতাতে সাহায্য করা।’
অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিলেও দলকে সহযোগিতা করবেন সাউদি। নতুন অধিনায়কের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে সাউদি বলেছেন, ‘আমি দলকে যেভাবে সাহায্য করে এসেছি, দলের বাকিদের সঙ্গে সহযোগিতা করেছি, সেটাই করব। ল্যাথাম জানে, আমি ওর পাশে থাকব। ওকে আগামী দিনের জন্য শুভেচ্ছা জানাই। আমি অধিনায়ক থাকাকালীন ল্যাথামও আমাকে খুব সাহায্য করেছে।’
সাউদির এমন সিদ্ধান্তে নিউজিল্যান্ড কোচ গ্যারি স্টিড বলেছেন, ‘টিম (সাউদি) দারুণ একজন খেলোয়াড় এবং খুব ভালো একজন নেতা, যাকে সতীর্থ ও সাপোর্টিং স্টাফরা অনেক সম্মান করে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৭ বছর ধরে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের প্রতিনিধিত্ব করছে ও (সাউদি), টেস্ট দলের অধিনায়কের পদ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে আমি সম্মান জানাই।’