আবেদন না করায় দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের সাজা স্থগিতের সুপারিশ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। বুধবার (২ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক ভিডিওবার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন তিনি।
আসিফ নজরুল বলেন, সাজা স্থগিতের আবেদন না করায় মাহমুদুর রহমানের ব্যাপারে আমাদের কিছু করার সুযোগ ছিল না। যদি তিনি আবেদন করতেন অবশ্যই তার সাজা স্থগিতের সুপারিশ করতাম।
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক এই উপদেষ্টা বলেন, জামিন চাইতে গিয়ে মাহমুদুর রহমানকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনা অনেককে দুঃখ দিয়েছে। কেউ কেউ ক্ষুব্ধ হয়েছেন। আপনাদের কাছে মনে হয়েছে, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর আসা সরকারের সময় কেন ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের অন্যতম অগ্রনায়ক মাহমুদুর রহমান কারাগারে আছেন।
ভুয়া মামলায় মাহমুদুর রহমানকে শাস্তি দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি মাহমুদুর রহমানকে অনেক শ্রদ্ধা করি। এ দেশে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসন ছিল। সেটার বিরুদ্ধে তিনি বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ের সূচনা করেছিলেন। এ জন্য তাকে নির্যাতন-নিপীড়ন ভোগ করতে হয়েছে। তাকে একটা অবিশ্বাস্য ও চরম ভুয়া মামলায় ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকার শাস্তি দেয়।’
উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলাটির বিচারকাজ আগেই শেষ হয়েছিল। সেই মামলায় তাকে শাস্তি দেয়া হয়। দেশে আসার আগে তার স্ত্রীর বিরুদ্ধেও ভিত্তিহীন মামলা হয়। সেই মামলায় সাজা স্থগিতের আপিল করার জন্য আবেদন করেছিলেন তিনি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ আবেদন করা হলে আমাদের অভিমত চাওয়ার পর আমরা বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখার সুপারিশ করি। আমাদের সুপারিশের ভিত্তিতে তার সাজা স্থগিত করে আপিলের সুযোগ দেয়া হয়।
একই মামলায় বরেণ্য সাংবাদিক শফিক রেহমানের সাজার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাংবাদিক শফিক রেহমান সাজা স্থগিত চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। পরে আমাদের মতামতের ভিত্তিতে তার সাজা স্থগিত করে আপিল করার জন্য অনুমোদন করা হয়। কিন্তু মাহমুদুর রহমান এমনটা করেননি। তার আত্মসম্মানবোধ অত্যন্ত স্ট্রং। তিনি খুবই দৃঢ়চেতা মানুষ, প্রচণ্ড দেশপ্রেমিক। হয়তো এসব কারণে তিনি সাজা স্থগিত চেয়ে আপিলের জন্য আবেদন করেননি। কোনো মন্ত্রণালয়ের বা সরকারেরও এটা করার সুযোগ ছিল না।
উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, মাহমুদুর রহমানকে যে আদালত শাস্তি দিয়েছিলেন, সেই আদালতে তিনি জামিন চেয়েছিলেন। ফৌজদারি কার্যবিধিতে আছে, যদি কোনো আদালত কাউকে এক বছরের বেশি শাস্তি দেয়, তাহলে সেই আদালত দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে জামিন দিতে পারবেন না। তবে এর ওপরের আদালতে আবেদন করা হলে সেই আদালত জামিন দিতে পারবেন।