দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ উপলক্ষ্যে টানা দুই দিন ফেসবুকে দুটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। টেস্টের আগের দিন ট্রফি উন্মোচন নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। আর গতকাল পোস্ট দিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট পাওয়া বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামকে নিয়ে।
প্রশ্ন হতে পারে স্ট্যাটাস দিতেই হবে কেন শান্তকে? সে ক্ষেত্রে টেস্টের আগের দিনের সংবাদ সম্মেলন ও এর আগের প্রেক্ষাপট জানতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্রদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো পোস্ট দেননি সরকার দলীয় সাংসদ সাকিব আল হাসান। বরং ওই সময় কানাডায় পরিবারের সঙ্গে আনন্দে সময় কাটাচ্ছেন এমন এক ছবি শেয়ার করেন তাঁর স্ত্রী।
সরকার পতনের পর আন্দোলনের সময়ের নীরবতাকে কেন্দ্র করে সাকিবের দেশে ফেরা নিয়ে শঙ্কা সৃষ্টি হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্ট দিয়ে অবসর নেওয়ার ইচ্ছা জানানো সাকিবকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। সাকিবও আন্দোলনের সময় নীরবতা নিয়ে ক্ষমা চেয়ে স্ট্যাটাস দেন। কিন্তু তাঁর কুশপুত্তলিকা পুড়িয়ে ও বিসিবির কাছে স্মারকলিপি দিয়ে কিছু সমর্থক তাঁকে দেশে ফিরতে না দেওয়ার দাবি জানান। এ প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তার কথা ভেবে দুবাই পর্যন্ত এসে ফিরে গেছেন সাকিব।
টেস্ট শুরুর আগের সংবাদ সম্মেলনে এসে শান্ত তাই খোঁচা দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, এখন থেকে শুধু স্ট্যাটাস দিয়েই তিনি কাজ চালাবেন, ‘এখন যত কথা বলব, এখান থেকে কোনো কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। কারণ আমরা সবাই জানি কেন উনি আসতে পারছে না। এখন বর্তমান সময়ে যে অবস্থা, ফেসবুকে একটা করে স্ট্যাটাস দিলে সবকিছু সমাধান হয়ে যায়, চিন্তা করতেছি প্রতিদিন একটা করে আমিও স্ট্যাটাস দেব।’
শান্ত এরপর টানা দুই দিন স্ট্যাটাস দিয়েছেন। স্ট্যাটাস দেওয়ার পরের ইনিংসে ৭ রানে আউট হয়েছিলেন। তবু কাল রাতে স্ট্যাটাস দেওয়ার উপলক্ষ্য পেয়েছিলেন। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট পেয়ে টেস্টে ২০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন তাইজুল ইসলাম। মিরপুরে সবচেয়ে বেশি উইকেটেরও মালিক হয়েছেন। তাই সতীর্থকে নিয়ে স্ট্যাটাস দিতে পেরেছেন।
তবে তাইজুলের গতকালের স্পেলের ধাক্কা সামলে দক্ষিণ আফ্রিকা ২০২ রানের লিড নিয়েছে প্রথম ইনিংসে। জবাবে ৪ রানেই ২ উইকেট পড়ে যাওয়া অধিনায়কোচিত এক ইনিংস খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন শান্ত।
চার –ছক্কা মেরে ইতিবাচক খেলেছেন, আবার অহেতুক রিভার্স সুইপও করেছেন। তবে আউট যেভাবে হয়েছে, সেট ছিল হাস্যকর।
প্রথমে দুই পা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন, তাতে পেছনে র পা লেগ স্টাম্পের বাইরে চলে গিয়েছিল, আর সামনের পা অফ স্টাম্পে। এমন অবস্থায় একটু এগিয়েও গিয়েছিলেন। এমন বেসামাল অবস্থায় কেশব মহারাজের ভেতরে বাঁক খাওয়া বল ঠেকাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বলের লাইন মিস করায় তা লাগে তাঁর প্যাডে। আউট দেওয়ার জন্য এতটুকু ভাবতে হয়নি আম্পায়ারকে। দলকে ৫৯ রানে রেখে বিদায় নিয়েছেন অধিনায়ক।
এখনো ইনিংস পরাজয়ের শঙ্কায় আছে বাংলাদেশ, দলের কেউ একক নৈপুণ্য দেখাননি। সর্বশেষ ৩২ ইনিংসে মাত্র একটি ফিফটির মালিককে নিয়ে তাই প্রশ্ন জাগছে, আজ কী নিয়ে স্ট্যাটাস দেবেন?