বাজার পরিস্থিতি নিয়ে অনেকেরই আপেক্ষের শেষ নেই। পণ্যদ্রব্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। তবে গতকাল শনিবার (২৬ অক্টোবর) বাজার ঘুরে দেখা গেছে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে কাঁচা মরিচ ও সবজির দাম। তবে বেড়েছে মুরগি, ডিম ও আলুর দাম। বাজারে কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে প্রায় ১০০ টাকা কমেছে। গতকাল ঢাকায় বাজারভেদে এক কেজি মরিচ ১৬০-১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা গত সপ্তাহে ২৫০-৩০০ টাকা ছিল। ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে দেশি মরিচের সরবরাহ কম। তবে ভারত থেকে আমদানি বাড়ায় দাম কমেছে।
এছাড়া সরবরাহ বেশি থাকার ফলে কমেছে ঢ্যাঁড়স, পটোল, মুলা, ধুন্দুল, চিচিঙ্গা ও ঝিঙে। গত সপ্তাহে এসব সবজি কেজিপ্রতি ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হলেও গতকাল এসব সবজি ৫০-৮০ টাকায় কেনা গেছে। একইভাবে গতকাল বেগুন ৮০-১৩০ টাকা, কাঁকরোল ও বরবটি ৮০-১০০ টাকা এবং করলা ৭০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে এসব সবজির দাম কেজিতে ২০-৫০ টাকা কমেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, বন্যার কারণে শীতকালীন শাক-সবজি আসতে দেরি হওয়ায় দাম বেশি ছিল। তবে এখন স্বল্প পরিমাণে শীতকালীন সবজি আসার কারণে দাম কিছুটা কমেছে।
মাসখানেক ধরেই বাজারে উচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগি। এর মধ্যে বেশি বেড়েছে সোনালি মুরগির দাম। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি এখন ১৯০-২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে গতকাল সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩০০-৩২০ টাকায়।
এদিকে ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি শুল্ক কমানোসহ বাজারে পণ্যটির সরবরাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয় সরকার। এতে দাম কমে ডজন ১৪৫-১৫০ টাকায় নামে। তবে গত কয়েক দিনে এর দাম কিছুটা বেড়েছে। গতকাল ঢাকার বিভিন্ন বাজারে এক ডজন ডিম ১৫৫-১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বেড়েছে আলুর দামও।
বাজারে পেঁয়াজের দামেও ঝাঁজ লক্ষ্য করা গেছে। মৌসুম শেষে কৃষকের ঘরে এখন পেঁয়াজের মজুত কম থাকায় দুই সপ্তাহের ব্যবধানে মানভেদে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে।
পেঁয়াজের অন্যতম উৎপাদনস্থল পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা চতুরহাটের আড়তদার আবদুল মুন্নাফ বলেন, মাত্র এক দিনের ব্যবধানে গতকাল দেশি পেঁয়াজের দাম প্রতি মণে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা বেড়েছে। এর কারণ, কৃষকের ঘরে এখন খাওয়ার পেঁয়াজ একেবারেই কম। যে পেঁয়াজ রয়েছে, তার বেশির ভাগই বেছন বা বীজ পেঁয়াজ।
অন্যদিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পেঁয়াজের পাইকারি বিক্রেতা সজীব শেখ জানান, গতকাল পাইকারিতে দেশি পেঁয়াজ ১৩০-১৪০ ও আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। সজীব শেখ বলেন, মৌসুম শেষ হওয়ায় বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ার সম্ভাবনা নেই। এখন আমদানি করা পেঁয়াজ বেশি না এলে দাম আরও বাড়তে পারে।