বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় দিনদুপুরে বাসায় উম্মে সালমা নামের এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ ডিপ ফ্রিজে গুম করে রাখার হয়। প্রযুক্তি ব্যবহার করে মিলেছে সেই হত্যা কাণ্ডের সূত্র। সেই সঙ্গে হত্যা রহস্যের জট খুলেছে।
প্রেম ও হাত খরচের টাকা দেয়া নিয়ে অভিমান থেকে নিজের মাকে হত্যার পরে ডিপ ফ্রিজে বন্দী করে রাখে ছেলে। প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন প্রমাণের ভিত্তিতে গ্রেপ্তারের পরে একথা জানিয়েছে র্যাব।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) সকালে র্যাব-১২ বগুড়ার কোম্পানি কমান্ডার মেজর এহতেশামুল হক খান নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
সাদ বিন আজিজুর রহমান দুপচাঁচিয়ার দারুসসুন্নাহ কামিল মাদরাসা ও উপজেলা মসজিদের খতিব আজিজুর রহমানের ছোট ছেলে।
সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে অভিযুক্তের দাদাবাড়ি পার্শ্ববর্তী কাহালু উপজেলার পাঁচ পীর আড়োবাড়ী এলাকা থেকে সাদ বিন আজিজুর রহমানকে (১৯) আটক করা হয়। পরে হত্যার ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায় র্যাব।
এর আগে রোববার দুপুরে গ্রেপ্তার সাদ বিন আজিজুর রহমানের মা উম্মে সালমা খাতুনের (৫০) লাশ বাড়িতে থাকা ডিপ ফ্রিজের ভিতরে পাওয়া যায়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১২ বগুড়ার কোম্পানি কমান্ডার জানান, হত্যার পর পরিবারের সাথে কথা বলে র্যাব জানতে পারে, উম্মে সালমা খাতুনের সঙ্গে তার ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমানের হাত খরচের টাকা দেয়াকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে ঝগড়া বিবাদ চলে আসছিল এবং বাসা থেকে প্রায় প্রতিদিনই ৫০০-১০০০ টাকা হারিয়ে যেতো।
হত্যার দিনের ঘটনার বর্ণনায় র্যাব কর্মকর্তা জানান, মাদরাসায় সকাল সাড়ে ১২টার দিকে ক্লাসের বিরতির সময় বাসার প্রবেশ করে সাদ তার মাকে তরকারি কাটতে দেখে। ওই সময় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী তার মায়ের পিছন দিক থেকে নাক-মুখ চেপে ধরে ধস্তাধস্তি শুরু করে। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তার মা বাঁচার জন্য চেষ্টা করতে থাকলে ভিকটিমের হাতের তর্জনী আঙ্গুলের নীচে তরকারি কাটার বটি লেগে হালকা কেটে যায়। পরে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা যান সালমা।
এরপর দুই হাত ওড়না দিয়ে বেঁধে বাসায় থাকা ডিপ ফ্রিজের ভিতর রেখে দেয়। ঘটনাটি ডাকাতির ঘটনা হিসেবে সাজানোর জন্য সাদ বাসায় থাকা কুড়াল দিয়ে তার বাবা এবং মায়ের বেডরুমে থাকা আলমারিতে কয়েকটি কোপ মেরে কুড়াল সেখানে রেখে বাসার মেইন গেইটে তালা দিয়ে বের হয়ে যায়।